ইংরেজি গান গাইতেন জেফার। সে গানের আলাদা শ্রোতা ছিল তাঁর। ছিল আলাদা গণ্ডি। সে সময় সাধারণ দর্শক-শ্রোতার কাছে জেফার বেশি আলোচিত হতেন তাঁর হেয়ারস্টাইল নিয়েই। হুট করে জেফারের মাঝে আমূল পরিবর্তন আসে; যে পরিবর্তন জেফারকে নিয়ে গেছে সাধারণ মানুষের খুব কাছাকাছি। তাই জেফারকে এখন বাংলা গানে নিয়মিত পাওয়া যায়। পাওয়া যায় শোবিজের নানা আয়োজনেও। সব মিলিয়ে জেফার এখন নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে নেই। তিনি এখন গুলশান টু গুলিস্তান সব ধরনের দর্শক-শ্রোতার প্রিয় শিল্পী হয়ে উঠেছেন।
নাচ-গান-অভিনয় ও স্টাইল স্টেটমেন্টে একেবারে আলাদা জেফার রহমান। তিনি যা করেন তা নিয়ে হয় আলোচনা। একশ্রেণির কাছে তিনি ক্রাশ। আরেক শ্রেণি সমালোচনাও করেন বটে। তাতে জেফারের কিছু যায় আসে না। তিনি কেবল তাঁর কাজটা করে যেতে চান। সমালোচনা গায়ে মাখালে নিজের কাজের ব্যাঘাত ঘটবে। সমালোচনা যদি গঠনমূলক হয়, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে জ্বলে ওঠা যায় তাহলে সেসব সমালোচনাকে ‘ওয়েলকাম’ করবেন বলে জানালেন আবেদনময়ী এই গায়িকা। সহজ করে জানিয়ে দিলেন, ট্রলিংয়ে একেবারেই কান পাতেন না তিনি।
সিনেমায় গান, ওটিটিতে অভিনয়
ঈদুল ফিতরের আলোচিত সিনেমা ‘দাগি’। শিহাব শাহিন পরিচালিত এই ছবিতে ‘নিয়ে যাবে কি’ গানটি জেফারের গাওয়া। বাঁধনের কথায় গানটির সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন জেফার। সংগীত পরিচালনা করেছেন মার্ক ডন। গানটিতে দর্শক-সাড়া দারুণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেফার। একই পরিচালকের ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’তেও অনবদ্য এক জেফারকে দেখা গেল। শিহাব শাহীনের এই সিরিজের প্রথম সিজনে দাগি আসামি নাসীর আলী খানের বিপরীতে রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা আকর্ষণ ছড়িয়েছিলেন বৈয়াম পাখি গানে। এবার সিক্যুয়ালে বৈয়াম পাখি ২.
হুট করে বদলে যাওয়া
চুলের বাহারি স্টাইলে জেফার আলোচনায় থাকছেন, তার স্টাইল নিয়ে চর্চা থাকত। হুট করে জেফার সেই স্টাইল বদলে ফেললেন। সাদামাটা বাঙালি মেয়ে হয়ে ধরা দিলেন তিনি। জেফারের এ সাজে প্রথমে সবাই ভিরমি খেয়ে যান। যেনো অপ্রত্যাশিত ছিল। চরিত্রের কারণে পর্দার মানুষরা কত কিছু করে ফেলে। জেফারও দীর্ঘদিনের স্টাইল বদলালেন। সেটি চরকির ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ‘লাস্ট ডিফেন্ডার অব মনোগামী’ সিনেমার কারণে। এর মাধ্যমে ওটিটির সিনেমার অভিনয়ে অভিষেক ঘটছে জেফারের। সিনেমাটি নির্মাণ করছেন প্রখ্যাত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। জেফার বলেন, মনোগামীতে অনেক আগে থেকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। করা হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবে ঘটান মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাই। মনোগামীর চরিত্র হতে সব পরিবর্তন করতে হয়। এ পরিবর্তনটা সবাই ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।’ জেফার আরও বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী, আমার ফ্যামিলি থেকে শুরু করে বাইরের মানুষ—সবাই খুব প্রশংসা করছে। এটি অবশ্য ভালো লাগছে, যেহেতু আমি অভিনেত্রী না। এটি আমার প্রথম কাজ এবং যখন ভালো প্রশংসা পেয়েছি তাহলে পরবর্তী সময়েও করছি।’
পথচলা শুরু যেভাবে
স্কুলে যেতে খুব একটা ইচ্ছে করত না মেয়েটির। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সৃজনশীল কাজে মনোযোগী। ফ্যাশন, মিউজিক নিয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। কৈশোরে মিউজিকটা ভালোই রপ্ত করেছিলেন। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়, শুনে শুনেই গান শিখেছেন তিনি। ইউটিউবে ইংরেজি গান কভার করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। ২০১০ সালে ইংরেজি গান কভার করে বেশ আলোচনায় আসেন। দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করা তাঁর ইংরেজি একক অ্যালবাম রয়েছে। বাংলা গান ‘ঝুমকা’ প্রকাশের পর ব্যাপকভাবে পরিচিতি মেলে তাঁর। ইউনিক কণ্ঠ ও আলাদা ফ্যাশনের কারণে দর্শক তাঁকে ভালোভাবে গ্রহণ করে। শুরু হয় বাংলা গান নিয়ে তাঁর আরও সংযত যাত্রা। প্লেব্যাক করেন ‘ন ডরাই’ সিনেমাতে।
পরিকল্পনা
এ মুহূর্তে জেফার একাধারে কাজ করছেন কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানে ও অভিনয়ে। তাঁর গানের জগৎ যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনই অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তিনি তেমন কিছু চাচ্ছেন। জেফার বলেন, ‘আমি এমন কিছু চরিত্র করতে চাই, যেখানে অভিনয়ের গভীরতা থাকবে। চরিত্রের ভেতরটা ফুটিয়ে তোলা আমার লক্ষ্য।’ ভবিষ্যতে জেফার নিজেকে শুধু সংগীত বা অভিনয়ের গণ্ডিতে আটকে রাখতে চান না। তিনি চাইছেন একটি পূর্ণাঙ্গ বিনোদন মাধ্যমে পরিচয় তৈরি করতে, যেখানে তাঁর প্রতিটি কাজ হবে আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং অর্থবহ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ফ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।