গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) জেমিনিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন একটি সুবিধা ‘শিডিউলড অ্যাকশনস’। এই সুবিধার মাধ্যমে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কোনো কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। ব্যবহারকারী অনলাইনে না থাকলেও নির্ধারিত সময় হলে কাজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ‘লেজিট’ নামের একজন প্রযুক্তি বিশ্লেষক প্রথম এ সুবিধাটি শনাক্ত করেন। তিনি জানান, গুগল ইতিমধ্যে জেমিনির ওয়েব সংস্করণে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে।

শিডিউলড অ্যাকশনস কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ব্লিপিংকম্পিউটার’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এটি চ্যাটজিপিটির নির্ধারিত কাজ সম্পাদনের ব্যবস্থার মতোই কাজ করবে। এই সুবিধা চালু হলে ব্যবহারকারী জেমিনিতে নির্দিষ্ট কোনো কাজ ও সময় উল্লেখ করে নির্দেশনা দিতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ে সেই কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে।

ব্যবহারকারীরা চাইলে জেমিনিকে সভার সময় মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে পারবেন। আবার ৩০ মিনিট পরপর বিরতি নেওয়ার রিমাইন্ডার নির্ধারণ করে রাখা যাবে। দৈনন্দিন কাজের তালিকা পরিচালনা, সময় ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা আনতে এই সুবিধা সহায়ক হতে পারে। মূলত এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর একধরনের স্মার্ট ‘টু-ডু’ তালিকা হিসেবে কাজ করবে। ভবিষ্যতে গুগল যদি এই সুবিধাকে ক্যালেন্ডার, ই–মেইল কিংবা অন্যান্য গুগল সেবার সঙ্গে যুক্ত করতে পারে, তাহলে এর কার্যকারিতা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডেস্কটপে সুবিধাটি ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের নোটিফিকেশন–সংক্রান্ত অনুমতি চালু রাখতে হবে। কারণ, নির্ধারিত কাজের সময় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য জেমিনি ডিভাইসে বার্তা পাঠাবে। গুগল জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক পর্যায় শেষে শিডিউলড অ্যাকশনস সুবিধাটি শিগগিরই ধাপে ধাপে ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সূত্র: ব্লিপিংকম্পিউটার ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ধ র ত সময় এই স ব ধ ব যবহ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ