আমি আর্জেন্টাইন, চারটা ট্রফি আছে: ফ্রান্সে গিয়ে মনে করিয়ে দিলেন মার্তিনেজ
Published: 9th, April 2025 GMT
ফ্রান্সের ফুটবল–সমর্থকদের মধ্যে সবচেয়ে অজনপ্রিয় ফুটবলারদের তালিকা করলে ওপরের দিকেই থাকবে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের নাম। ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ও ফাইনালের পর এই আর্জেন্টাইন গোলকিপারের বিভিন্ন আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন ফরাসিরা। এ নিয়ে কথা চালাচালি গড়িয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও।
সেসব ঘটনার পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো থামেনি ‘এমিলিয়ানো মার্তিনেজ–ফ্রান্স লড়াই’। এবার যেমন ফরাসি দর্শকদের খোঁচা দিতে আর্জেন্টিনার ক্যাপ পরে প্যারিসে গেছেন মার্তিনেজ। একজন আর্জেন্টাইন হিসেবে জাতীয় দলের ক্যাপ তিনি পরতেই পারেন। কিন্তু মার্তিনেজ এবার প্যারিসে গেছেন অ্যাস্টন ভিলার হয়ে, পিএসজির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে। তবে ক্লাবের হয়ে খেলতে এলেও মার্তিনেজ শুরুতেই বুঝিয়ে দিলেন—‘আমি আর্জেন্টাইন, আমার চারটা ট্রফি আছে।’
২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ফরাসিদের কাছে খলনায়ক হয়ে ওঠা মার্তিনেজ ফ্রান্সে সর্বশেষ গিয়েছিলেন গত বছর। ইউরোপা কনফারেন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ভিলার প্রতিপক্ষ ছিল লিল। ম্যাচের সময় ভিলার গোলপোস্টে দাঁড়ানো মার্তিনেজকে অনবরত খেপিয়ে গেছেন লিলের দর্শকেরা।
গত মাসে সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণা করে মার্তিনেজ বলেছিলেন, ‘পুরো ম্যাচে ওরা আমাকে অপমান করে গেছে। আমার পুরো জীবনে কখনো এত অপমানের শিকার হইনি। ওরা যা পেরেছে করেছে, কিন্তু ১২০ মিনিটে আমি ওদের কিছুই করি নাই।’
৩২ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন গোলকিপারের কথায় স্পষ্ট, ফরাসি দর্শকদের ওপর তাঁর ক্ষোভও কম নয়। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির বিপক্ষে মাঠে নামলেও একই আচরণের শিকার হতে হবে—এমনই হয়তো ধরে নিয়েছেন।
আরও পড়ুনমার্তিনেজ ‘উগ্র’, ফার্নান্দেজের গান ‘জঘন্য’, বললেন ফরাসি ডিফেন্ডার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ম্যাচের সময় একজন খেলোয়াড়ের কিছু করার সুযোগ নেই বলেই হয়তো ফ্রান্সে পা রাখার মুহূর্তটিকেই ‘আগাম আক্রমণের’ জন্য কাজে লাগিয়েছেন মার্তিনেজ। দলের অন্যরা অ্যাস্টন ভিলার জার্সি পরে প্যারিসে গেলেও মার্তিনেজকে বিমানবন্দরে দেখা গেছে আর্জেন্টিনার ক্যাপ মাথায়। ক্যাপের সামনের অংশে আর্জেন্টিনার পতাকা, সঙ্গে খচিত ফিফা বিশ্বকাপ, দুটি কোপা আমেরিকা ও ফিনালিসিমা ট্রফির ছবি। মার্তিনেজের বার্তা স্পষ্ট, ‘আমি আর্জেন্টাইন, যার চারটা ট্রফি আছে।’
ভিলার হয়ে আসা মার্তিনেজের আর্জেন্টাইন উপস্থিতি ফরাসিদের কেমন তাঁতিয়ে দেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজি–অ্যাস্টন ভিলা মুখোমুখি হচ্ছে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।
আরও পড়ুনমার্তিনেজ, অর্ধেক মানুষ তুমি অর্ধেক ‘জন্তু’০৫ জুলাই ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’