যুক্তরাজ্যের আদালতে হাজিরা দিয়েছেন দেশটির রাজপরিবার থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেওয়া সদস্য প্রিন্স হ্যারি। ২০২০ সালে সব ধরনের রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মারকেল।

যুক্তরাজ্য ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন এই তারকা দম্পতি। সেই সময় থেকেই হ্যারি যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্যদের সব সুযোগ-সুবিধা পান না। এ নিয়েই দীর্ঘদিন চলছে আইনি লড়াই।

এএফপি জানায়, গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই মামলা সূত্রে আপিল আদালতে হাজিরা দেন হ্যারি। রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর ব্রিটেনে অবস্থানকালে তাঁর জন্য নির্ধারিত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন হ্যারি।

সেখানে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্যদের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন তিনি। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন হ্যারি। সেটা নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলছে আইনি লড়াই। সে সময় আদালতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তিনজন বিচারক ছিলেন। প্রচুর সাংবাদিকও ছিলেন তখন। পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই তিনি আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হ্যারি। বিবিসি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তার কাজে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ 

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বাঁশের বেড়া দিয়ে আধা কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছেন জহিরাবাদ ইউনিয়নের নেদামদী মাথাভাঙ্গাসহ ১০ গ্রামের মানুষ। 

ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানান, ৫০ বছর পর উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জামতলা মজুমদার বাড়ি হতে তপাদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণের জন্য এক লাখ ১৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

রাস্তাটির কাজ শুরু হওয়ার পর গত শনিবার (১৪ জুন) মজুমদার বাড়ির ইব্রাহীম মজুমদার, রফিক মুন্সী, ওচমান ও ওমর মজুমার গংরা বাঁশের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে রাস্তাটি সংস্কার কাজ অব্যাহত রাখার দাবিতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মানববন্ধন করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, মজুমদার বাড়ির ইব্রাহীম মজুমদার, রফিক মুন্সী, ওচমান ও ওমর মজুমার গংরা শনিবার রাস্তার কাজ শুরু হওয়া দেখে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে চলে যায়।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, আধা কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় দশ গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ হচ্ছে। এই রাস্তা দিয়ে নেদামদী-মাথাভাঙ্গা গ্রামের বাহিরে ইউনিয়নের দক্ষিণ এখলাছপুর, বরইকান্দী, বালুয়াকান্দি, কাজিকান্দি, আমিনপুর, হাশেমপুর, নয়াকান্দি গ্রামে বাসিন্দারা ব্যবহার করে আসছে। জহিরাবাদ ইউনিয়নের বরইকান্দি থেকে পাঁচানি সড়ক প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। অথচ এই রাস্তাটির দুই পাশে পাকা সড়ক ও আধা কিলো মিটার কাঁচা।

ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন সিকদার বলেন, “৫০ বছর আগ থেকে রাস্তাটা চালু। ১৭/১৮ বছর ধরে রাস্তার বরাদ্দ পায়। আক্কাছ চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করলে শুধু বলে বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দটা কোনদিকে যায় বুঝতে পারি না। এখন বরাদ্দ এসেছে আস্তে আস্তে কাজ শুরু হলো। আমরা এতোগুলো পরিবার একটা গাড়ি নিয়ে যেতে পারি না। এখন রাস্তাটা বেড়া দিয়ে রেখেছে। আমরা চাই রাস্তাটা হোক।”

প্রবাসী ফয়েজ আহমেদ বলেন, “মালয়েশিয়া থাকি। তিনমাস পর পর আসি। রাস্তাটাকে সরকারিভাবে সংস্কার করতে চাচ্ছে। বিশেষ করে মজুমদার বাড়ির ওরা ষড়যন্ত্র করে রাস্তাটি করতে দিচ্ছে না। বিদেশ থেকে এলে মালামাল কাঁধে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে হয়।”

ভুক্তভোগী পরিবারের মধ্যে জহিরুল ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের পর উপজেলা প্রশাসনের কাছে একটি আবেদন করেছি। বরাদ্দ পেয়ে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছি। রাস্তা হওয়ার খবরে সবার মাঝে খুশির বার্তা বয়ে যায়। অথচ কাজের তিন দিন না যেতেই মজুমদার বাড়ির লোকজন রাস্তাটিতে বেড়া দিয়ে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করেছে।”

মজুমদার বাড়ির ইব্রাহীম মজুমদার বলেন, “‍আমরা ঢাকায় থাকি। হাঁটাচলার জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকু রাস্তা সেখানে রয়েছে। কিন্তু ওনারা সেখান দিয়ে হাতি-ঘোড়ার মত গাড়ি ঘোড়া নিতে চায়। এটা হতে দেওয়া যায় না। তাই আমাদের পৈতৃক জমিতে যেন বেশি ঘেঁষতে না পারে, সেজন্যই আমরা বেড়া দিয়েছি।”

ইউপি সদস্য ও প্রকল্পের সভাপতি রোকেয়া বেগম জোসনা বলেন, “মজুদার বাড়ি থেকে তপাদার বাড়ির রাস্তাটি নির্মাণাধীন। হঠাৎ করে দুই দিন ধরে একটা পরিবার বেড়া দিয়ে রেখেছে। এখন তাদেরকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে রাস্তাটি করতে হবে।”

মতলব উত্তরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম  মনি বলেন, “জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজটি শেষ করতে স্থানীয়দের নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়া ফৌজদারী অপরাধ।”

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ