বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। দীর্ঘ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বিশ্বের মাঝে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে নিজ প্রাণ সঁপে দিয়েছিল বাঙালিরা। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান, দুই লাখ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির দুর্ভোগের বিনিময়ে ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছিল এই স্বাধীন রাষ্ট্র।

একটি প্রশিক্ষিত সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্র ৯ মাসে যুদ্ধ জয় করা এক বিরল ঘটনা। এই বিজয় অর্জনের পেছনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সেনাবাহিনী হয়ে ওঠে জাতির পরম আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক। 

দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ এবং জনগণের প্রতি ভালোবাসা– এ দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আমাদের সেনাবাহিনীর দেশপ্রেম। আমার বিশ্বাস, একটি প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশসেবায় সেনাবাহিনীর অগ্রণী ভূমিকা দেশপ্রেমিক গণমানুষের কাছে পাথেয় হয়ে আছে এবং থাকবে। 

১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের অভ্যুদয়ের পরপরই বাঙালি নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেছিলেন, বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে বাঙালিদের মুক্তি সম্ভব নয়। যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা বাঙালির সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে; বাঙালির ভাষা কেড়ে নিতে চায়, সেই রাষ্ট্র বাঙালির জন্য নয়। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ গভীর রাতের নিকষ কালো অন্ধকার ভেদ করে দখলদার হানাদার বাহিনীর বুলেট আঘাত হানতে থাকে নিরস্ত্র, নিরীহ, নিরপরাধ, বিপন্ন ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর। বাঙালি জাতির ওপর হানাদার বাহিনীর এই কুখ্যাত পূর্বপরিকল্পিত ও ন্যায়নীতিবহির্ভূত গণহত্যাটি ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পরিচিতি।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নেই হানাদার বাহিনীর হামলার জবাবে ভীত কিংবা হতবিহ্বল না হয়ে সামরিক বাহিনীর বাঙালি অফিসার ও সৈনিকরা সরাসরি বিদ্রোহ করে দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেয়। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল সিলেট জেলার হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজারের বাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম অপারেশন-সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় কর্নেল ওসমানীকে মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার ইন চিফের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সে সভায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের প্রস্তাব, অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ, সীমান্তবর্তী ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি, একক কমান্ড চ্যানেল প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধ মনিটরিং সেল গঠন, সামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, কমান্ডার নিয়োগ ও দায়িত্ব বণ্টনের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিক প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ফোর্সেস গঠন করা হয়। পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তেলিয়াপাড়ায় দ্বিতীয় সেনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আগের সিদ্ধান্তের আলোকে গোটা দেশকে চারটির স্থলে ছয়টি সামরিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়। 

১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ একটি পরিকল্পিত রূপ লাভ করে। পরে ১০ থেকে ১৭ জুলাই ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারদের এক সম্মেলনে অপারেশন চালানোর সুবিধার্থে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টর ও বিভিন্ন সাব-সেক্টরে বিভক্ত করে পেশাদার দুরন্ত, অকুতোভয় বীর বাঙালি সেনা কর্মকর্তাদের এসব সেক্টরের যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে সুশৃঙ্খলভাবে নিয়মিত যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ‘জেড ফোর্স’, ‘এস ফোর্স’ ও ‘কে ফোর্স’ নামে তিনটি নিয়মিত ব্রিগেড গঠন করা হয়। প্রথাগত যুদ্ধ শুরু করার জন্য ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সঙ্গে নৌ ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এক দূরদর্শী সম্মিলিত আক্রমণের মাধ্যমে চলমান যুদ্ধে নতুন গতিশীলতা আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। 

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেয়। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ১ মিনিটে লাখো জনতার সম্মুখে রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অবনত মস্তকে প্রায় ৯৩ হাজার দখলদার হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। যৌথ কমান্ডের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ও দখলদার হানাদার বাহিনীর পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন এবং বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই আত্মসমর্পণের সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩ জন বীরশ্রেষ্ঠসহ ১ হাজার ৫৩৩ জন সেনাসদস্য শাহাদাত বরণ করেন এবং ২৯১ জন সেনাসদস্য খেতাবপ্রাপ্ত হন। 

স্বাধীনতা-পরবর্তী সংকটের সময়েও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সমানভাবে অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও পার্বত্য শান্তি চুক্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য জীবন দিয়ে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে র‍্যাবের সদস্য হয়ে রেখে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের নেতৃত্ব দিয়ে সীমান্তকে সুরক্ষা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

ছবিসহ ভোটার তালিকা, জাতীয় পরিচয়পত্র, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরি করে সেনাবাহিনী দেশ-বিদেশে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে। পদ্মা সেতু, জাতীয় মহাসড়ক, মহিপাল ফ্লাইওভার, মিরপুর এয়ারপোর্ট রোডে ফ্লাইওভার, বনানী লেভেল ক্রসিংয়ে ওভারপাস নির্মাণ, ৩০০ ফিট পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, ১০০ ফিট খাল খনন প্রকল্প হাতিরঝিল, স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, পার্বত্য অঞ্চলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতাবিশিষ্ট বর্ডার সড়কসমূহ, মেরিন ড্রাইভসহ গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা তৈরিতে রেখে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সশস্ত্র বাহিনী নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবিলা করে জনগণের মধ্যে আস্থা অর্জন করেছে। তার অন্যতম উদাহরণ মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে লকডাউন কার্যকর, ত্রাণ সহায়তা, বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবাসহ করোনা মোকাবিলায় রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মাটিতেও আমাদের সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড বিশ্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে। যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ জাতিসংঘ। জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যুদ্ধবিধ্বস্ত কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, কসোভো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর, সিয়েরালিয়ন, লাইবেরিয়া, আইভরি কোস্ট, কঙ্গো, হাইতি, লেবানন, সোমালিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্য সুনামের সঙ্গে কাজ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আর্থসামাজিক ক্ষেত্রসহ পুনর্বাসন ক্ষেত্রে এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিশ্বের অন্যান্য দেশ এখন বাংলাদেশকে শান্তি রক্ষা মিশনের জন্য একটি মডেল হিসেবে গণ্য করে।

যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেই জনগণের আস্থা ও ভরসার নাম সেনাবাহিনী। সব সময়ই দুর্গত মানুষের পাশে থেকেছে সেনাসদস্যরা। ২০০৭ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে আইলা, ২০২০ সালে আম্পান এবং অতিসম্প্রতি ২০২৪-এর আগস্ট মাসে ফেনী-কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যাদুর্গত অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে উদ্ধার, ত্রাণ তৎপরতা ও পুনর্বাসনে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা হয়েছে জনগণের কাছে প্রশংসিত। এ ছাড়া বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম অনেক দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে সেনাসদস্যরা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছেন।

২০২৪-এর এই গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সংকটময় সময়ে বর্তমান সেনাপ্রধান এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সেনাপ্রধান খুব সুন্দরভাবে ও অসাধারণ পরিপক্বতার সঙ্গে দেশের দায়িত্ব ড.

ইউনূস সরকারের কাছে হস্তান্তর করেন। সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে অনেক সংকট ও সমস্যা সমাধানে সরকারকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে। বিশেষত সরকার গঠনের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ও করছে। ডাকাতি, আনসার বিদ্রোহ, গার্মেন্ট শ্রমিকদের নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড দমনে এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনাবাহিনী অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।

সময়ের হাত ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ পেশাগত উৎকর্ষে বিশ্বের যে কোনো বাহিনীর সঙ্গে তুলনীয়। মিসাইল, আধুনিক ট্যাঙ্ক ও গোলন্দাজ বাহিনীর সব শাখাসহ সেনাবাহিনী এমন সব উপাদান সহকারে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য রয়েছে নিজস্ব বিদ্যাপীঠ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বর্তমান সময়ে সেনাবাহিনীর প্রতিটি শাখাকে আধুনিক সমরাস্ত্র ও উপকরণ দিয়ে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশালে ৭ পদাতিক ডিভিশন, রামুতে ১০ পদাতিক ডিভিশন, সিলেটে ১৭ পদাতিক ডিভিশন, দুটি পদাতিক ব্রিগেড, পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা ও তদারকির জন্য একটি কম্পোজিট ব্রিগেড, স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন ছাড়াও ১০টি ব্যাটালিয়ন, এনডিসি, বিপসট, এএফএমসি, এমআইএসটি ও জেসিও-এনসিওস একাডেমির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বপরিমণ্ডলে আজ একটি পরিচিত এবং গর্বিত নাম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই সব সাফল্যমণ্ডিত কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৃহত্তর পরিসরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যে বিশাল সম্মান বয়ে এনেছে, তা শুধু সেনাবাহিনীর নয় বরং এ দেশের সবার অহংকার ও গৌরব। 

কর্নেল এ এস এম নাছের, পিএসসি, জি+: সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ১৯৭১ স ল র স ন সদস য কম ন ড র জনগণ র র জন য পদ ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে পুলিশের জন্য ভুল শুধরে জনমনে আস্থা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাহিনীটির মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় মাঠে থাকা প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে হবে।

রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগর পুলিশ লাইনসের পিওএম সভাকক্ষে পুলিশ সদস্যদের জন্য আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিদর্শনে গিয়ে আইজিপি এ কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

রাতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. গাজিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রেনিং স্কুলের তত্ত্বাবধানে তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আজ আইজিপি কর্মশালার ষষ্ঠ ব্যাচের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, জাতীয় নির্বাচন একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, যেখানে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে দায়িত্বশীলতা, সততা ও পেশাদারত্বের সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে হবে।

এ সময় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন আইজিপি। এ সময় তিনি নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে পুলিশের করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করেন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে আইন অনুযায়ী কঠোর থাকার নির্দেশ দেন।

অনুষ্ঠানে আইজিপির সঙ্গে রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহানসহ রাজশাহী রেঞ্জ, রাজশাহী মহানগর পুলিশ এবং রাজশাহী জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
  • নোবিপ্রবিসাসের বর্ষসেরা সাংবাদিক রাইজিংবিডি ডটকমের শফিউল্লাহ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি