Samakal:
2025-04-30@23:57:27 GMT

এক বিস্ময়কর অধ্যায়

Published: 17th, April 2025 GMT

এক বিস্ময়কর অধ্যায়

১৯৬৪ সালে ‘সুতরাং’ সিনেমার মধ্য দিয়ে যে কিশোরীটি রূপালি পর্দায় পা রাখলেন, সময়ের আবর্তনে তিনি হয়ে উঠলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। একজন সময়ের সাক্ষী, সংগ্রামী শিল্পী তিনি কবরী। যাঁর আসল নাম মিনা পাল। কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করলে কবরীকে আপন মহিমা, আভিজাত্য ও গৌরবে উপস্থাপন করা যায়? মিষ্টি মেয়ে, স্বপ্ননায়িকা, কিংবদন্তি যেভাবেই ডাকা হোক না কেন, একজন পরিপূর্ণ কবরী অনিঃশেষ অখণ্ডতায় আবিষ্কার করা সহজ নয়। বাংলা চলচ্চিত্রের গৌরবময় ইতিহাসের স্বর্ণালি অধ্যায় অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীর আগমনে উজ্জ্বল হয়েছে। অনেকের ভিড়ের মধ্যে কবরী ছিলেন একেবারেই স্বতন্ত্র। 

কিশোরী বয়সেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন হাজারো দর্শকের ভালোবাসার পাতায় পাতায় এক প্রিয় নাম– ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী। অভিনয়, সৌন্দর্য, সততা, নিষ্ঠা আর একাগ্রতার পরিপূর্ণ প্যাকেজ ছিলেন কবরী। তাঁর চাহনি, কটাক্ষ, হাসি, অভিনয় প্রতিভায় মগ্ন হয়েছিলেন আবালবৃদ্ধবনিতা। তাঁর ভুবন ভোলানো হাসি আর হৃদয়ছোঁয়া অভিনয়ে মুগ্ধ সব বয়সী দর্শক। তাইতো তিনি ছিলেন তাঁর সময়ে রূপালি পর্দায় অপরিহার্য একজন। সে সময়ে একটি কথা প্রচলিত ছিল– ‘কবরী হাসলেও লাখ টাকা, কাঁদলেও লাখ টাকা। অর্থাৎ তাঁর অভিনয় এতটাই নিখুঁত যে, তিনি বাংলার সব শ্রেণির দর্শকের কাছে পাশের বাড়ির সেই মেয়েটি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।

পাশের বাড়ির মেয়েটির সুখ-দুঃখ যে কারও মনে রেখাপাত করতে পারে, যে কারণে তাঁর হাসি বা কান্না দুয়েরই অর্থমূল্য ছিল। নির্মাতারা ছবিতে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করে নিশ্চিত থাকতে পারতেন। তাইতো বলা যায় কবরী হয়ে উঠেছিলেন শাশ্বত বাঙালি নারীর এক মূর্ত প্রতীক, যাঁর চোখ, মুখ, চুলের ছাঁট ছিল আবহমান নারী সৌন্দর্যের প্রতীক। 

বাংলা সিনেমার ইতিহাসে কবরীর আবির্ভাব যেন নতুন একটি যুগের শুরু। ষাটের দশকের মাঝামাঝি যখন বাংলা সিনেমা আস্তে আস্তে শিল্পমানে উন্নত হতে শুরু করেছে, কবরী এসেই যেন সেই গতি বাড়িয়ে দিলেন। তাঁর নিষ্পাপ হাসি, সহজ অভিনয় আর আত্মিক সংলাপ প্রতিভা দর্শকের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

তিনি যে কেবল সৌন্দর্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করতেন তা নয়; বরং তাঁর অভিনয়ের গভীরতা, চরিত্রের সঙ্গে একাত্মতা এবং নিপুণ সংবেদনশীলতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।

তাঁর অভিনীত ‘সুতরাং’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘বাহানা’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, কিংবা ‘সারেং বউ’ প্রতিটিই যেন একেকটি কালজয়ী চিত্ররূপ। একজন কবরীকে বুঝতে গেলে শুধু চলচ্চিত্র দিয়ে বিচার করা যায় না। তাঁকে বুঝতে হয় তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা, সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা দিয়ে। কবরী ছিলেন সেই বিরল শিল্পীদের একজন, যিনি নিজেকে শুধু নায়িকা হিসেবে ভাবেননি; বরং দেশের জন্য, সমাজ ও মানুষের জন্য কাজ করেছেন সবসময়। 

কবরী পর্দায় যেমন ছিলেন শক্তিশালী নারী চরিত্রের প্রতিভূ, তেমনি বাস্তব জীবনেও ছিলেন স্পষ্টবাদী, প্রতিবাদী এবং নিজের চিন্তায় অটুট।

যাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নারীর আত্মমর্যাদা গড়ে উঠেছিল, যিনি সহজ অথচ অনবদ্য অভিনয়ে জীবন্ত করে তুলতেন প্রতিটি চরিত্র, যিনি পর্দায় ছিলেন প্রেয়সী, মা, সংগ্রামী, বোন কিংবা প্রতিবাদী নারী– তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করি প্রতিনিয়ত। আজ এ বরেণ্য অভিনেত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী। নন্দনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কবর চলচ চ ত র চলচ চ ত র পর দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা

বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।

এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।

সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’

প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’

রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
  • প্রথম আলোর সাংবাদিককে বৈষম্যবিরোধী নেতার হুমকি, থানায় জিডি
  • গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধে সংঘর্ষ, হাতুড়িপেটায় একজন নিহত
  • সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • একাধিক সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • নবীপ্রেমে সাহাবিদের বিস্ময়কর উপমা