রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটের ফল প্রকাশ
Published: 25th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় 'এ' ইউনিটের ফলাফল আজ শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে। কলা, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা অনুষদভুক্ত ২৭টি বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এই ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত। ভর্তি সংক্রান্ত রাবি ওয়েবসাইট তে লগইন করে ভর্তিচ্ছুরা নিজের ফলাফল দেখতে পারবেন। এজন্য এসএসসি ও এইচসএসসি উভয় পরীক্ষার রোল নম্বর, শিক্ষা বোর্ডের নাম ও পাশের বছর প্রয়োজন হবে। প্রকাশিত ফলাফলে কোনো ভুল-ভ্রান্তি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা সংশোধন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছ।
এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৯৬ হাজার ১৬২ জন। গ্রুপ-১ এর ৪৮ হাজার ৮২ জনের মধ্যে ৪১ হাজার ১১৭ জন এবং গ্রুপ-২ এর ৪৮ হাজার ৮০ জনের মধ্যে ৪১ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। গ্রুপ-১ এ ১৭ হাজার ৭০৩ জন (৪৩.
প্রাথমিক ফলাফলে ন্যূনতম ৪০ নম্বরপ্রাপ্ত ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যারা চারুকলা অনুষদভুক্ত তিনটি বিভাগে (১. চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগ, ২. মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগ, ৩. গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগ) এবং কলা অনুষদভুক্ত সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাদের ব্যাবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ব্যাবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখের মধ্যে অনলাইনে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরম পূরণের ওয়েবলিংক: https://admission.ru.ac.bd/।
উল্লেখ্য যে, এসব বিভাগের ব্যাবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কোনো পরীক্ষার্থীর A ইউনিটভুক্ত অন্যান্য বিভাগে মেধা অনুসারে ভর্তির ক্ষেত্রে বাধা হবে না। সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগের ব্যাবহারিক পরীক্ষা ১১, ১২, ১৩ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। এ দুই বিভাগের ব্যাবহারিক পরীক্ষার বিস্তারিত সময়সূচি ৫ মে ২০২৫ তারিখে জানানো হবে। চারুকলা অনুষদের ব্যাবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষা ১১ মে ২০২৫ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ইংরেজি বিভাগে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ইংরেজি অংশে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে ২টি গ্রুপ থেকে মোট ১৬৬৪ জনের তালিকা প্রকাশ করা হলো। তাদের লিখিত পরীক্ষা আগামী ১১ মে ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ইংরেজি বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত উপর্যুক্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ভর্তিচ্ছুদের বিষয় পছন্দক্রম নিয়ে বিভাগভিত্তিক চূড়ান্ত মেধা তালিকা পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ University of Rajshahi থেকে দেখা যাবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২৫ ত র খ পর ক ষ র থ ইউন ট ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।