Prothomalo:
2025-08-01@04:39:25 GMT

জিনদের আবাস

Published: 24th, April 2025 GMT

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) ‘কার’-বিশিষ্ট ভূমিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করছেন। কারণ সেটা জিনদের আবাসস্থল। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘কার’ কি? তিনি বলেন, ঘন ঝাড়-জঙ্গল, গাছপালা ঘেরা নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া জনবসতির শৌচাগার, গোসলখানা, নোংরা ও অপবিত্র স্থান, আবর্জনার স্তূপ এবং কবরস্থানে দুষ্ট জিন-শয়তান বিচরণ করে। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয় শৌচাগারে দুষ্ট জিন-শয়তান উপস্থিত থাকে। তাই তোমরা যখন সেখানে প্রবেশ করবে তখন বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিলান খুবুসি ওয়াল খবাইস।’ অর্থাৎ, আমি আল্লাহর কাছে যাবতীয় দুষ্ট পুরুষ ও নারী জিন ও শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৬)

হাদিস অনুযায়ী শৌচাগার হলো, যেখানে নাপাক থাকে বা শরীর বস্ত্রহীন করতে হয়, সেসব জায়গায় শয়তানের আনাগোনা থাকে। মানুষকে বিবস্ত্র করা শয়তানের অন্যতম একটি কাজ। কারণ আল্লাহর এবং বান্দার মধ্য আবরণ হলো লজ্জা। আদম ও হাওয়া (আ.

) যখন আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছিলেন, প্রথমেই তাদের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খুলে গিয়েছিল।

আরও পড়ুনইবলিস কি জিন নাকি ফেরেশতা১৬ মার্চ ২০২৫

নবীজি (সা.) মাটির গর্তে প্রস্রাব করতে নিষেধ করেছেন। এতে জিনদের বসবাসের স্থান।’ (আবুদাউদ, হাদিস: ২৯)

কবরস্থানে জিনেরা সাধারণত মানুষের মতোই যাতায়াত করে। আবার কখনো অবস্থান করে দীর্ঘদিন। ভালো-মন্দ সব ধরনের—এমনকি সেখানে দুষ্ট প্রকৃতির জিন-শয়তানরাও অবস্থান করে।

একটা ভুল ধারণা লোকসমাজে প্রসিদ্ধ আছে, ‘বদকারদের কবরের আজাবের ভয়ে জিনেরা কবরস্থানে থাকে না।’ অথচ নবীজি বলেছেন, ‘অতঃপর তার জন্য লোহার বিশাল হাতুড়িধারী একজন অন্ধ ও বধির ফেরেশতা নিযুক্ত করা হয়। সেই ফেরেশতা ওই হাতুড়ি দিয়ে অবিশ্বাসীকে এমন জোরে আঘাত করে; যার আওয়াজ মানুষ ও জিন ছাড়া পূর্ব-পশ্চিমের সব সৃষ্টি শুনতে পায়।’ (আবু দাউদ, ৪,৭৫৩)

এ ছাড়া বাজার ও দোকানপাটে দুষ্ট জিন-শয়তানের আনাগোনা বেশি থাকে। আল্লাহর রাসুল (সা.) জানিয়েছেন, ‘বাজারে শয়তান তার যুদ্ধের পতাকা উত্তোলন করে।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫১)

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ন শয়ত ন আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আরাকান আর্মি: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও গুরুতর নিপীড়ন চালাচ্ছে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সোমবার এ কথা বলেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এইচআরডব্লিউ বলেছে, রাখাইনে আরাকান আর্মির দখল করা এলাকাগুলোতে রোহিঙ্গাদের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বাড়িঘর লুটপাট, নির্বিচারে আটক ও খারাপ আচরণ, বাধ্যতামূলক শ্রম এবং জোর করে বাহিনীতে ভর্তি করানোর মতো নানা নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালিয়ে আসছে। জাতিবিদ্বেষের মতো চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধ এরই অংশ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এলেইন পিয়ারসন বলেছেন, ‘রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর যে ধরনের নিপীড়ন চালিয়ে আসছে, আরাকান আর্মিও ঠিক সে রকম দমননীতি অনুসরণ করছে। তাদের উচিত, এই বৈষম্যমূলক ও নিপীড়নমূলক আচরণ বন্ধ করে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা।’

২০২৩ সালের নভেম্বরে নতুন করে সংঘর্ষ শুরুর পর মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কাছ থেকে কিছু এলাকা দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, তখন আরাকান আর্মি সেসব অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়ভিত্তিক শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে রোহিঙ্গারা বলেছে, তাদের জীবন এখনো কঠিন ও শৃঙ্খলিত। আরাকান আর্মি ও তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান বৈষম্যমূলক নীতি-বিধি ও চর্চা অব্যাহত রেখেছে।

‘অনুমতি ছাড়া আমাদের কাজ করা, মাছ ধরা, চাষাবাদ এমনকি চলাচলও নিষেধ ছিল। আমরা খাবারের তীব্র সংকটে ছিলাম। এ সময় অধিকাংশ মানুষ একে অপরের কাছে ভিক্ষা করে বেঁচে ছিলেন।’জুন মাসে বাংলাদেশে আসা ৬২ বছর বয়সী একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী

মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যের বুথিডং উপজেলা থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গত এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে এসব সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

জুন মাসে বাংলাদেশে আসা ৬২ বছর বয়সী একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেছেন, ‘আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে জীবন অসম্ভব রকম কড়াকড়ির মধ্যে ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনুমতি ছাড়া আমাদের কাজ করা, মাছ ধরা, চাষাবাদ এমনকি চলাচলও নিষেধ ছিল। আমরা খাবারের তীব্র সংকটে ছিলাম। এ সময় অধিকাংশ মানুষ একে অপরের কাছে ভিক্ষা করে বেঁচে ছিলেন।’

এইচআরডব্লিউ বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাতের মধ্যে আটকে পড়েছেন রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা। দুই পক্ষই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও বেআইনিভাবে বাহিনীতে ঢোকানোর মতো গুরুতর নির্যাতন চালিয়েছে।

২০২৩ সালের শেষ ভাগ থেকে রাখাইন ও চিন রাজ্যে চার লাখের বেশি মানুষ দেশের মধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর এ সময় প্রায় ২ লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

রোহিঙ্গা গ্রামবাসীরা সংস্থাটিকে বলেছেন, আরাকান আর্মি তাঁদের কৃষিজমি, বাড়িঘর, গবাদিপশু, মাছ ধরার সরঞ্জাম, জ্বালানির কাঠ এমনকি কবরস্থান পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে।

বুথিডংয়ের কিন টং গ্রামের দুই বাসিন্দা বলেন, মে মাসে তাঁদের কবরস্থানটি ধ্বংস করে দেয় আরাকান আর্মি। তাঁদের বলে, এখন থেকে ধানক্ষেতে মরদেহ দাফন করতে হবে।

এইচআরডব্লিউর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করার পর আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও অন্যান্য রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আবারও রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সংঘাতে জড়িয়েছে।

বুথিডংয়ের কিন টং গ্রামের দুই বাসিন্দা বলেন, মে মাসে তাঁদের কবরস্থানটি ধ্বংস করে দেয় আরাকান আর্মি। তাঁদের বলে, এখন থেকে ধানক্ষেতে মরদেহ দাফন করতে হবে।

মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, যুদ্ধ এবং রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের জোর করে বাহিনীতে ভর্তি করানোর ফলে মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যমতে, ২০২৪ সালের মে থেকে এখন পর্যন্ত কক্সবাজারের রোহিঙ্গাশিবিরে নতুন করে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী নিবন্ধিত হয়েছেন। সম্প্রতি আসা রোহিঙ্গারা কোনো সরকারি ত্রাণ বা সহায়তা না পাওয়ার কথা বলেছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ মনে করে, সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। তবে জাতিসংঘ ও উদ্বিগ্ন দেশগুলোর উচিত জোর দিয়ে বলা যে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কোনো পরিবেশ এখন নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মালেগাঁওয়ে কবরস্থানে বিস্ফোরণ মামলায় বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞাসহ সবাই খালাস
  • রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আরাকান আর্মি: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ