গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় বাটা শোরুমে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

সোমবার রাতে মহানগরের গাছা থানায় মামলাটি দায়ের করেন তানভীর সু-স্টোর নামে বাটা শো রুমের ম্যানেজার তসলিম উদ্দিন। 

হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনকে ৫ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

গত সোমবার দুপুরে তৌহিদী জনতার ব্যানারে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শেষে বোর্ড বাজার এলাকার বাটা শো রুমসহ ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় লোকজন। 

অভিযোগ উঠেছে, বিক্ষোভ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা। তারা বোর্ড বাজারের বড় মসজিদের নিচতলায় স্থানীয় ফেরদৌস হোসেনের মালিকানাধীন বাটা জুতার শো রুমের সামনে সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে। একই মালিকের অন্য আরেকটি বাটা শো রুমের সামনের সাইনবোর্ডও ভেঙ্গে ফেলে। এরপর মহাসড়কের পাশের তৃপ্তি হোটেল, রাঁধুনী হোটেল ও লবলঙ্গ হোটেলের সামনে অংশে ভাঙচুর চালায়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বাটা কোম্পানির ডিলার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা তার দোকানের সামনের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছে। তবে দোকানের ভেতরে যেতে পারেনি। এর আগেই আমরা দোকান বন্ধ করি। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে সিয়াম খান অনিক, শিমুল আহামেদ শাওন, শাহীন আলম ও জয়নাল আবেদীন নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুল ইসলাম সোমবার মধ্য রাতের পর গাছা থানায় সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি সাংবাদিকদের জানান।  

গ্রেপ্তাররা হলে- ময়মনসিংহে নতুন বাজার বালিপাড়া গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে শিমুল আহামেদ শাওন (২০), নোয়াখালির সবুজ মিয়ার ছেলে সিয়াম খান অনিক (১৮), শরীয়তপুরের নাজিমুদ্দিন মোল্লার কান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে শাহীন আলম (১৯) ও গাছা থানার পূর্ব কলমেশ্বর এলাকার আমির হোসেনের ছেলে জয়নাল আবেদীন। 

গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মোহাম্মদ রাশেদ জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনকেই ৫দিনের করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাটা শো রুমের ম্যানেজার তসলিম উদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার রাতেই ১ হাজার ২শ অজ্ঞাত লোকের বিরুদ্ধে গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

বোর্ড বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাটা শো রুম দু’টি বন্ধ রয়েছে। তবে হোটেলগুলো চলছে। তৃপ্তি হোটেলের তত্বাবধায়ক লাল মিয়া জানান, আমাদের হোটেলের সামনে এসে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা এসে কোকাকোলা ও সেভেন আপের ব্যানার সরিয়ে ফেলতে চাপ দেয়। পরে আমরা সেগুলো সরিয়ে ফেলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরো এলাকায় তারা আতংক সৃষ্টি করে ফেলে। 

গাছা থানার ওসি জানান, দোকানে হামলার ঘটনার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ও ইন্ধন দিয়েছে পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র এল ক স মব র র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ