ঈদ সামনে রেখে নিজের বা প্রিয়জনের জন্য ল্যাপটপ কিনছেন অনেকেই। কাজের ধরন এবং বাজেটের কারণে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বেশি কিনছেন তাঁরা। যাঁরা বাজেটের মধ্যে ল্যাপটপ কিনতে চান, তাঁদের জন্য ৫০ হাজার টাকার মধ্যে জনপ্রিয় ১০টি মডেলের ল্যাপটপের তথ্য তুলে ধরা হলো।
লেনেভো আইডিয়াপ্যাড ডি৩৩০ইন্টেল সেলেরন প্রসেসরে চলা ১০.
ইন্টেল সেলেরন এন৪০২০ প্রসেসরে চলা এই ল্যাপটপে ৮গিগাবাইট র্যাম ও ২৫৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতা রয়েছে। ১৫.৬ ইঞ্চি পর্দার পাশাপাশি ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস৬০০ সুবিধা থাকায় ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা বেশ ভালো পাওয়া যায় ল্যাপটপটিতে। শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য উপযোগী ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন১০ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন২৩ মার্চ ২০২৫এইচপি ২৫০ জি৮সেলেরন ডুয়েল কোর প্রসেসরে চলা এই ল্যাপটপে ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা রয়েছে। ১৫.৬ ইঞ্চি পর্দার ল্যাপটপটিতে শক্তিশালী প্রসেসর ও র্যাম থাকার কারণে সহজেই একসঙ্গে একাধিক কাজ করা যায়। এর ফলে পড়ালেখার পাশাপাশি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজও করা যায় ল্যাপটপটিতে। ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৩৭ হাজার টাকা।
আসুস ভিভোবুক গো ১৫ইন্টেল সেলেরন এন৪৫০০ প্রসেসরের এই ল্যাপটের ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ২৫৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতা রয়েছে। ইন্টেল এইচডি গ্রাফিকসসহ ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি পর্দার ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ধরনের রিমোট জব বা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বেশ উপযোগী ল্যাপটপটি।
ওয়ালটন প্রিলুড এন৪১ইন্টেল সেলেরন এন৪১২০ প্রসেসরে চলা এই ল্যাপটপে ৮ গিগাবাইট র্যাম রয়েছে। ১৪ ইঞ্চি পর্দার ল্যাপটপটি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যাঁরা বাড়ি থেকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসা পরিচালনা করেন, তাঁদের জন্য বেশ উপযোগী। ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৩৮ হাজার ৫৫০ টাকা।
আসুস ভিভোবুক এক্স৫১৫এমএইন্টেল সেলেরন এন ৪০২০ প্রসেসরে চলা এই ল্যাপটপে ৪ গিগাবাইট র্যাম ও ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা রয়েছে। ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস ৬০০ আইজিপিইউযুক্ত ল্যাপটপটিতে ১৫.৬ ইঞ্চি এফএইচডি পর্দা থাকায় দ্রুত বিভিন্ন কাজ করা যায়। ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৪২ হাজার ৫০০ টাকা।
আসুস এক্সপার্টবুক বিআর১১০০এফকেএইন্টেল সেলেরন এন৪৫০০ প্রসেসরে চলা এই ল্যাপটপের দাম পড়বে ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা। ১১.৬ ইঞ্চি পর্দার ল্যাপটপটিতে ৪ গিগাবাইট র্যাম ও ২৫৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার পাশাপাশি ৩৬০-ডিগ্রি কনভার্টেবল টাচ ডিসপ্লে সুবিধা থাকায় সহজেই বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব। ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা।
এসার অ্যাসপায়ার লাইট এএল১৫-৪১শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পেশাদারদের জন্য উপযোগী ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৪৭ হাজার টাকা। এএমডি রাইজেন৩ ৫৩০০ইউ প্রসেসরে চলা ১৫.৬ ইঞ্চি পর্দার ল্যাপটপটিতে ৮ গিগাবাইট র্যাম রয়েছে। গেমারদের জন্য বেশ কিছু ফিচারও রয়েছে এই ল্যাপটপে।
লেনোভো আইডিয়াপ্যাড ৪ইন্টেল কোর আইথ্রি-১০০৫জি১ প্রসেসরে চলা ল্যাপটপটিতে ৪ গিগাবাইট র্যাম ও ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা রয়েছে। আইজিপিইউ ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকসের পাশাপাশি ১৫.৬ ইঞ্চি এফএইচডি পর্দা থাকায় সহজেই বিভিন্ন কাজ করা যায়। ল্যাপটপটির দাম পড়বে ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এসার ট্র্যাভেলমেট পি২১৪-৫৩১৪ ইঞ্চি পর্দার এই ল্যাপটপের দাম পড়বে ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। ৮ গিগাবাইট র্যাম এবং ৫১২ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার ল্যাপটপটিতে ইন্টেল কোর আইথ্রি প্রসেসর রয়েছে। এর ফলে অফিসের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ, উপস্থাপনাসহ একসঙ্গে একাধিক কাজ দ্রুত করা যায় ল্যাপটপটিতে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র ৫০০ ট ক ৪ গ গ ব ইট র ৮ গ গ ব ইট র দ র জন য ইন ট ল ক জ কর উপয গ
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।
টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর।
গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।
দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত।
শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।
মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।
সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।