দেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ ৮২ বছর বয়সেও খেলে এলেন এশিয়ান জোনাল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ। কেবল তাই নয়, পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকেই শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা শেষ করে দেশে ফেরেন। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে বুদাপেস্টে মহিলা বিভাগে ৮১ পেরোনো রানী হামিদের কাছে হেরেছেন নামি দাবাড়ুরা। এশিয়ান জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপ মূলত দক্ষিণ এশিয়ান জোনের দাবার বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্ট। ওপেন ও নারী দুই বিভাগের চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি বিশ্বকাপ দাবায় খেলার সুযোগ পান। ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বাকি ৬ দেশের দাবাড়ুরা অংশ নিচ্ছেন এ প্রতিযোগিতায়।
সামাজিক সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে পরিবার সামলানোর পাশাপাশি একজন অপরাজেয় দাবা খেলোয়াড় হয়ে ওঠা রানী বাংলাদেশের নারীদের অনুপ্রেরণার এক অনন্য উদাহরণ। বুদাপেস্টে ৪৫তম দাবা অলিম্পিয়াডে ভালো করেনি বাংলাদেশ। তবে আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে আলো ছড়ানো রানী হামিদের দাবা খেলা শুরু সেই ১৯৮৪ থেকে শুরু। দাবার সঙ্গে তাঁর বন্ধনটাও প্রায় ৪০ বছরের। কীভাবে এই খেলার প্রেমে পড়লেন; এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একদিন আমার স্বামী এসে বলল, পেপারে নিউজ দেখলাম। তুমি খেলবা নাকি। আমি তো পুরোপুরি গৃহিণী, চার বাচ্চার মা। কীভাবে কী করি। ও খুব করে বলল। শেষ পর্যন্ত আর চুপ থাকতে পারিনি। সে সময় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা ডা.
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের কথা। তখন এতটা মাতামাতি ছিল না দাবা নিয়ে। তারাও কোনোরকমে খেলে যাচ্ছিলেন। তখন পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দেন রানী হামিদ। সেদিন পুরো হলরুমে তালি পড়ে। দেশ থেকেও অনেক প্রশংসা কুড়ান তিনি। ওই স্মৃতি, ওই দিনটা কখনও ভুলতে পারেন না তিনি। এত কিছুর সঙ্গে ছুটছে বয়সের ঘড়ি। এরই মধ্যে আশিটি বসন্ত পার করেছেন। আর কত দিন দাবার বোর্ডে রাজত্ব করতে চান, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শরীর যত দিন চলবে ততদিন। কারণ শরীরের অবস্থা দেখে তো বুঝতে পারছি না। দেখা যাক কী হয়। শরীর ঠিক থাকলে ইনশাআল্লাহ চেষ্টা চালিয়ে যাব। খেলা তো আর ছাড়ছি না। যতক্ষণ শরীর ভালো আছে, চলবে।’
তরুণ যারা, বিশেষ করে মেয়েদের যারা দাবায় আসতে চান কিংবা এই খেলাকে পেশা ও নেশা হিসেবে নিতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে রানী হামিদ বলেন, ‘প্রথমত অভিভাবকদের অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, হারলেই তারা রাগ করে, বকাঝকা করে। এখন তো খুব সহজ হয়ে গেছে খেলাটা। এখন তারা ইন্টারনেটে দেখতে পায়, শিখতে পায়, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যখন খেলে, তাদের খেলা দেখতে পায়। আবার মফস্বলের অনেকে জানেও না কীভাবে খেলতে হয়। যেমন একজন ফেসবুকে লিখেছেন, আমার ছেলে অলিম্পিয়াডে খেলতে চায়। তবে গ্রামে-গঞ্জে দাবা খেলাটা কিন্তু আছে। তারা যখন সংবাদপত্রে দেখে আমরা খেলছি, তখন তাদেরও ইচ্ছা হয়। এই তৃণমূলে জোর দেওয়া দরকার। তবেই আমাদের মেয়েরা আরও সাহসের সঙ্গে দাবায় আসবে। দাবাকে পেশা হিসেবে নেবে।’ v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
আংশিক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নারী সদস্য রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যা শতকরা হিসেবে তাদের অংশগ্রহণের হার মাত্র ২.৬২ শতাংশ।
এর মধ্যে, সহ-সভাপতি পদে একজন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, মানবাধিকার সম্পাদক পদে একজন, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে একজন, ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক পদে একজন এবং সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদে দুইজন।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আটক
কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধর-তালাক, অন্যজনের সঙ্গে বিয়ে
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে ৬০ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ৯২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ৬৩ জন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ৬৪ জন এবং সদস্য রয়েছেন ৬২ জন।
এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মো. আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি পায় চবি ছাত্রদল। এরপর নানা জটিলতা ও সাংগঠনিক স্থবিরতায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সংগঠনটি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ৪২০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, একটি কমিটির মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ ২ বছর। সেখানে চবি ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
এদিকে, গত ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সংগঠনের সদস্য পদসহ স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদটি শূন্য রয়েছে।
পূর্বের আংশিক কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মো. আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তারা একই পদে বহাল আছেন।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী