আবাহনীর জয়ে উজ্জ্বল অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক
Published: 9th, April 2025 GMT
সুপার লিগ নিশ্চিত হয়েছে আগেই। এখন কেবল এগিয়ে যাওয়ার পালা। সমান গুরুত্বের প্রতিটি ম্যাচের পয়েন্ট এখন বাড়তি পাওয়া। সেজন্য আরো সিরিয়াস আবাহনী লিমিটেড।
তাইতো প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষেও নিজেদের সেরা খেলাটা খেলল আবাহনী। বিকেএসপিতে প্রাইম ব্যাংককে তারা হারিয়েছে ১৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আবাহনী লিমিটেড ৯ উইকেটে ২৯০ রান করে। জবাবে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস খেমে যায় ১৫৭ রানে।
আরো পড়ুন:
মাঠে ফিরেই নির্বাচকদের দিকে নাসিরের আঙুল
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে অগ্রণী ব্যাংককে জেতালেন তাইবুর
আবাহনীর এই ম্যাচেরও নায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। গত ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে আবাহনীকে জিতিয়েছিলেন তিনি। এবার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দলকে জিতিয়েছেন। প্রথমে ব্যাট হাতে ৪২ বলে ২ ছক্কায় ৩৭ রান করেন। পরবর্তীতে বল হাতে ২৯ রানে নেন ৩ উইকেট।
তাতে আবাহনীর জয় নিশ্চিত হয়ে যায় অতি সহজে। দশ ম্যাচে এটি আবাহনীর নবম জয়। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছেন শীর্ষে। লিগের রাউন্ড রবিন লিগের শেষ রাউন্ডের খেলায় আবাহনীর প্রতিপক্ষ মোহামেডান। এর আগে দারুণ জয়ে মোসাদ্দেক, শান্তরা নিজেদের ঝালিয়ে নিলেন।
প্রাইম ব্যাংকের এটি দশ ম্যাচে পঞ্চম হার। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে তারা জিততে না পারলে সুপার লিগে উঠা কঠিন হয়ে যাবে।
আবাহনীর জয়ের দিনে রান পেয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ইমন ৭১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৯ রান করেন। এই ইনিংস খেলে রান সংগ্রাহকের তালিকায় দুইয়ে উঠে এসেছেন তিনি। ১০ ইনিংসে তার রান ৫৫৩। সমান ইনিংসে ৫৮২ রান নিয়ে শীর্ষে নাঈম শেখ। ফিফটির স্বাদ পেয়েছেন অধিনায়ক নাজমুলও। ৭০ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এছাড়া মুমিনুল ১৭, মিথুন ১৫ রান করেন। শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ৩৭, রাকিবুলের ১৪, রিপনের ১৭ রানে আবাহনীর রান তিনশর কাছাকাছি পৌঁছায়।
বল হাতে পেসার হাসান মাহমুদ ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেন। স্পিনার নাঈম আহমেদ ৪৮ রানে পান ৩ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় নাঈম শেখ বেশ ভালো শুরু পান। ৭৪ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৭৩ রান করেন। টপ ও মিডল অর্ডারের বাকি ব্যাটসম্যানরা কেউই পারেননি দলের হাল ধরতে। সাব্বির হোসেন ৩, শাহাদাত দিপু ৪, রিপন ২, জাকির শূন্যরানে আউট হন। শামীম হোসেন ২৬ বলে ৪০ রান করেছিলেন ৩ চার ও ৪ ছক্কায়। কিন্তু তার চেষ্টা বৃথা যায় বাকিদের ব্যর্থতায়।
মোসাদ্দেকের ৩ উইকেট বাদে ২ উইকেট পেয়েছেন স্পিনার রাকিবুল। ১টি করে উইকেট পান নাহিদ, মেহরব, জিসান ও মাহফুজ রাব্বী।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।