কার্লো আনচেলত্তির ব্রাজিল কোচ হওয়ার কথা ছিল গত বছর কোপা আমেরিকার আগে। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল, কিন্তু হঠাৎই বদলে যায় দৃশ্যপট। আনচেলত্তি ব্রাজিলে যাওয়ার বদলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেন রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে। গত মৌসুমে রিয়ালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা জয়ের পর আনচেলত্তির রিয়ালে থাকার সিদ্ধান্তকে যথার্থ বলেই মনে হয়েছে।

চলতি মৌসুমে বদলে গেছে দৃশ্যপট। গত মৌসুমের পারফরম্যান্স এবার আর ফেরাতে পারেনি রিয়াল। এমনকি কিলিয়ান এমবাপ্পে এসে রিয়ালের দলীয় পারফরম্যান্সে অবদান রাখতে পেরেছেন সামান্যই। বিশেষ করে টনি ক্রুসের মতো মিডফিল্ডারের বিদায়ের ঘাটতি আক্রমণভাগে সময়ের চার অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে রেখেও ঘোচাতে পারেননি ইতালিয়ান এই কোচ।

এসব কারণে চলতি মৌসুমের মাঝামাঝি সময় থেকেই আনচেলত্তির বিদায়ের আলোচনাও সামনে আসে। সেই আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে গত মাসে দরিভাল জুনিয়র ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর। এরপর আবারও ব্রাজিলের সঙ্গে জড়িয়ে সামনে আসে আনচেলত্তির নাম।

তবে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে রিয়ালের বিদায়ের পর আনচেলত্তির মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলে যাওয়ার গুঞ্জন আরও তীব্র হয়েছে। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগ ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) এক কর্মকর্তা নাকি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাজারে জোর গুঞ্জন, আনচেলত্তিকে বিদায় দিতে রিয়াল নাকি মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না।

বার্সেলোনার বিপক্ষে কোপা দেল রের ফাইনালের পরই নাকি বর্ষীয়ান একই কোচকে বিদায় জানিয়ে দিতে পারে রিয়াল। তারপর আনচেলত্তি নাকি যোগ দেবেন ব্রাজিল শিবিরে। ভিন্ন খবরও অবশ্য আছে। একাধিক ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আনচেলত্তি নাকি এখনই রিয়াল ছাড়তে চান না।

আরও পড়ুনবরখাস্ত হলে আনচেলত্তি ধন্যবাদই দেবেন রিয়ালকে১৭ এপ্রিল ২০২৫

এটুকু পর্যন্ত গল্পটা পরিচিতই। এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। এমনকি আনচেলত্তির বিদায়ের পর জাবি আলোনসোর রিয়ালে কোচ হওয়ার গুঞ্জনও চাউর আছে দলবদলের বাজারে। কিন্তু আচমকাই এই গল্পে ইয়ুর্গেন ক্লপকে উড়িয়ে আনা হয়েছে। গত মৌসুমে লিভারপুল ছাড়া এ জার্মান কোচ নাকি আবার কোচিংয়ে ফিরতে চান। আর সে ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দ ব্রাজিল ও রিয়াল। অর্থাৎ আনচেলত্তির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুই দলকেই পাখির চোখ করেছেন ক্লপ।

আর্সেনালের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার রাতে ডাগ আউটে বসে ওপরে তাকিয়ে কি দেখছিলেন রিয়াল কোচ আনচেলত্তি। ভাগ্যের সাহায্য চেয়েছিলেন বুঝি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য় র পর গত ম স হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 

বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না।  মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন  করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও  এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?

ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো।  বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে। 

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার ‍বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ

রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা 

রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে। 
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। 

১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত। 

জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 

বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই। 

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।  

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের কাজ কি শুধু ভাইভা নেওয়া
  • কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীতে বিদ্বেষ কেন
  • চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি দাঙ্গা–ফ্যাসাদকেই নীতি হিসেবে নিয়েছেন
  • ওভালজয়ী সিরাজই আগস্টের সেরা ক্রিকেটার
  • সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা