নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশমালা অবাস্তব, ইসলামবিরোধী এবং উসকানীমূলক আখ্যা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি দাওয়াহ সার্কেল’।

রবিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে এ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাবি দাওয়াহ সার্কেল গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে যে, সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১৫ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। এর খসড়া প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল পেইজ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুপারিশগুলোর বেশ কয়েকটি স্পষ্টভাবে ইসলামী শরিয়াহ এবং দেশের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের পরিপন্থি।

আরো পড়ুন:

চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো: ঢাবি উপাচার্য

ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিশেষ করে মুসলিম পারিবারিক আইনের সংস্কারের নামে যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো দেশের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, পারিবারিক কাঠামো এবং সামাজিক ভারসাম্যের ওপর গুরুতর হুমকি স্বরূপ। ইসলামী পারিবারিক আইন শত শত ধরে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে।

নারীর জন্য মোহরানা, ভরণপোষণ, নিরাপত্তা ও সম্মান প্রদান ইসলামে পুরুষের ওপর কর্তব্য হিসেবে আরোপিত, যা নারী-পুরুষের স্বাভাবিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলে। অথচ প্রস্তাবিত সুপারিশে উত্তরাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পূর্ণ সমতার দাবি করা হয়েছে, যা ইসলামী শরিয়াহর সুস্পষ্ট বিরোধী।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি নারী কমিশনের প্রস্তাবিত পাঁচটি সুপারিশকে স্পষ্ট ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করেছে।

এগুলো হলো- মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে নারী-পুরুষকে সমান সম্পদ প্রদান (পৃষ্ঠা ২৫); সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন (পৃষ্ঠা ৯); যার মাধ্যমে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সবাইকে 'আইনগতভাবে ধর্মত্যাগে' উৎসাহিত করা হবে এবং পরে তা বাধ্যতামূলক করার রূপরেখা রয়েছে; বিবাহসহ পারিবারিক বিষয়ে জাতিসংঘের গৃহীত সিডও সনদের বাস্তবায়ন, যা কার্যত ইসলামী মূল্যবোধ পরিত্যাগ করে পশ্চিমা আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান (পৃষ্ঠা ৯); পারিবারিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে এক ও অভিন্নভাবে দেখার প্রস্তাব (পৃষ্ঠা ৯); পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। দাবিগুলো হলো- আমরা মুসলিম পারিবারিক আইনে যেকোনো ধরনের সংশোধন বা বিকৃতির ঘোরতর বিরোধিতা করছি; আমরা নারী অধিকারের নিশ্চয়তা চাই কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে, বিদেশি এনজিও বা চাপিয়ে দেওয়া পশ্চিমা থিওরির ভিত্তিতে নয়; ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন এই নারী অধিকার সংস্কার প্রস্তাবনা কমিটি বাতিল চাই; আমরা সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে সম্মান করেন এবং ইসলামবিরোধী কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন না করেন।

দেশের সচেতন নারীদের এসব প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে সঃগঠনটি জানায়, আমরা এই সুপারিশগুলোর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি- ইসলামী শরিয়াহবিরোধী কোনো আইন যেন প্রণীত বা বাস্তবায়িত না হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র ব র ক আইন ইসল মব র ধ র প রস ত ব স গঠনট ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত

ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।

আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।

সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত