‘গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি`র আত্মপ্রকাশ
Published: 11th, April 2025 GMT
‘গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি’ (ডিপিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দলটির স্লোগান ‘এ লড়াই জাতীয় মুক্তি, সাম্য, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার’।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে দলটি আত্মপ্রকাশ করে।
গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তির চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মালেক ফরাজী বলেন, “২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ও আশার সঞ্চার হয়েছে জনগণের মাঝে এবং তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। অত্যাচার-জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্ত হতে রাজপথে বহু মানুষ আত্মহুতি দিয়েছে।”
৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ডিপিপি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ও ভারতের আধিপত্যর বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কোনো দলের নেতৃত্বে এই আন্দোলন হয়নি। ৭১ ও ২৪ সালের স্বাধীনতা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর বিপ্লবী সরকার গঠন করলে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নতুন সংবিধান লিখে নতুন যুগের সূচনা শুরু করা যেত। কিন্তু দুর্ভাগ্য রাজনৈতিক শক্তির অভাবে কারণে তা সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “দেশের মানুষ ও মাটির জন্য ড.
অনুষ্ঠানে দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ডিপিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল হোসেন খান। তিনি বলেন, “চলমান পক্ষপাতিত্বের রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল বদলে দেওয়ার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় নতুন রাজনৈতিক দল ‘গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি’-এর আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি। নতুন রেনেসাঁস, নতুন গণজাগরণ, নতুন রাজনীতি ও মহান নেতৃত্ব সৃষ্টি করে আমাদের জাতি সুস্থ, স্বাভাবিক, সমৃদ্ধশালী, শক্তিমান ও প্রগতিশী হয়ে উঠবে। আজ সবার সম্মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রত্যয় এবং প্রতিজ্ঞা ঘোষণা করছি যে, আমরা নানা ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য লাঘব করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের প্রগতিশীল ধারায় স্থাপন করব ইনশাল্লাহ।”
ডিপিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদ নিয়াজীর সঞ্চালনায় আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণআজাদী দলের সভাপতি মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, প্রফেসর দেওয়ান ইবনে সাজ্জাদ আফজাল খান, গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তির সহসভাপতি জামাল উদ্দিন জামাল প্রমুখ।
ঢাকা/মামুন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ন র জন নত ন র
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ