অনলাইনে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এখন ইউটিউব। শুধু বিনোদনই নয়, ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে তারকা বনে যাওয়ার পাশাপাশি আয়ও করছেন অনেকে। নিয়মিত ভিডিও আপলোড (প্রকাশ) করলেও অনেকেই জানেন না ইউটিউবের প্রথম ভিডিও কোনটি, কবে আপলোডে হয়েছে। আজ থেকে ঠিক ২০ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৫ সালের ২৩ এপ্রিল ইউটিউবে প্রথম ভিডিও আপলোড করা হয়। ‘মি অ্যাট দ্য জু’ শিরোনামের ১৯ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের এই ভিডিও আপলোড করেন ইউটিউবের সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি-জার্মান বংশোদ্ভূত জাভেদ করিম।

আরও পড়ুনডেটিং সাইট থেকে যেভাবে আজকের ইউটিউব১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

‘মি অ্যাট দ্য জু’ ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্যান ডিয়েগো চিড়িয়াখানায় দুটি হাতির সামনে দাঁড়িয়ে ধারণ করা হয়েছিল। ভিডিওতে জাভেদ করিমকে হাতিদের সম্পর্কে বলতে দেখা যায়। ইউটিউবের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও হিসেবে পরিচিত ভিডিওটি এখন পর্যন্ত ৩৫ কোটি ৫০ লাখ বারেরও চেয়েও বেশি দেখা হয়েছে।

আরও পড়ুনইউটিউব থেকে অর্থ আয়ের সুযোগ যেসব কারণে বন্ধ হতে পারে১৩ মার্চ ২০২৪

পেপ্যালের তিন সাবেক কর্মী চ্যাড হারলি, স্টিভেন চেন ও জাভেদ করিম ২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউটিউব ডটকমের ডোমেইন নিবন্ধন করেন। এরপর ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরে ইউটিউব আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। ২০০৬ সালের ৯ অক্টোবর ১৬৫ কোটি মার্কিন ডলারে গুগল ইউটিউব কিনে নেয়।

আরও পড়ুনভিডিও নির্মাতাদের সতর্ক করল ইউটিউব, কেন০৭ মার্চ ২০২৫

শিক্ষা, বিনোদন, খেলা, সংবাদ, প্রযুক্তি, সাজসজ্জা, রান্না ও ভ্রমণ থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের ভিডিও রয়েছে ইউটিউবে। বিশ্বজুড়ে ভিডিও দেখা ও সম্প্রচারের ধারণা পাল্টে দেওয়া ইউটিউবে বর্তমানে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার ঘণ্টারও বেশি ভিডিও আপলোড করা হয়।

সূত্র: টেকলুসিভ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ