জীবনের ‘লু হাওয়া’ সরিয়ে লক্ষ্যে লুনা
Published: 28th, March 2025 GMT
জীবন যেভাবে শেখায়, পৃথিবীর তাবৎ পাঠশালা তা পারবে না। বিপদে শিরদাঁড়া যে সোজা রাখে, সফলতা তার মুঠোয় আসে! জিনাত রেহানা লুনা তেমনি এক নারী; জীবনের সব ‘লু হাওয়া’ সরিয়ে লক্ষ্যে আছেন অবিচল। অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন হাজারো নারীর।
রাজধানীর ধানমন্ডি ড্রিমস পার্লার অ্যান্ড ফিটনেস ক্লাবের সিইও লুনা ভালোবাসেন উপস্থাপনা। বাংলাদেশ বেতারে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে কাজটি করছেন পরম মমতায়। গুণী নাট্যশিল্পী, অভিনয়েও পটু। ১৯৯২ সাল থেকে লুনা বিটিভির তালিকাভুক্ত নাট্যশিল্পী।
২০২০ সালে করোনাভাইরাস কেড়ে নেয় লুনার স্বামী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে। এর পর মুদ্রার উল্টো পিঠ পরখ করেন। তাতে ভেঙে পড়েননি লুনা। পেছনের দিনগুলো থেকে প্রেরণা নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। লুনার ভাষ্য, ২০২০ সালের করোনা মহামারি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সব বিষয়ে আমাকে সহযোগিতা করা হাত দুটি হারিয়ে যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর মনে হচ্ছিল, আমার জীবন একেবারে থেমে গেছে! কিন্তু নিজের জীবনের পেছনের দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই– সাইফুলই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মোটিভেটর। এর পর নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পাই। মাত্র চার বছরে আজকের এখানে প্রতিষ্ঠিত করেছি।
জীবন সংগ্রামের বর্ণনায় লুনা জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগ মুহূর্তে তাঁকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। ছোট্ট পরিবার থেকে ওঠেন মোহাম্মদপুরের একান্নবর্তী সংসারে। স্বামীরা ১০ ভাইবোন, শ্বশুর-শাশুড়িসহ সদস্য ২৫। ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় লুনার স্বামী সাইফুল। শুরুতে অস্বস্তিতে পড়লেও দ্রুত মানিয়ে নেন। এর পর আবিষ্কার করেন– তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, দুই সন্তান লালন-পালন, চাকরিসহ সব কাজ সামলাতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না এ পরিবারের কারণে। বিয়ের পরপর স্বামী কুয়েতে গেলেও লুনা শ্বশুরবাড়িতে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট শেষে চাকরি শুরু করেন।
বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এমনকি ভিসা প্রসেসিং সেন্টারেও কাজ করেছেন লুনা। কর্মদক্ষতায় সফল হলেও পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাঁকে টেনে ঠেকানোর চেষ্টা করেছে বলে জানান। কিন্তু তিনি দমে না গিয়ে এসবকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতেন। ঘাম ঝরানো অর্থে ফ্ল্যাট, গাড়ি সবই করেছেন লুনা। তবে তিনি এখনও মনে করেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে একদিন মেয়েকে স্কুলে দিয়ে অফিসের গাড়ির কাছে পৌঁছাতে এক মিনিট দেরি হওয়ায় তাঁকে ফেলে চলে গিয়েছিলেন সহকর্মীরা। ওই ঘটনার পর নিজেকে নতুন উদ্যমে তৈরি করেন লুনা– নিজেকেই সব করতে হবে। কারও পানে চেয়ে থাকলে চলবে না। মেয়ে সাদিয়া জাহিন সাজিন ও সাবরিনা জাহিন সুজানার দিকে তাকিয়ে প্রতিবার ঠিক ফিনিক্স পাখির মতো দাঁড়িয়েছেন লুনা। বর্তমানে ড্রিমস পার্লারে ২০ নারী কাজ করছেন। প্রতিনিয়ত সেবা নিতে আসা নারীদের সঙ্গে কথোপকথনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে লুনার। নারীদের জন্য তাঁর পরামর্শ, নারীর জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন ধৈর্য।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় উড়োজাহাজের ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনা
কোঝিকোড় দুর্ঘটনা (২০২০)
২০২০ সালের ৭ আগস্ট এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইট কেরালার কোঝিকোড় বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বৃষ্টিভেজা রানওয়েতে ছিটকে পড়ে এবং দুই ভাগ হয়ে যায়। এতে ২০জন নিহত হন, আহত হন বহু যাত্রী। খারাপ আবহাওয়া, কম দৃশ্যমানতা এবং টেবলটপ রানওয়ে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিল।
ম্যাঙ্গালুরু দুর্ঘটনা (২০১০)২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২ ম্যাঙ্গালুরুতে অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি খাদে পড়ে যায়। বিমানে থাকা ১৬৬ জনের মধ্যে ১৫৮ জন নিহত হন। রানওয়েটি ‘টেবলটপ’ হওয়ায় দুর্ঘটনার মাত্রা ভয়াবহ হয়। টেবলটপ রানওয়ে হলো এমন একটি বিমানবন্দর রানওয়ে, যা একটি পাহাড় বা উঁচু মালভূমির ওপর অবস্থিত এবং চারপাশে গভীর খাদ বা ঢাল থাকে।
পাটনা দুর্ঘটনা (২০০০)২০০০ সালের ১৭ জুলাই কলকাতা থেকে দিল্লিগামী অ্যালায়েন্স এয়ারের একটি ফ্লাইট পাটনার একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের ৫৫ যাত্রী ও ভূমিতে থাকা ৫ জনসহ মোট ৬০ জন নিহত হন। অবতরণের সময় পাইলট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত একজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ১২ জুন, ভারত