বাংলার এক নামকরা কলেজ। সেখানে আছেন আমাদের ‘মাস্টারমশাই’। নাম মফিজ স্যার। পড়ান রাষ্ট্রবিজ্ঞান। ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের রাজনীতি শেখান। ক্লাসের শুরুতেই বলেন, এই যে তোরা, বই না, আগে বুঝতে হবে ভোটের খেলা। এই দেশে ভোট মানে মাছ-ভাত, চায়ের কাপ আর বগল বাজানো স্লোগান।
ছাত্র– স্যার, বইটা খুলব নাকি?
স্যার– বই খুললে হবে না রে! আগে মানুষের মন খুলতে হয়।
এরপর শুরু হয় স্যারের গল্প। দেখো, ১৯৮২ সালে আমি ইউনিয়ন নেতা ছিলাম। স্লোগান দিতাম– ‘ভাত দে, কাপড় দে, ভোট দে’। তখনকার প্রেমও ছিল রাজনৈতিক। প্রেমিকার নাম ছিল গণতন্ত্রা।
ছাত্র শামীম– স্যার, ও তো সিনেমার নাম।
স্যার– আরে পাগলা, সব সিনেমা কি বাস্তব থেকে আসে?
একদিন কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচন হবে। ছাত্র সংসদ। দুইটা দল। একদিকে ‘চা-চক্র সংঘ’, আরেকদিকে ‘ঝালমুড়ি মঞ্চ’। সবাই হইচই।
রাব্বি দাঁড়ায় নির্বাচন করতে। স্লোগান দেয়– চা-মুড়ি হোক বিনামূল্যে, ভোট দাও রাব্বিকে।
স্যার ডাকে ও রাব্বি, তুই কি সত্যিই নেতাগিরি পারবি? নেতার তো ভাষণ দিতে হয়।
রাব্বি বলে– স্যার, আমি তো ভাইরাল লাইন জানি। যেমন– নেতা হতে হলে নাটক শিখো, মাইক ছাড়া মুখ খুলো না আর মানুষকে ভাবতে শেখাও যে তুমি ছাড়া এ দেশ শেষ!
স্যার খুশি। বলেন– ব্যাটা, তুই তো আমার থেকে বড় লিডার।
ভোটের দিন। চা-চক্র সংঘের ছেলেরা সবাই চায়ের কাপ হাতে। ঝালমুড়ি মঞ্চ ঝালমুড়ি বিলি করে।
মফিজ স্যার প্রিসাইডিং অফিসার। ঘোষণা দিলেন– এই ভোটে কেউ হারবে না। সবাই জিতবে। কারণ একটাই– গণতন্ত্র বাঁচাও।
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস। যেই আপস করে, সেই জেতে।
এরপর ঘোষণা: নতুন কমিটি ‘চা-মুড়ি ঐক্য পরিষদ’। সভাপতি রাব্বি, সম্পাদক শামীম।
সবার স্লোগান– ‘চা-মুড়ির ঐক্য হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক।’
স্যার মাইক্রোফোনে ঘোষণা দিলেন– এই হলো বাস্তব রাজনীতি। যত মিছিল, তত চা, তত মুড়ি আর কথায় কথায় ‘আমি তো ভালা না, ভালা লইয়া থাইকো।’
শেষে ছাত্রদের চিৎকার– বাহ্ স্যার বাহ্! আপনি না থাকলে রাজনীতি শিখতাম কীভাবে।
স্যার হেসে বললেন– বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা!
শেষে ক্যাম্পাসজুড়ে স্লোগান: ‘মুড়ি-চা খাই, নেতা স্যার ভাই!’
শামীম চেঁচিয়ে বলল– স্যার, গণতন্ত্র কোথায়? আপনি তো চা-মুড়ি খেয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন।
স্যার হেসে বললেন– গণতন্ত্র মানেই তো আপস।
সুহৃদ ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ গণতন ত র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
ঈদে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে ফুফাত ভাইয়ের ধর্ষণের পর প্রাণ হারাতে হয়েছে ১০ বছরের শিশুকে। তার মরদেহ পুকুরে ফেলে দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রচার করে ওই ফুফাত ভাই। কিন্তু পুলিশের নিবিড় তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।
ফুফাত ভাই নাজমুস সাকিব ওরফে নয়নকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নয়ন পাশের উপজেলা মনিরামপুরে কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের ইলিয়াস রহমানের ছেলে।
আর নিহত শিশুর নাম সোহানা আক্তার (১০)। সে ঝিকরগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে এবং বায়সা-চাঁদপুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রবিবার (৮ জুন) পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভাতিজার বিরুদ্ধে চাচিকে হত্যার অভিযোগ
মাঠে পড়ে ছিল স্ত্রীর মরদেহ, গাছে ঝুলছিল স্বামীর লাশ
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, ৭ জুন ঈদের দিন সোহানা হাড়িয়া গ্ৰামে ছোট ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তার সাত বছরের ভাই বোনের পিছু পিছু ফুফু বাড়িতে যায়। এদিন দুপুরে নয়ন মামাত ভাইকে মামা বাড়ি দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। এসে দেখে নয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া বোন তন্বী ঘুমিয়ে আছে। আর সোহানা উঠানে দোলনায় খেলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন পুলিশকে জানায়, এ সময় পরিবারের আর কোনো সদস্য বাড়িতে ছিল না। এ সুযোগে তিনি সোহানাকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে সোহানার গলা ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সোহানা শ্বাসরোধে মারা যায়। এরপর নয়ন মৃতদেহটি বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে।
পুলিশ আরো জানায়, নিজের অপরাধ ঢাকতে নয়ন এরপর তার বোন তন্বীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে মিথ্যা গল্প সাজাতে থাকে। সোহানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। পরে তারা দুজন মিলে সোহানার বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানায়।
বিকেলে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
সোহানার বাবা আব্দুল জলিল ঝিকরগাছা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়ের ঠোঁটে জখমের চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখেছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ নয়নকে তাদের বাড়ি থেকে আটক এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে। নয়নকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার রওনক জাহান জানান, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ঢাকা/রিটন/বকুল