ব্রাজিল, রিয়াল মাদ্রিদ, আনচেলত্তি ও ক্লপ—কে কার
Published: 18th, April 2025 GMT
কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল কোচ হওয়ার কথা ছিল গত বছর কোপা আমেরিকার আগে। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল, কিন্তু হঠাৎই বদলে যায় দৃশ্যপট। আনচেলত্তি ব্রাজিলে যাওয়ার বদলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেন রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে। গত মৌসুমে রিয়ালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা জয়ের পর আনচেলত্তির রিয়ালে থাকার সিদ্ধান্তকে যথার্থ বলেই মনে হয়েছে।
চলতি মৌসুমে বদলে গেছে দৃশ্যপট। গত মৌসুমের পারফরম্যান্স এবার আর ফেরাতে পারেনি রিয়াল। এমনকি কিলিয়ান এমবাপ্পে এসে রিয়ালের দলীয় পারফরম্যান্সে অবদান রাখতে পেরেছেন সামান্যই। বিশেষ করে টনি ক্রুসের মতো মিডফিল্ডারের বিদায়ের ঘাটতি আক্রমণভাগে সময়ের চার অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে রেখেও ঘোচাতে পারেননি ইতালিয়ান এই কোচ।
এসব কারণে চলতি মৌসুমের মাঝামাঝি সময় থেকেই আনচেলত্তির বিদায়ের আলোচনাও সামনে আসে। সেই আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে গত মাসে দরিভাল জুনিয়র ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর। এরপর আবারও ব্রাজিলের সঙ্গে জড়িয়ে সামনে আসে আনচেলত্তির নাম।
তবে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে রিয়ালের বিদায়ের পর আনচেলত্তির মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলে যাওয়ার গুঞ্জন আরও তীব্র হয়েছে। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগ ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) এক কর্মকর্তা নাকি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাজারে জোর গুঞ্জন, আনচেলত্তিকে বিদায় দিতে রিয়াল নাকি মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না।
বার্সেলোনার বিপক্ষে কোপা দেল রের ফাইনালের পরই নাকি বর্ষীয়ান একই কোচকে বিদায় জানিয়ে দিতে পারে রিয়াল। তারপর আনচেলত্তি নাকি যোগ দেবেন ব্রাজিল শিবিরে। ভিন্ন খবরও অবশ্য আছে। একাধিক ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আনচেলত্তি নাকি এখনই রিয়াল ছাড়তে চান না।
আরও পড়ুনবরখাস্ত হলে আনচেলত্তি ধন্যবাদই দেবেন রিয়ালকে১৭ এপ্রিল ২০২৫এটুকু পর্যন্ত গল্পটা পরিচিতই। এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। এমনকি আনচেলত্তির বিদায়ের পর জাবি আলোনসোর রিয়ালে কোচ হওয়ার গুঞ্জনও চাউর আছে দলবদলের বাজারে। কিন্তু আচমকাই এই গল্পে ইয়ুর্গেন ক্লপকে উড়িয়ে আনা হয়েছে। গত মৌসুমে লিভারপুল ছাড়া এ জার্মান কোচ নাকি আবার কোচিংয়ে ফিরতে চান। আর সে ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দ ব্রাজিল ও রিয়াল। অর্থাৎ আনচেলত্তির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুই দলকেই পাখির চোখ করেছেন ক্লপ।
আর্সেনালের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার রাতে ডাগ আউটে বসে ওপরে তাকিয়ে কি দেখছিলেন রিয়াল কোচ আনচেলত্তি। ভাগ্যের সাহায্য চেয়েছিলেন বুঝি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য় র পর গত ম স হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করণীয়
জীবন সুস্থ রাখার জন্য চাই সুস্থ ফুসফুস, সুস্থ নিঃশ্বাস আর বিশুদ্ধ বাতাস। ফুসফুসের যত্নের শুরু মাতৃজঠরে থাকার সময় থেকেই। গর্ভাবস্থায় মায়ের অপুষ্টি, বিভিন্ন সংক্রামক রোগের সংক্রমণ, সময়ের আগে অপরিণত অবস্থায় স্বল্প ওজনে জন্ম নেওয়া শিশুর ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। আবার জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ পান নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ কমায়। এ কারণে হবু মা এবং নতুন মায়ের যত্ন শিশুর সুস্থ ফুসফুসের পূর্বশর্ত। অন্যদিকে ধূমপায়ী বাবা শুধু তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্যই নয়, এমনকি যে শিশুটি এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি, তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। ধূমপায়ী মায়েদের জন্য এ কথা আরও বেশি সত্য।
ফুসফুস বিভিন্ন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার একটি প্রধান অঙ্গ। করোনা মহামারি আমাদের এ সত্য আরও ভালোভাবে বুঝিয়েছে। পুরো পৃথিবী ছোট্ট করোনাভাইরাসের কাছে অসহায় হয়েছিল। একইভাবে নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা এমনকি বিভিন্ন ছত্রাকজনিত রোগেরও আকর এই ফুসফুস। অথচ সামান্য স্বাস্থ্যবিধি, যেমন– নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার ইত্যাদির মাধ্যমে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বর্তমান সময়ে পরিবেশদূষণ ও বায়ুদূষণ একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। বায়ুদূষণের সরাসরি আঘাত হয় ফুসফুসে। বায়ুদূষণের জন্য অ্যাজমা, সিওপিডিসহ বিভিন্ন রোগ ফুসফুসের শ্বাসনালির বাধাজনিত কারণে সৃষ্টি। সজীব নির্মল বায়ু নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রচেষ্টা ফুসফুসের যত্নের একটি অংশ।
জীবিকার প্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন ধরনের পেশা বেছে নিই। তার মধ্যে এমন কিছু পেশা আছে, যা ফুসফুসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন– পাথরভাঙা, জাহাজভাঙা, ওয়েলডিং, আঁশ ও তুষজাতীয় উপাদানের সংস্পর্শে থাকা ইত্যাদি। এ পেশার কারণে তৈরি ছোট ছোট ধূলিকণা বা সূক্ষ্মতন্তু আমাদের ফুসফুসে আটকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ কাজের সময় ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করলে এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সে সম্পর্কে আমরা মোটেও সচেতন নই। তাই ‘অকুপেশনাল হেলথ’ বা জীবিকা-সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।
ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপে সম্মিলিতভাবে সবাই উপকৃত হতে পারে। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ফুসফুসের তথা সঠিক স্বাস্থ্যরক্ষায় আরও মনোযোগী হতে হবে। শুধু চিকিৎসা নয়, রোগ প্রতিরোধে উদ্যোগী হওয়ার এখনই সময়। করোনা মহামারি আমাদের সে শিক্ষাটাই দিয়েছে।
লেখক: চিকিৎসক, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ , বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।