প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী
Published: 29th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে বিশাল বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ২০২৮ সাল পর্যন্ত কোটা ও শুল্ক সুবিধার প্রতিশ্রুতিও।
সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন এবং বাংলাদেশ চীনের ‘এক চীন নীতিতে’ তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে ‘এক চীন নীতিতে’ বাংলাদেশ তার অবস্থান আবারো স্পষ্ট করেছে চীনের কাছে। ফলে চীনের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।
২১০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে সেদেশের সরকার ও চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দেশটির প্রায় ৩০টি কোম্পানি বাংলাদেশের বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে।
এ ছাড়া, মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে চীন। চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে আরো ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। অনুদান ও অন্যান্য ঋণ সহায়তা হিসেবে আসবে বাকি অর্থ।
২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে কোটা ও শুল্ক সুবিধা
বাংলাদেশের বিদ্যমান শুল্ক ও কোটামুক্ত রপ্তানি সুবিধা আরো দুই বছর বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এর আগে চীনা বাজারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা ছিল। প্রধান উপদেষ্টা ড.
চীনে আম রপ্তানির দুয়ার খুলল
চীন বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশও চীনে আম পাঠাতে চায়। বাংলাদেশ চীনে আম রপ্তানির জন্য ৬ বছর আগে দেশটির কাছে আবেদন করেছিল। তবে নানা জটিলতায় সেটা আর কার্যকর হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের মধ্যে দিয়ে সেদেশে আম রপ্তানির দুয়ার খুলেছে। আগামী মে-জুন মাস থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। এর মধ্যে দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশি আমের চাহিদা বাড়বে।
তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দেবে চীন
তিস্তা নদী প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক আগেই থেকে চীনের সহায়তা চেয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবার প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে এই প্রকল্পে সহায়তার আশ্বাস মিলেছে। তবে শুধু তিস্তা প্রকল্প নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি অধ্যাপক ইউনূস। তিনি নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীন থেকে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক চীন সফরে সেদেশের পানিসম্পদমন্ত্রী লি গোইয়িংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বৈঠকে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও ঢাকার চারপাশের দূষিত পানি পরিষ্কারের বিষয়ে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।
এক চীন নীতিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশ সব সময় এক চীন নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। তাইওয়ানকে চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেও মনে করে বাংলাদেশ। তবে এবার প্রধান উপদেষ্টার সফরে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। একই সঙ্গে চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ব্যাপারে নিজেদের অঙ্গীকারের কথা স্পষ্ট করেছে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের পথচলায় সমর্থনের কথাও বলেছে চীন।
তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতা নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়ে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেছেন, এই বাক্যটি হয়তো চীনের আগ্রহে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হোক বা না হোক, এটি কোনো পার্থক্য তৈরি করে না।
৯ চুক্তি ও সমঝোতা সই
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে একটি চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহযোগিতা–সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া, দুই দেশের চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়, গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও স্বাস্থ্য খাতে সই হয়েছে ৮টি সমঝোতা স্মারক।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গত বুধবার (২৬ মার্চ) চারদিনের চীন সফরে যান। প্রধান উপদেষ্টার এটাই প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর। এরই মধ্যে চারদিনের সফর শেষে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক চ ন ন ত প রকল প ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস
পুঁজিবাজারে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস লিমিটেডের পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্য মতে, লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ ডিসেম্বর হাইব্রড সিস্টেমে অনুষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৭৮ টাকা।
এদিকে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে (৪৩.৪৪) টাকা হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল (১৪.৫০) টাকা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩.২৭ টাকায়।
এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।
ঢাকা/এনটি/ইভা