১. তুমি তো এ রকমই

অনেক সময় সঙ্গী কোনো ভুল করলে আরেকজন এ কথাটি বলে ফেলেন। এতে সঙ্গী আহত হন। ভুল শোধরানোর অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলেন। সম্পর্কের মধ্যে জায়গা করে নেয় নেতিবাচক এনার্জি।

২. তুমি কেন ‘এইটা’ করো না, ‘ওইটা’ করো না

এ কথার ভেতর দিয়ে আপনি সংসারে ‘ব্লেম গেম’ ঢুকিয়ে দিলেন। আপনার সঙ্গীকে ‘তুমিও তো ওইটা করতে পারতে’ বলে আদতে কোনো সমাধান হয় না। আপনারা দুজনে মিলে আসলে একটা দল। তাই বলতে পারেন, ‘চলো, আমরা বরং দুজনে মিলে কাজটা করি।’

আরও পড়ুনএই ৫ কারণে দাম্পত্যে ‘পিলো টক’ জরুরি০৮ অক্টোবর ২০২৪৩.

কিছু হয়নি বা কিছু না

নিশ্চিতভাবেই কিছু একটা হয়েছে। মুখ দেখে, শরীরী ভাষায় বা হাবভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সঙ্গী যখন জানতে চাইছে, ‘কী হয়েছে?’ আপনি বলছেন, ‘কিছু না!’ এর মাধ্যমে আপনি সঙ্গীকে দূরে ঠেলে দিলেন। নিজেদের আবেগীয় নির্ভরতার জায়গায় আঘাত হানলেন।

৪. আমি তো এ রকমই

কথাটি আপনার কাছে নিরীহ বা অহিংস মনে হলেও এর ভেতর দিয়ে আপনি সঙ্গীকে জানিয়ে দিলেন যে আপনি বদলাতে রাজি নন। এ কথার ভেতর দিয়ে আপনি একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে দিলেন। অথচ একটা সম্পর্ক দুজনের প্রতিনিয়ত ভুল শুধরে নেওয়ার আন্তরিকতা ও ত্যাগের ভেতর দিয়ে শক্তশালী হয়।

আরও পড়ুন‘গ্রে ডিভোর্স’ কী? কেন পরিণত বয়সে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন দম্পতিরা১৫ এপ্রিল ২০২৫৫. অমুক এ রকম করত

সম্পর্কে এর চেয়ে বড় রেড ফ্ল্যাগ আর হয় না! সঙ্গীকে সাবেক বা অন্য কারও জীবনসঙ্গীর সঙ্গে তুলনা করা রীতিমতো মানসিক নির্যাতন, ঘৃণ্য অপরাধ। প্রত্যেক মানুষই আলাদা। সঙ্গীর স্বকীয়তা বা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতার প্রশংসা করুন। দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে দুজন দুজনের সেরাটা দিয়ে সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিন।

সূত্র: এমএসএন

আরও পড়ুননারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন, জানেন?১৬ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় এক মাসে ১৩ লাশ উদ্ধার, বাড়ছে উদ্বেগ

বাড়িতে ঝগড়া চলছিল বড় ভাই ও ভাবির। ছোট ভাই এসে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ধারালো বঁটি দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করেন। পরে বড় ভাই শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ মে, খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামে।

এর আগে ২৭ মে কয়রার ইসলামপুর গ্রামের কয়রা নদীর চর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আবদুল মজিদ (৬২) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ৮ জুন কয়রার কাছারিবাড়ি বাজার-সংলগ্ন পুকুর থেকে নমিতা (৪০) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

১০ জুন কয়রা সদরের গোবরা সড়কে এক ভ্যানচালকের সঙ্গে এক মোটরসাইকেলচালকের কথা-কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া কথা-কাটাকাটির জেরে কয়রার পল্লীমঙ্গল গ্রামে গত তিন দিনে কয়েক দফা মারামারি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

অসন্তোষ-দ্বন্দ্বের জেরে কয়রা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা–সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ১০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত এক মাসে খুলনার ১০টি থানা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ ১৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। মূল্যবোধ ও ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। এতে খুনখারাবি বাড়ছে। একসময় সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেতেন। নেতিবাচক দিকগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতেন। এখন সেই ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। পাশাপাশি রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াইয়ে প্রভাববলয় সৃষ্টি করতেও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

৩ জুন খুলনা শহরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবুজ হাওলাদার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালের মধ্যে আটকে ছিল এক নারীর মরদেহ। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুলে দাফন করা হয়। গত ৯ জুন বিকেলে রূপসা উপজেলার আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাসনালিতে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। রূপসা নৌ পুলিশের ওসি আবুল খায়ের বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই অপরাধ বেড়ে চলেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারলে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে। আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়ে চলেছে।

কয়রা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে প্রতিটি ঘটনায় পুলিশও তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যে বিষয়গুলো পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধের মধ্য দিয়ে সমাধান করা যায়, সেখানে খুনাখুনি, অস্থিরতা, মামলা-হামলার মধ্য দিয়ে একধরনের বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে; যা সবার জন্যই অকল্যাণকর ও ভয়ানক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ