সাংবাদিকদের সমস্যা চিহ্নিতে কাজ চলছে: কামাল আহমেদ
Published: 22nd, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।এতে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের বিষয়ে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ।
শনিবার (২২ মার্চ) গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর শেষে তিনি এসব কথা বলেন। যমুনার সামনে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়
ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন কমিশন প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই’র ইফতার মাহফিল
সিনিয়র সাংবাদিক আলী হাবিব আর নেই
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কী সমস্যা সেটা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি, সেটা মোকাবিলার উপায় কী হতে পারে, সেটা আমরা এক্সপ্লোর করেছি। গণমাধ্যমের ইন্ডিভিজুয়াল সমস্যা কী সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছি। সমাধানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উত্তম বেস্ট পলিসি থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছি। সেগুলো থেকে বাংলাদেশে কতটা প্রযোজ্য এবং প্রয়োগ করা যাবে, সেটা বিবেচনা নিয়ে আমরা এই সুপারিশমালা তৈরি করেছি।
কামাল আহমেদ বলেন, সারাদেশে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। যারা গণমাধ্যমের স্বার্থ নিয়ে কাজ করেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ১৪০০ লোকের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা হলো গণমাধ্যমে কালো টাকা ঢুকে গেছে। গণমাধ্যমে মালিকানা সমস্যাটা একটা বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। মালিক হয়েছেন কারা, কী পদ্ধতিতে তারা মালিক হয়েছেন, আমরা জানি না। মালিক কারা তাদের আমরা চিনি কিন্তু তারা কী পদ্ধতিতে মালিক হয়েছেন সেটা আমরা জানি না। প্রকাশ্য, উন্মুক্ত, স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে টেলিভিশনের লাইসেন্স, সংবাদপত্র ও অনলাইনে নিবন্ধন দেওয়া হয় নাই।
কামাল আহমেদ বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর কিন্তু মালিক পরিবর্তন হয়নি, মালিকরা নিউজ রুমের পরিবর্তন এনেছেন। সম্পাদকীয় নেতৃত্বের পরিবর্তন এনেছেন। রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটছে বলে মনে করছে, তাদের সঙ্গে এক ধরনের লিয়াজোঁ করার দরকার। সে কারণে নেতৃত্বের পরিবর্তন এনেছেন। মালিকদের প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে হয়নি, তিনি যে গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করছেন সেটার উৎস কী? আমরা গণমাধ্যম থেকে রাজনীতিবিদদের জবাব দিতে চাচ্ছি, কিন্তু গণমাধ্যমের জবাবদিহিতা কোথায়? একটা পত্রিকা আর একটা পত্রিকার বিরুদ্ধে বলছে তার জবাবদিহিতা কোথায়? এসব প্রশ্ন আমরা বিবেচনা করে দেখেছি।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের কমিশনের বেশ কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে।
কামাল আহমেদ বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান একটি গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবে-এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাসসকে জাতীয় সম্প্রচার সংস্থার সাথে একীভূত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের বেতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা দিতে হবে। এটি না দেওয়ার ফলে অনেকে অনৈতিক কাজে জড়াচ্ছে। তবে বেতন-ভাতার ওয়েজবোর্ডে আমাদের এখতিয়ার না থাকলেও আর্থিক নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। ন্যূনতম নবম গ্রেড অনুযায়ী একজন সাংবাদিকের বেতন হতে হবে। পাশাপাশি রাজধানীতে কর্মরত সাংবাদিকদের ঢাকা ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (২২ মার্চ) যমুনার প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ম ল আহম দ প রস ত ব সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’