কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় কাউছার সরকার নামে এক যুবককে কুপিয়ে দুই হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে। এর জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেঘনা থানার পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।

জানা গেছে, মেঘনার বড়কান্দা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের জাকির হোসেন ও কাউছার সরকার  ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী। এ নিয়ে কয়েক দিন আগে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় জাকিরকে মারধর করেন কাউছার। এরই জেরে ১৯ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাউছার সোনাকান্দা এলাকায় আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন। হরিপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠের উত্তর পাশে সেলিম সাহেবের বাড়ি সংলগ্ন সড়কে মোটরসাইকেল থামিয়ে কুপিয়ে দুই হাত-পায়ের রগ কেটে দেন জাকির ও তাঁর লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় কাউছারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কাউছারের বাবা শাহজাহান সরকার গত শুক্রবার ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মেঘনা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়ে ১০-১৫ জনকে। অন্যদিকে শনিবার রাতে জাকির হোসেনের মেয়ে জিয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ১০-১৫ জনকে।

শাহজাহান সরকার চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, তাঁর ছেলের শরীরে ২৩৩টি সেলাই লেগেছে। এ কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি এবং ন্যায়বিচার চান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন ও সাবেক ইউপি সদস্য মুকবুল হোসেন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা। জাকির ও তাঁর লোকজন প্রতিপক্ষকে দমন করতে এ হামলা চালিয়েছে।

কাউছারের চাচাতো ভাই আলামিন বলেন, ‘আমরা কাউছারকে নিয়ে চিন্তায় আছি বাঁচে নাকি মরে। জাকিরের লোকজন আমাদের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তাঁর বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের বিষয়ে কিছুই জানি না। পুলিশ সঠিক তদন্ত করুক, আমি ঢাকায় আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে জাকিরকে কল দেওয়া হলে মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বড়কান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো.

মাহফুজ সমকালকে জানান, জাকির আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কাউছার ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। তাঁর পরিবারের লোকজনও বিএনপি করে। দু’জনই বড়কান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী, এই নিয়েই ঝগড়া হয় তাদের।

মেঘনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, কাউছার ও জাকিরের মধ্যে আগে সংঘর্ষ হয়েছিল। এর জেরেই এই হামলা হয়েছে। কাউছারের বাবা মামলা করেছেন, অন্যদিকে জাকির হোসেনের মেয়ে আরেকটি মামলা করেছেন।

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা, যাতে নতুন করে কোনো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানো যায়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতুতে ঈদের ছুটির শেষ ৪৮ ঘণ্টায় ৭ কোটি টাকার টোল আদায়

ঈদের ছুটি শেষে গত দুই দিনে সড়কে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়ে যায় বহুগুণ। বেড়ে যায় যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপারও। বেড়েছে টোল আদায়ও। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় ১ লাখ ৭৭৭টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫০ টাকা।

যমুনা সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৮ হাজার ২৬৬টি যানবাহন রয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ৩৩ হাজার ৩২৯টি যানবাহন পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার ৫০ টাকা।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিকে ১৮ হাজার ৩৬৫টি যানবাহন পার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী যানবাহন ছিল ৩০ হাজার ৮১৭টি। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির জানান, স্বাভাবিক সময়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন প্রতিদিন পারাপার হয়। এবার ঈদের ছুটির শুরুতে এবং শেষে যানবাহন পারাপার কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ