জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও তাঁর স্ত্রী নাদিরা মাহমুদের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করা হয়।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নূরুল মজিদের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৬৪ হাজার ১২৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়। তাঁর ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ১০২ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫০ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আর নূরুল মজিদের স্ত্রী নাদিরা মাহমুদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ১ কোটি ৩৪ লাখ ১৬ হাজার ২৫০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর র‍্যাব সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করার তথ্য জানায়। র‍্যাব জানিয়েছিল, গত ৪ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে নূরুল মজিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালান। এর পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের জোট শরিক দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনসাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ গ্রেপ্তার২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
  • শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা