খাগড়াছড়িতে এবার দুই টেকনিশিয়ানকে অপহরণ
Published: 20th, April 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের চার দিনের মাথায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি রবির দুই টেকনিশিয়ানকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার মানিকছড়ি উপজেলা সদরের ময়ূরখীল এলাকায় রবির টাওয়ার মেরামতকালে তাদের অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রোববার মানিকছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা হলেন ইসমাইল হোসেন ও আব্রে মারমা।
রবির মানিকছড়ির টাওয়ারগুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা মাঠকর্মী মংথুই মারমা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়ূরখীল এলাকার অচল টাওয়ার মেরামতের কাজ চলছিল। দুপুর ১টার দিকে পাশের গচ্ছাবিল এলাকা থেকে ফিরে মেরামতের কাজে নিয়োজিত ইসমাইল ও আব্রেকে দেখতে পাননি মংথুই। মোবাইল ফোনে কল করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন মংথুই। মানিকছড়ি থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, অস্ত্রধারীরা দুই টেকনিশিয়ানকে টাওয়ার থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গেছে।
এর আগে ১৬ এপ্রিল চবির পাঁচ আদিবাসী শিক্ষার্থী খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামে ফেরার পথে জেলা সদরের গিরিফুল এলাকায় তাদের বহনকারী অটোরিকশা আটকায় দুর্বৃত্তরা। এর পর অটোরিকশাচালক ও পাঁচ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় তারা। পরে অপহরণকারীরা চালককে ছেড়ে দিলেও শিক্ষার্থীদের খোঁজ পাঁচ দিনেও মেলেনি। ওই শিক্ষার্থীরা হলেন– মৈত্রীময় চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, দিব্যি চাকমা, রিশন চাকমা এবং লংঙি ম্রো। তারা চবির বিভিন্ন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের মুক্তি দাবিতে আজ ‘আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ ব্যানারে খাগড়াছড়ি শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। কর্মসূচিতে একই সঙ্গে রাঙামাটির কাউখালীতে এক আদিবাসী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন অভিযোগ করে বিচার দাবি করা হয়। সমাবেশ শেষে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার ও কাউখালীর ঘটনার বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের প্রতিবাদ ও তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে চবি ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে তারা অপহৃত শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক প্রচারণার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রোববার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। তারা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
পাঁচ শিক্ষার্থীকে মুক্তি ও কাউখালীতে নারী ধর্ষণের বিচার দাবিতে রোববার রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। ‘আদিবাসী ছাত্র সমাজ’ ব্যানারে কুমার সমিত রায় জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে আয়োজিত
সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
পাঁচ শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে উদ্ধার করার দাবি জানিয়েছে সাতটি বাম ছাত্র সংগঠনের মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। রোববার জোটের বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
খাগড়াছড়ির এসপি আরেফিন জুয়েল জানান, পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তাদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন রাঙামাটি অফিস, মানিকছড়ি ও চবি প্রতিনিধি)
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণ র ম ন কছড় ল এল ক
এছাড়াও পড়ুন:
কুবির ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আল্টিমেটাম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ফার্মেসি বিভাগে অতিদ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের রোড ম্যাপ দেওয়ার আল্টিমেটাম দেন তারা।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষক সংকট নিরসন চাই’, ‘শিক্ষক সংকট নয়, চাই শিক্ষার অগ্রগতি’, ‘শিক্ষক ছাড়া শিক্ষা অচল’, ‘জটমুক্ত বিভাগ চাই’, ‘শিক্ষক চাই, এখনই চাই’, ‘অনলাইনে নয়, অফলাইনে সব কোর্স চাই’, ‘শিক্ষক বাড়াও, বিভাগ বাঁচাও’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
চাকসু নীতিমালা প্রকাশ হবে বৃহস্পতিবার
যবিপ্রবিতে প্রযুক্তি খাতে নারীদের উন্নয়ন-বিষয়ক সেমিনার
মানববন্ধনে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিয়া ইসলাম তারিন বলেন, “বিভাগের শিক্ষক সংকট নিয়ে আমরা ডিন স্যারের সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তাদের বলতে চাই, আপনারা আমাদের মা বাবা তুল্য, আপনারা এভাবে আমাদের সমস্যা এড়িয়ে যাবেন না। আমরা দ্রুত আমাদের বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ চাই।”
ফার্মেসি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত বলেন, “আমাদের বিভাগে কাগজে কলমে ১২ জন শিক্ষক থাকলেও আছেন মাত্র পাঁচজন। তার মধ্যে একজন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন। সবমিলিয়ে বলা যায় মাত্র চারজন শিক্ষক ক্লাস নেন। যাদের ভাগে প্রত্যেকটা ব্যাচের দুইটা করে কোর্স থাকে। এজন্য আমরা সেশনজটে পড়ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, আমাদের বিভাগে যেন অতিদ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।”
কুবির ফার্মেসি বিভাগে মোট ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে সাতজন শিক্ষা ছুটিতে আছেন। ফলে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক নিয়ে চলছে বিভাগটি।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী