আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ শনিবার ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে মিছিলটি শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি না করে, রাজনীতির নামে গণহত্যা চালিয়েছে। শুধু যে গণহত্যা চালিয়েছে তা–ই নয়, তারা এই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বর্গা দিয়েছিল। তাদের আর এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকে বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে অথবা গণভোটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দিল্লির স্বার্থ বাস্তবায়ন করে গিয়েছে। যখনই কেউ প্রতিবাদ করেছেন, তাঁকে আয়নাঘরে গুম করা হয়েছে। আমার ভাইদের তুলে নিয়ে জঙ্গি তকমা দিয়েছে। এরপরে জুলাইয়ে অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলে দেশব্যাপী গণহত্যা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ শুধু গণহত্যা চালায়নি, তারা এমন কোনো অপরাধ নেই যা উৎসাহ নিয়ে করেনি। এই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে আমাদের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো.

ফাহিম রেজা বলেন, একাত্তরে শেখ মুজিব ক্ষমতায় বসে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করেছে। এরপরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নির্বাচনব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে। একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে যে আচরণ থাকা উচিত, তাদের মধ্যে ১৫ বছরেও তা দেখা যায়নি। যে আওয়ামী লীগ রাজনীতির নামে গণহত্যা চালিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সাবেক সমন্বয়ক আকিল বিন তালেব বলেন, ‘যদি ন্যায়বিচার বলে কিছু থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরাপদে থাকতে হলে জনগণের কাতারে নেমে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে কোনো আপস করা হবে না।’

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গণ–অভ্যুত্থান মঞ্চের সংগঠক ইমরান হাসান। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাউদ্দিন আম্মার। কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণহত য র জন ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কমিটি নেই, সবাই নেতা

কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর। 
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি। 
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। 
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। 
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ। 
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব। 
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি। 
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা