রূপগঞ্জে ব্যবসায়ী মামুন ভুঁইয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান মাহবুবের নাম জড়িয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। 

শনিবার (১৪ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাহবুবুর রহমানকে জড়ানোর চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান এবং প্রতিপক্ষকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ও ‘গডফাদার শামীম ওসমানের ব্যবসায়ী অংশীদার’ বলে আখ্যায়িত করে নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত জায়েদুল ইসলামকে মাহবুবুর রহমানের 'ভাতিজা' বলে চালানো প্রচারণাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেন। তারা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, “জায়েদুল ইসলাম মাহবুবুর রহমানের রক্তের সম্পর্কের কেউ নন।

সে অপরাধ করলে তার শাস্তি তাকেই পেতে হবে। তার ব্যক্তিগত অপরাধের দায় কোনো নেতা নিতে পারে না। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই একটি মহল এই মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, যারা বিএনপির দীর্ঘ ১৭ বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থেকে এখন সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে, তারাই রাজপথের ত্যাগী নেতা মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

তারা বলেন, "যারা আজ মাহবুব ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের গডফাদার শামীম ওসমানকে দেশ থেকে পালাতে সহায়তা করেছেন এবং এখন তার ব্যবসা-বাণিজ্য ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।"

বক্তারা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলে বলেন, "এই রফিকুল ইসলাম গত বছরের জুলাই মাসে সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে তাবলিগ জামাতের কথা বলে রাজপথ থেকে সরে গিয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপির সুদিনে তিনি আবার আবির্ভূত হয়ে রূপগঞ্জে লুটপাট ও নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন।"

কর্মসূচি থেকে রফিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় এবং তাকে আশ্রয়দাতা নেতার বিরুদ্ধেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রাসেল মাহমুদ উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, "আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মতো জগদ্দল পাথরকে দেশ থেকে সরাতে পেরেছি। আপনি তো সেই তুলনায় ছোট একটি টুকরা। অপপ্রচার থেকে সরে না দাঁড়ালে আপনার পিঠের চামড়া তুলে সোজা করতে বাধ্য হব।"

বক্তারা মাহবুবুর রহমানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তুলে ধরে বলেন, তিনি ছাত্রদল থেকে শুরু করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে তৃণমূল থেকে আজকের অবস্থানে এসেছেন। তাকে ষড়যন্ত্র করে থামানো যাবে না।

মানববন্ধন শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়ায় গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১০ জুন) রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে স্থানীয়রা আটক করলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে যান ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম। এ সময় সৃষ্ট সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ব্যবসায়ী মামুন ভুঁইয়া (৩৫) নিহত হন।

এই ঘটনায় মামুনের ভাই ও যুবদল নেতা বাদল ভুঁইয়া বাদী হয়ে জায়েদুলকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রূপগঞ্জে বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং কাজী মনিরুজ্জামানের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। নিহত মামুনের পরিবার দিপু ভূঁইয়ার অনুসারী এবং অভিযুক্ত জায়েদুল কাজী মনিরুজ্জামানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স ঘর ষ স ঘর ষ র পগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ স ব চ ছ স বক হত য ক ণ ড র পগঞ জ ল ইসল ম বক ত র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন