নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিএসইজেড) ঘুরে দেখলেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সাতটি দেশের ৩৬ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সেখানে যান। সেখানকার বিনিয়োগ পরিবেশ, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো বিষয়ে খোঁজখবর নেন তারা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) উদ্যোগে আড়াইহাজারে বিএসইজেড বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। এর আগে সোমবার তারা চট্টগ্রামে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন।  
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে অংশ নিতে আসা বিনিয়োগকারীদের এই দলটিতে ছিলেন চীনের ১০ জন, জাপানের তিনজন, সৌদি আরবের তিনজন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনজন, যুক্তরাষ্ট্রের আটজন, ভারতের একজন প্রতিনিধি। এ ছাড়া এনআরবি বা অনিবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ছিলেন আটজন। তারা সেখানে অবস্থিত সিঙ্গারের কারখানায় যান। এরপর তারা বিএসইজেডের বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন। 

বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরে বিএসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি বলেন, বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের উন্নত সব পরিষেবা রয়েছে। পণ্য ও কাঁচামাল আমদানির সুবিধার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরেই দেওয়া হয়েছে বন্ডেড ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা। ফলে বন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হয় না। 
বিএসইজেডে উৎপাদনে থাকা সিঙ্গারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মাত্র ২০ মাসে প্রতিষ্ঠানটি নির্বিঘ্নে তাদের কারখানা নির্মাণকাজ শেষ করেছে। বিনিয়োগ করেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। কারখানাটিতে সিঙ্গার মাসে ৫০ হাজার ফ্রিজ ও ১০ হাজার পিস টেলিভিশন তৈরি করছে।

পরিদর্শনকালে চীনা মালিকানার তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জিনিউ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী (সিইও) নিকোলাস কি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। মূল সমস্যা হচ্ছে সরকারের নীতির ধারাবাহিকতা না থাকা। বিনিয়োগ করার পর নীতি পরিবর্তনে সমস্যায় পড়ে বিনিয়োগ। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।  
চীনের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান গ্রিন অ্যান্ড স্মার্ট এনার্জি অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল উইও জিয়ানবো বলেন, বিএসইজেডের ভেতরের অবকাঠামো বিনিয়োগ উপযোগী। সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচএম ফাইরোজ বলেন, বিশ্বের সব জায়াগাতেই নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ইতিবাচক উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে। 
এদিন নিলর্ন বাংলাদেশ নামে সুইডেনের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে বিএসইজেড কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে তাদের একটি পোশাক কারখানা আছে। বিএসইজেডে গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনের জন্য আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ করতে চান তারা। ধাপে ধাপে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। 
পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, গত দু’দিন বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো দেখে সন্তুষ্ট। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে যেসব চ্যালেঞ্জ ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার তা দূর করার চেষ্টা করছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসইজ ড ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি। কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অধিক আলোচনায় থাকেন। কারণ নিজের ইচ্ছায় বাঁচেন এই নায়িকা। ফলে তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন উড়লেও তা গায়ে মাখেন না।  

ব্যক্তিগত জীবনে একাধিকবার বিয়ে করেছেন পরীমণি। সর্বশেষ অভিনেতা শরীফুল রাজের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। এ সংসারে পূণ্য নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। যদিও এ সংসারও টিকেনি। প্রেম, বিয়েবিচ্ছেদ, সন্তান নিয়ে মাছরাঙা টেলিভিশনের ‘বিহাইন্ড দ্য ফেইম উইথ আরআরকে’ অনুষ্ঠানে খোলামেলা কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।  

আরো পড়ুন:

ঈদে মুক্তি পাবে পরীমণির সিনেমা

শুধু বেঁচে থাকার চেয়ে, বাঁচা জীবন উদযাপন করাই শ্রেয়: পরীমণি

এ আলাপচারিতায় সঞ্চালক জানতে চান, তোমার কি মনে হয় বিয়েটা ভুল ছিল? জবাবে পরীমণি বলেন, “না। আমার জীবনের কোনো কিছুই ভুল না। সবকিছুই একটা অভিজ্ঞতা।” সঞ্চালক বলেন, আমার মনে হয়, তোমার সাথে এখন পূণ্য থাকার কারণে বিয়েটাকে ভুল বলছো না। জবাবে পরীমণি বলেন, “না, না। ও না থাকলেও বলতাম। অন্য একজনকে নিয়ে কেন বলি না। সবচেয়ে বেশি আফসোস কী জানেন, আমার সাথে কোনো এক্সের (প্রাক্তন) ওই মুহূর্ত আসে নাই, যেখানে গালাগালির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।” 

খানিকটা ব্যাখ্যা করে পরীমণি বলেন, “যে গালিটা চরিত্রের উপরে যাবে, হৃদয়ে লাগবে। মানে আত্মসম্মানে লাগবে এমন কিছু গালি থাকে না! সেটা হতে পারে তুই অথবা কোনো গালিই না! এরকম কোনো পর্যায় আমার এক্সের সাথে হয় নাই। যখন আমার মনে হয়েছে, ওই পক্ষটা আর আগাবে না, টাফ ছিল…।” 

এরপর সঞ্চালক জানতে চান, তুমি কী সংসারটা ধরে রাখতে চেয়েছিলে? জবাবে পরীমণি বলেন, “এটা পরে বলি। আমরা দুইপক্ষ যখন বসলাম যে, এটা আর আগানো যাবে না, একটা রেসপেক্টফুল জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা ব্রেকআপ করি। কেন? হয়তো কোথাও দেখা হবে! হয়তো দেখা হবে না। কিন্তু কোথাও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে নামটা আসলে, সেখান থেকে উঠে চলে যাব ব্যাপারটা এরকম যেন  না হয়, ব্যাপারটা যাতে সহনশীল একটা জায়গায় থাকে। এই সম্মানটা আমি সবার কাছ থেকে পেয়েছি, সবাইকে দিয়েছিও। যে প্রাক্তনের (প্রাক্তন স্বামী) কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অপমানিত হয়েছি। এসব তো আপনাদের সামনেই হয়েছে। বিচ্ছেদটা তো আরো সুন্দর হতে পারত, সেটা কেন হয়নি?” 

আমরা শুনেছি, এখন তিনি বাচ্চার (পূণ্য) খোঁজখবর নেন, ভরণপোষণ দেন—সঞ্চালকের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে পরীমণি বলেন, “আমি তো কোথাও শুনিনি। উনি মনে হয় ভুলে গেছেন, উনার বাচ্চা আছে। আমি নিশ্চিত, উনি ভুলে গেছেন।” কেউ কেউ বলেন, তুমি নাকি যোগাযোগ করতে দাও না? এ প্রশ্নের জবাবে পরীমণি বলেন, “বাচ্চা বড় হয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এসব অভিযোগের কোনটা সে গ্রহণ করবে, কোনটা করবে না। আমি প্রত্যেকটি বিষয় ক্লিয়ার করে রেখে গিয়েছি, আম পাবলিক একটা কথা বলল সেটাও। আমি যদি আজকে মরেও যাই, এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে, তার সবকিছুই ও পেয়ে যাবে। আমি এভাবে এটা রেখে গিয়েছি। এখন আমার কাজই এটা। মাদারহুডে আমি কোনোভাবেই ফেল করতে চাই না, আমি করবও না। আমার বাচ্চা কোনো দিন আমার দিকে আঙুল তুলে কথা বলতে পারবে না। এমন না যে, ও ওর বাবাকে অসম্মান করে কথা বলবে। কারণ আমি ওকে ওইভাবে বড় করছি।”

বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে পরীমণি বলেন, “হাসপাতালে উনার নাম্বার দেওয়া। আমি আসলে উনার নামটাও মুখে নিতে চাই না। যাহোক, পূণ্যর টিকার ডেটে হাসাপাতাল থেকে মেসেজে উনার ফোন নাম্বারে যায়, উনি কি এটা দেখেন না? আমি কোনো অভিযোগ করছি না, যারা বলেন আমি যোগাযোগ করতে দিই না, তাদের জন্য বলছি—‘এসব তথ্য ভুল’। উনি না হয় ভুলে যান, কিন্তু আমার বাচ্চার দাদা-দাদি নাই? রক্ত তো মুছে ফেলা যায় না। পূণ্যর বিশেষ দিনগুলোতে তারা কেন একটা ফোন দেন না? পূণ্য যখন অসুস্থ হয়, তখনো কেন ফোন করেন না, খোঁজখবর নেন না? খোঁজখবর নেওয়া মানে তো ভরণপোষণ দেওয়া না, আমার বাচ্চার ভরণপোষণ লাগে না। তারাও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন?”    

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দিনাজপুরে শিয়ালের কামড়ে আহত ৮
  • অসুস্থ যুবদলনেতা রুহুল আমিনের খোঁজখবর নিলেন সজল-সাহেদ
  • আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির