মদিনা শহরকে কটাক্ষ: রংপুরে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দুই কিশোরসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 24th, April 2025 GMT
মুসলিমদের পবিত্র ভূমি মদিনা শহরকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় রংপুরে দায়ের করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার তারাগঞ্জ থানায় ছয়জনের নামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ১৯ বছর। বাকি দুজন কিশোর—একজনের বয়স ১৬ ও অন্যজনের ১৭ বছর।
পুলিশ ও মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার হিন্দুধর্মাবলম্বী এক কিশোর মদিনা শহরকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে। ওই ভিডিওতে কিশোরসহ ছয়জন ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন পরিষদে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের বামনদীঘি এলাকায় অবরোধ করে ওই কিশোরদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুনমদিনা শহরকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা২২ ঘণ্টা আগেএ ঘটনার পর লিমন নামের এক যুবক থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। গতকাল সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হিসেবে রেকর্ড করে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ। দিবাগত রাত দুইটার দিকে তারাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কনক রঞ্জনের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ সম্পর্কে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে পোস্টাদাতা কিশোরসহ ছয়জনের নামে মামলা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ত নজনক
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ