নেত্রকোনায় বিছানা থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার
Published: 22nd, March 2025 GMT
নেত্রকোনা শহরের আরামবাগ এলাকার একটি বাসায় গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল বৃদ্ধার লাশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা মডেল থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের নাম মাজেদা খাতুন (৬৫)। তিনি আরামবাগ এলাকার মৃত আরজান আলীর স্ত্রী।
স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জেলা তথ্য কার্যালয়ের সাবেক কর্মচারী আরজান আলী প্রায় ছয় বছর আগে মারা যান। তাঁর স্ত্রী মাজেদা খাতুন ওই বাসাটিতে একা থাকতেন। তাঁর তিন মেয়ে বৈবাহিক সূত্রে অন্যত্র থাকেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মেয়েরা মাজেদা খাতুনকে ফোন করে কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় ইতি আক্তার নামে ছোট মেয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর স্বামীকে নিয়ে মাজেদা খাতুনের বাসায় যান। এ সময় বাসার প্রধান দরজাটি তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে অপর একটি দরজা দিয়ে তাঁরা ভেতরে ঢুকে দেখতে পান, গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় মাজেদা খাতুনের মরদেহ বিছানায় পড়ে আছে। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মাজেদার স্বজনদের ধারণা, কোনো সংঘবদ্ধ চক্র মাজেদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মুঠোফোনসহ আলমারি থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাটির কারণ অনুসন্ধান করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর রহস্য পরিষ্কার হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা