নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ইসলামবিরোধী, দাবি দাওয়াহ সার্কেলের
Published: 20th, April 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশমালা অবাস্তব, ইসলামবিরোধী এবং উসকানীমূলক আখ্যা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি দাওয়াহ সার্কেল’।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে এ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাবি দাওয়াহ সার্কেল গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে যে, সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১৫ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। এর খসড়া প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল পেইজ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুপারিশগুলোর বেশ কয়েকটি স্পষ্টভাবে ইসলামী শরিয়াহ এবং দেশের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের পরিপন্থি।
আরো পড়ুন:
চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো: ঢাবি উপাচার্য
ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিশেষ করে মুসলিম পারিবারিক আইনের সংস্কারের নামে যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো দেশের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, পারিবারিক কাঠামো এবং সামাজিক ভারসাম্যের ওপর গুরুতর হুমকি স্বরূপ। ইসলামী পারিবারিক আইন শত শত ধরে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে।
নারীর জন্য মোহরানা, ভরণপোষণ, নিরাপত্তা ও সম্মান প্রদান ইসলামে পুরুষের ওপর কর্তব্য হিসেবে আরোপিত, যা নারী-পুরুষের স্বাভাবিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলে। অথচ প্রস্তাবিত সুপারিশে উত্তরাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পূর্ণ সমতার দাবি করা হয়েছে, যা ইসলামী শরিয়াহর সুস্পষ্ট বিরোধী।
বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি নারী কমিশনের প্রস্তাবিত পাঁচটি সুপারিশকে স্পষ্ট ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করেছে।
এগুলো হলো- মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে নারী-পুরুষকে সমান সম্পদ প্রদান (পৃষ্ঠা ২৫); সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন (পৃষ্ঠা ৯); যার মাধ্যমে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সবাইকে 'আইনগতভাবে ধর্মত্যাগে' উৎসাহিত করা হবে এবং পরে তা বাধ্যতামূলক করার রূপরেখা রয়েছে; বিবাহসহ পারিবারিক বিষয়ে জাতিসংঘের গৃহীত সিডও সনদের বাস্তবায়ন, যা কার্যত ইসলামী মূল্যবোধ পরিত্যাগ করে পশ্চিমা আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান (পৃষ্ঠা ৯); পারিবারিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে এক ও অভিন্নভাবে দেখার প্রস্তাব (পৃষ্ঠা ৯); পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। দাবিগুলো হলো- আমরা মুসলিম পারিবারিক আইনে যেকোনো ধরনের সংশোধন বা বিকৃতির ঘোরতর বিরোধিতা করছি; আমরা নারী অধিকারের নিশ্চয়তা চাই কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে, বিদেশি এনজিও বা চাপিয়ে দেওয়া পশ্চিমা থিওরির ভিত্তিতে নয়; ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন এই নারী অধিকার সংস্কার প্রস্তাবনা কমিটি বাতিল চাই; আমরা সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে সম্মান করেন এবং ইসলামবিরোধী কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন না করেন।
দেশের সচেতন নারীদের এসব প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে সঃগঠনটি জানায়, আমরা এই সুপারিশগুলোর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি- ইসলামী শরিয়াহবিরোধী কোনো আইন যেন প্রণীত বা বাস্তবায়িত না হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র ব র ক আইন ইসল মব র ধ র প রস ত ব স গঠনট ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির জাতীয় ছাত্রশক্তির কমিটি ঘোষণা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জাহিদ–বাকের
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রে সভাপতি হয়েছেন জাহিদ আহসান, সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরীকে সভাপতি ও আল আমিন সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার রাত ১০টায় এই দুই কমিটি ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) থেকে নাম বদলে জাতীয় ছাত্রশক্তি হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় সংগঠনটির চার সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলো। আর সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি তিন সদস্যের।
জাতীয় ছাত্রশক্তির নতুন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদ আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদার—দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। জাহিদ এর আগে বাগছাসের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আর বাকের সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চার সদস্যের আংশিক কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন দুজন। সাংগঠনিক সম্পাদক (উত্তরাঞ্চল) পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু তৌহিদ মো. সিয়াম আর সাংগঠনিক সম্পাদক (দক্ষিণাঞ্চল) করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহির আলমকে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশিত হবে।
ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আল আমিন সরকারও বাগছাসের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। এই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে মো. সাইফুল্লাহকে। তাঁদেরও সাত কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হয়েছে।
তাহমিদ আল মুদ্দাসসির