রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান কোচ কার্লো আনচেলোত্তির বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগে বুধবার (০২ এপ্রিল) স্পেনে তার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জানা গেছে, প্রথম মেয়াদে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ থাকাকালীন তিনি তার ‘ইমেজ রাইটস’ থেকে প্রাপ্ত আয় গোপন করে প্রায় ১০ লাখ ইউরো (প্রায় ১.০৮ মিলিয়ন ডলার) কর ফাঁকি দিয়েছেন।  

৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচের বিরুদ্ধে ২০১৪ ও ২০১৫ সালের আয়কর ফাঁকির দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউটররা আনচেলোত্তির জন্য প্রায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩.

২ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৩.৪৪ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা দাবি করেছেন।

তাদের অভিযোগ, তিনি শুধু তার রিয়াল মাদ্রিদ থেকে পাওয়া বেতন প্রকাশ করেছেন, কিন্তু ‘ইমেজ রাইটস’ থেকে পাওয়া আয়ের তথ্য গোপন করেছেন।  

আরো পড়ুন:

৭২ ঘণ্টার বিশ্রাম ছাড়া ম্যাচ খেলতে নামবে না রিয়াল

রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল

তিন দিন ধরে চলবে এই বিচার, তবে যেকোনো সময় আদালতের বাইরে আপসের সুযোগ রয়েছে। মামলার শুনানির আগেই স্প্যানিশ কর কর্তৃপক্ষ আনচেলোত্তির কাছ থেকে তাদের দাবিকৃত ফাঁকি দেওয়া অর্থ এবং তার সুদ আদায় করেছে বলে জানা গেছে।

আনচেলোত্তি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং স্পেনের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছেন। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, তিনি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত।  

ফুটবলে আনচেলোত্তির রেকর্ড অসাধারণ। তিনি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন—এর মধ্যে দুটি এসি মিলানের হয়ে এবং তিনটি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। এছাড়া, তিনি একমাত্র কোচ যিনি ইউরোপের পাঁচটি বড় লিগ—ইংল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, জার্মানি ও ফ্রান্সে শিরোপা জিতেছেন।  

আনচেলোত্তি হলেন স্পেনের কর কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে থাকা সর্বশেষ ফুটবল ব্যক্তিত্ব। এর আগে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসির মতো তারকা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধেও কর ফাঁকির মামলা হয়েছিল, যেগুলোর বেশিরভাগই বড় অঙ্কের জরিমানার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আনচ ল ত ত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ