নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে আটজন আহত হয়েছেন। পরে আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের সভাপতি মো.

হৃদয়ের নেতৃত্বে আজ বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলে। ‌এরপর দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের অপর পক্ষের নেতা প্রান্ত, রাফি ও তমালের নেতৃত্বে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। তাঁরা সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে দুই পক্ষ মারামারিতে জড়ায়।

চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ ওরফে সবুজ বলেন, কয়েক দিন আগে তিনি কলেজ ছাত্রদলের নতুন ঘোষিত কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি মো. হৃদয়। আজকের মারামারির ঘটনার জেরে কলেজের পাশে থাকা তাঁর দোকানে হৃদয়ের নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. হৃদয় বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে বহিরাগত সবুজের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনিসহ ছাত্রদলের তিন নেতা–কর্মী আহত হন।

জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস বলেন, ‘বহিরাগত কয়েকজন যুবক কলেজে ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।’

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, এক ছেলে কলেজ ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে আজ দুই পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে থানা–পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’