শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় ডিবিএ
Published: 18th, March 2025 GMT
শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন বা ডিবিএ। আজ মঙ্গলবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে এই হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। ডিবিএর সভাপতি সাইফুর ইসলাম এই চিঠি দিয়েছেন বলে সংগঠনটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ডিবিএ বলেছে, ১৫ বছর ধরে পুঁজিবাজার চরম অনিয়ম, অপশাসন ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। নানা অনিয়মের কারণে শেয়ারবাজারের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান প্রায় অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সময় বাজার প্রকৃত অর্থে ৪০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। আবার ২০২০ সাল থেকে কয়েক দফায় সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসের কারণে বাজারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক তহবিল ব্যবস্থাপকেরা যেমন বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তেমনি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ১৫ বছরে মানহীন প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এতে বাজারে স্থায়ী তারল্য ও আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও উন্নয়নের এক সুযোগ তৈরি হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সময়ে এই সংকট থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে না পারলে শেয়ারবাজারের উন্নয়নের সুযোগ হাতছাড়া হবে। শেয়ারবাজারের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগাতে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ডিবিএ।
সংগঠনটির সভাপতি স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে বহুজাতিক বেশ কিছু কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা ও সুশাসনের দিক থেকেও বেশ উন্নত মানের কোম্পানি। এ দেশের অবকাঠামো, আর্থিক ও মানবসম্পদ ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো ব্যবসা করছে। এসব কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে দেশের মানুষের হাতে কোম্পানিগুলোর কিছু অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
ডিবিএ আরও বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বাজার পরিচালনাকারী সংস্থা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বাজার মধ্যস্থতাকারী এবং আর্থিক নিরীক্ষক, ঋণমান যাচাইকারী সংস্থাসহ বাজার অংশীজনদের মধ্যে আস্থার মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট দূর ও বাজারকে সমৃদ্ধ করতে নতুন নতুন পণ্যের পাশাপাশি ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে। তাতে বিনিয়োগকারীরাও লাভবান হবেন। এর মাধ্যমে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী বাজারমুখী হবে এবং তারল্য সমস্যারও সমাধান ঘটবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র স গঠনট ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।