আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হিংসা ও সন্ত্রাসের পুরোনো রাজনীতিকে জনগণ না বলে দিয়েছেন। হয়তো আরও কিছুদিন পুরোনো ধাঁচের রাজনীতির প্রভাব থাকবে। কিন্তু ধীরে ধীরে তরুণেরা নেতৃত্ব গ্রহণ করলে সেটা পেছনে পড়ে যাবে। কেউ চাইলেই আর এ দেশে ফ‍্যাসিবাদী শাসন ফিরিয়ে আনতে পারবে না।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের নিজ গ্রামের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে এক গণ–ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান এ কথা বলেন।

মজিবুর রহমান বলেন, যাঁরা একসময় মনে করেছিলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা মানেই ইচ্ছেমতো মানুষকে শোষণ করার সুযোগ, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-দখলস্বত্বের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ বানানোর লাইসেন্স, তাঁরা আজ হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছেন, ক্ষমতার অপব‍্যবহারের পরিণাম কত ভয়াবহ। ইতিহাসে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের করুণ পরিণতির কথা লেখা থাকলেও ক্ষমতা পেলে সবাই সেটা ভুলে যায়। দুই বড় দলের হিংসা–হানাহানির কারণে নাগরিকেরা আজ ক্লান্ত। জনগণ এবার তাই গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এর অবসান ঘটানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ফেনী প্রসঙ্গে এবি পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ফেনীকে ‘সন্ত্রাসের জনপদ’–এর পরিবর্তে বাংলাদেশের মানুষের জন‍্য ‘অনুপ্রেরণা ও উপলব্ধির জনপদ’ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। অতীতের সব ঘটনার সুষ্ঠু ও ন‍্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারলে ফেনীতে প্রতিহিংসার রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হবে। গডফাদারদের ইতিহাস ও তাঁদের পরিণতি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যখন জানবে, তখন তারা উপলব্ধি করতে শিখবে। দল-মতনির্বিশেষে ফেনীর তরুণেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ফেনীর রাজনীতিবিদেরাও আর বিভেদের চর্চা করতে পারবেন না।

শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারেক ইকবাল, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুর রহমান রিজভী, এবি পার্টির বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম, খেলাফত মজলিসের ফেনী জেলা সহসভাপতি মাওলানা ইসমাঈল হায়দার, যুবদল নেতা শাহগীর চৌধুরী প্রমুখ।

এবি পার্টি ফেনী জেলা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ফজলুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম, জেলা কমিটির আহ্বায়ক আহছান উল্যাহ, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আফলাতু বাকি, যুগ্ম সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম কামরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধক্ষ্য শাহ আলম শাহীন সুলতানি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবি সিদ্দিক, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব মিয়াজী, পৌর শাখার আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: