কালভার্ট ভেঙে আটকে যায় ট্রাক, চার ঘণ্টা পর উদ্ধার
Published: 18th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কাটাফাঁড়ি ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকায় কালভার্ট ভেঙে আটকা পড়ে ট্রাক। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে উজানটিয়া থেকে একটি খালি ট্রাক পেকুয়া যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় প্রায় চার ঘণ্টার পর ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়।
তবে ট্রাক উদ্ধার হলেও উজানটিয়ার সঙ্গে পেকুয়া সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এই সড়ক দিয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নের মানুষ ছাড়াও মগনামা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষের চলাচল রয়েছে।
বিকেল চারটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বানৌজা পেকুয়া সড়ক থেকে কাটাফাঁড়ি ব্রিজ হয়ে দক্ষিণ দিকে উজানটিয়া ইউনিয়নের যাতায়াতের সড়ক। এই সড়কের কুমপাড়া এলাকায় স্লুইসগেট ভেঙে গাড়িটি আটকে গেছে। আরেকটি গাড়ি দিয়ে সেটিকে টেনে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। মানুষ হেঁটে সড়কের ভাঙা অংশ পার হচ্ছেন।
উজানটিয়ার বাসিন্দা জালাল উদ্দীন বলেন, উজানটিয়া ইউনিয়নের ৩৫ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
উজানটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকায় লবণ চাষ হয়েছে। সড়কপথে লবণ পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লবণ পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেরামতের জন্য একজন ঠিকাদারকে তাৎক্ষণিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি যত দ্রুত সম্ভব ভাঙা অংশ মেরামত করবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের দুই সদস্য বাংলাদেশে এসেছেন। রোববার চার দিনের সফরে গ্রুপের ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা ও আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ ঢাকা পৌঁছান।
প্রায় এক যুগ ধরে গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানিয়ে আসছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স অর ইনভলেন্টারি ডিসাপিয়ারেন্স– ডব্লিউজিইআইডি। ২০১৩ সালের ১২ মার্চ সফরের জন্য প্রথম চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এর পর একাধিকবার অনুরোধ করলেও রাখা হয়নি। ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল শেষবার সফরের অনুমতি চেয়েছিল ডব্লিউজিইআইডি। কিন্তু দেয়নি তৎকালীন সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনার সরকারের। এর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানালে সাড়া দেয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এলো গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। ১৮ জুন প্রতিনিধি দলের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, সফরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র সচিব, গুম কমিশনের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া নীতিবিষয়ক আলোচনায় অংশ নেবেন দুই সদস্য।
ঢাকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, প্রতিনিধি দল এবার গুমের ঘটনা তদন্ত করবে না। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তার ভিত্তিতে সুপারিশ করবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক ‘গুম প্রতিরোধ দিবস’-এর এক দিন আগে ৭৬তম দেশ হিসেবে চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গুমবিরোধী সনদ গৃহীত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে সনদে যুক্ত হওয়া নিয়ে বরাবর অনাগ্রহ দেখিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এ সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। অর্থাৎ তারা অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। আর ভারত শুধু সই করেছে।
ডব্লিউজিইআইডির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও ৭০টি গুমের ঘটনা অনিষ্পত্তি রয়েছে। জাতিসংঘ মোট ৮৮ ব্যক্তির গুমের বিষয়ে প্রকৃত অবস্থা জানতে চেয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন আটক ও ১০ ব্যক্তি মুক্ত অবস্থায় আছেন।