বয়স একসময় প্রবীণে নিয়ে যায় মানুষকে। সেই প্রবীণ মানেই কি সমাজে অবহেলিত, মূল্যহীন? কেনই বা নিজেকে মনে করেন এমন? আবার অন্যদিকে দেখা যায়, প্রবীণদের এড়িয়ে চলতে চায় নবীনরা। অনেক সময় তাদের কথা বা পরিকল্পনাকে অবমূল্যায়ন করার প্রবণতা দেখা যায়। প্রকাশ পায়, তারা যেন কিছুই বোঝেন না বা কিছুই জানেন না! অথচ তারা সারাজীবনের অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করে একটা বাস্তবতায় এসে দাঁড়ায়। তাতে আবেগের চেয়ে বিবেকই বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। আমাদের সমাজে সেই প্রবীণরা অসহায়ের মতো নীরবে অবস্থান করেন। তারা নিজেরা সরে আসেন নবীনের আসর থেকে। তাদের জন্য আছে কি তেমন আয়োজন? না, নেই।
তাই তো নিজ থেকে বসার জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের প্রবীণরা। জীবন নিয়ে নতুন ভাবনার দ্বার খুলে দেয় তাদের সংগঠন ‘বেলা শেষের যাত্রী’। জীবনের পড়ন্ত বেলায় নিজেরা মিলিত হয়ে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার এক অপরিসীম ভ্রাতৃত্ববোধের দৃষ্টান্ত দেখা গেল এ প্রবীণ-হিতৈষী সংগঠনে।
বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বিআরডিবির উপপরিচালকের পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর অনুভব করতে থাকেন নবীন সমাজে তিনি যেন আলগা আলগা; তখন একাকিত্বের ভাবনাটাও সামনে আসে তাঁর। সে কারণে নিজেদের জন্য কিছু করতে উদ্যোগী হয়ে চৈতন্য বাজারে একটা ঘর নেন। তাঁর বয়সীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংযোগ ঘটাতে থাকেন। ধীরে ধীরে এর সুফল পেতে থাকেন। এখন বিকেল হতেই বাড়তে থাকে বয়সীর আগমন। হাসিঠাট্টা, গল্পগুজব, ভালো লাগা-মন্দ লাগা শেয়ার করা, পত্রিকা পড়াসহ আড্ডার আয়োজন বেশ জমে ওঠে নিত্য। কখনও চানাচুর ঝাল, মুড়িমাখার মতো মুখরোচক খাবারের আয়োজন হয়; কখনও বা চায়ের কাপের চুমুকে চুমুকে জমে ওঠে গল্পের আসর। জমে থাকা কথা, ভাবনারা যেন ডানা পেয়ে বসে। উৎসাহী বা কৌতূহলী যারা শুনেছেন তারা কখনও-সখনও আসেন। কুশল বিনিময়, ভাব বিনিময় করেন তাদের সঙ্গে। নবীনরাও উঁকি মেরে উপভোগ করেন কখনও কখনও। এ সংগঠনের উদ্যোক্তা বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এ আয়োজনে একাকিত্ব আর অবহেলা যেন দূরে সরে যায়। বেঁচে থাকার জন্য পাই নবউদ্যম। মনে হয়, আছি তো আমরাও। আনন্দ পাই, মনে বল পাই, ভালো লাগা আসে বুকের ভেতর।’ তারা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন, এই প্রবীণরা সমাজে যা দেওয়ার দিয়েছেন ও দিচ্ছেন; এখনও তাদের বেলা শেষ হয়নি; তারা বেলা শেষের যাত্রী। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব ণ
এছাড়াও পড়ুন:
গান নিয়েই আমার সব ভাবনা
কর্নিয়া। তারকা কণ্ঠশিল্পী। অনলাইনে প্রকাশ পাচ্ছে বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া তাঁর দ্বৈত গান ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। এ আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে–
‘ভাঙা ঘর’ ও ‘আদর’-এর পর প্রকাশ পাচ্ছে ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’। একনাগাড়ে দ্বৈত গান গেয়ে যাচ্ছেন, কারণ কী?
শ্রোতাদের চাওয়া আর নিজের ভালো লাগা থেকেই দ্বৈত গান গাওয়া, এর বাইরে আলাদা কোনো কারণ নেই। কারণ, সব সময় ভাবনায় এটাই থাকে, যে কাজটি করছি, তা শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ করবে কিনা। সেটি একক, না দ্বৈত গান– তা নিয়ে খুব একটা ভাবি না। তা ছাড়া রুবেল খন্দকারের সঙ্গে গাওয়া ‘ভাঙা ঘর’ ও অশোক সিংয়ের সঙ্গে গাওয়া ‘আদর’ গান দুটি যেমন ভিন্ন ধরনের, তেমনি বেলাল খানের সঙ্গে গাওয়া ‘তুমি ছাড়া নেই আলো’ অনেকটা আলাদা। আসল কথা হলো, যা কিছু করি, তার পেছনে শ্রোতার ভালো লাগা-মন্দ লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়।
দ্বৈত গানের সহশিল্পী হিসেবে নতুনদের প্রাধান্য দেওয়ার কারণ?
সহশিল্পীর কণ্ঠ ও গায়কি যদি শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার মতো হয়, তাহলে সে তরুণ, নাকি তারকা– তা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। এমন তো নয় যে, নতুন শিল্পীরা ভালো গাইতে পারে না। তা ছাড়া তারকা শিল্পী ছাড়া দ্বৈত গান গাইব না– এই কথাও কখনও বলিনি। তাই দ্বৈত গানে তারকাদের পাশাপাশি নতুনদের সহশিল্পী হিসেবে বেছে নিতে কখনও আপত্তি করিনি।
প্রতিটি আয়োজনে নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার যে চেষ্টা, তা কি ভার্সেটাইল শিল্পী প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য?
হ্যাঁ, শুরু থেকেই ভার্সেটাইল শিল্পী হিসেবে পরিচিতি গড়ে তুলতে চেয়েছি। এ কারণে কখনও টেকনো, কখনও হার্ডরক, আবার কখনও ফোক ফিউশনের মতো মেলোডি গান কণ্ঠে তুলেছি। গায়কির মধ্য দিয়ে নিজেকে বারবার ভাঙার চেষ্টা করছি। সব সময়ই নিরীক্ষাধর্মী গান করতে ভালো লাগে। একই ধরনের কাজ বারবার করতে চাই না বলেই নানা ধরনের গান করছি। নিজেকে ভেঙে সব সময়ই নতুনভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা জারি রাখছি।
প্রযোজক হিসেবে নিজের চ্যানেলের জন্য নতুন কী আয়োজন করছেন?
আয়োজন থেমে নেই। তবে কবে নতুন গান প্রকাশ করব– তা এখনই বলতে পারছি না। কারণ একটাই, অন্যান্য কাজের মতো গান তো ঘড়ি ধরে কিংবা সময় বেঁধে তৈরি করা যায় না। একেকটি গানের পেছনে অনেক সময় দিতে হয়। কোনো কোনো গানের কথা-সুর-সংগীতের কাটাছেঁড়া চলে দিনের পর দিন। এরপর যখন তা সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে হয়, তাখনই প্রকাশ করি।
গান গাওয়ার পাশাপাশি মডেলিং বা অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?
সত্যি এটাই, গান নিয়েই আমার সব ভাবনা। তারপরও অনেকের অনুরোধে কয়েকটি পত্রিকার ফ্যাশন পাতার জন্য মডেল হিসেবে কাজ করেছি। তবে মডেল হব– এমন ইচ্ছা নিয়ে কাজ করিনি। অভিনয় নিয়েও কিছু ভাবি না। অন্য কোনো পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না।