সোনারগাঁয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ-আলোচনা
Published: 26th, March 2025 GMT
সোনারগাঁয় বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ঐতিহাসিক মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের হলরুমে এই সভার আয়োজন করে বসুন্ধরা শুভসংঘের সোনারগাঁ উপজেলা শাখা। সভায় সভাপত্বিত করেন জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী মন্ডল। সভায় ২৫ মার্চ গণহত্যার তাৎপর্য ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা সভা করা হয়।
এ সময় উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কম্পানিগঞ্জ এবং পৌরসভার চিলারবাগ এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সোনারগাঁয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মূখ সমরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে চারজন পাক আর্মি নিহত হন এবং মজনু নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা সাহাদাত বরন করেন। ঐ এলাকাটিদে বর্তমানে শহীদ মজনুর নামে একটি পার্ক রয়েছে। যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ আছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। এ সময় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন করেন। এ ছাড়াও সম্মূখ সমরে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন, শাহ আলম মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা বর্ণনা করেন।
এসময় উপজেরা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের অন্যান্য উপদেষ্টার মাঝে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা, আব্দুল বাতেন মোল্লা, শফিকুল ইসলাম, মুনিরুজ্জামান, সিরাজুল ইসলাম রতন, সৈয়দ মোস্তফা, মোহাম্মদ হোসেন, মফিজুল ইসলাম খান সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা শুভসংঘের বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে শুভসংঘের বন্ধুরা বিশেষ সম্মাননা প্রদর্শন করেন।
এ সময় দেশ ও মানুষের কল্যানে কাজ করা বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রশংসা করে বলেন, আমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি আর বসুন্ধরাগ্রুপ দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত দেশ বিনির্মাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরো বলেন, বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্খা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট' নামে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ২৫ ম র চ গণহত য স ন রগ এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।