কুয়েটে ৩৭ জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, হলও খুলেছে
Published: 23rd, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ জন শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া আজ বুধবার বিকেলে খুলে দেওয়া হয়েছে ৭টি আবাসিক হল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় আজ এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আজ সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকেল থেকে ছাত্রদের ৬টি ও ছাত্রীদের ১টি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে হল খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও ক্যাম্পাসের সাতটি আবাসিক হলে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের আগের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নিয়েছিলেন তাঁরা।
এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের তালা ভেঙেও হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা।
উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। অনশনে বসা ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।
এদিকে আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে শিক্ষক সমিতি। চাপ দিয়ে উপাচার্যের অপসারণ করা হলে মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপাচার্যের পক্ষে মানববন্ধন করেছে কর্মচারী সমিতি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।