রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিউটিফুল বাংলাদেশ রান-২০২৫ ম্যারাথন প্রতিযোগিতা। দেশের সম্ভাবনাময় ট্যুরিজম খাতকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে শুক্রবার সকাল ৬টায় হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজা প্রান্তে এই রান উৎসব শুরু হয়। রান শেষে হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটরে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় এই উৎসব।

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এ খাতের অন্যতম অংশীদার এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)।

আয়োজক সংগঠন এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার বলেন, এটি এটিজেএফবির প্রথম ম্যারথন ইভেন্ট। প্রতিটি রানারের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা অভিভূত। বাংলাদেশের পর্যটনকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে এটিজেএফবি আগামীতে উইন্টার ম্যারাথনের ঘোষণা দিচ্ছে। আশা করছি উইন্টার রানে আপনাদের সবাইকে পাশে পাব।

এ সময় এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব এবং বিউটিফুল বাংলাদেশ রান-২০২৫ এর চিফ কো-অর্ডিনেটর শফিউল্লাহ সুমন বক্তব্য দেন।

রান আয়োজনটির সহযোগিতায় ছিল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, টুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশ, আটাব, টোয়াব, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিঙ্কস একটিভ, ঢাকা ওয়াসা, ফেমাস স্পেশালাইজড হসপিটাল ও ফেমাস ক্রিয়েশন।

বিউটিফুল বাংলাদেশ রান ২০২৫-এ আরো পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স, ভাইয়া গ্রুপ, ইস্টার্ন ব্যাংক, ফিটস এয়ার, বেঙ্গল এয়ার লিফট, শেয়ার ট্রিপ, এয়ার ইন্ডিয়া, আমেরিকান ট্যুরিস্টার, টিপিসি, টাইটান, স্যামসোনাইট, স্কিন পারফিউম, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও এয়ার আস্ট্রা।

রান আয়োজনে ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ডা.

নাসরীন আক্তার শিমু। এছাড়া পেসার হিসেবে ছিলেন শাহরিয়ার মোর্শেদ সিদ্দিকী, জান্নাতুল ফেরদৌস মিতু, ডা. মো. নাঈম হোসাইন খান এবং কে এম ইয়াসির আরাফাত অমি।

রান আয়োজন শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি র‍্যাফেল ড্র'র মাধ্যমে পাঁচজন ভাগ্যবানকে ঢাকা থেকে মিলান, জোহান্সবার্গ, ব্যাংক, মালদ্বীপ এবং কক্সবাজারের রিটার্ন টিকেট দেওয়া হয়।

এ আয়োজনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মাইনুল হাসান, বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলি আব্দুল্লাহ আল হমৌদি, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিনা পি. কাইংলেট, ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফেরনান্দো ডায়াস ফেরেস, থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত পানওয়ামসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশ-বিদেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট কর্মী, ট্রাভেলার ও পেশাদার রানারসহ সাত শতাধিক রানার অংশগ্রহণ করেন।

এবার প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাড়ে সাত কিলোমিটার রান ও দুই কিলোমিটার ফান রান অনুষ্ঠিত হয়।

সাড়ে সাত কিলোমিটার (পুরুষ) ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন এলাহী সরদার, দ্বিতীয় আশরাফুল আলম এবং তৃতীয় হয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন।

সাড়ে সাত কিলোমিটার (নারী) ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন সাদিয়া শাওলিন সিগমা, দ্বিতীয় স্বর্ণা এবং তৃতীয় হয়েছেন ফারজানা।

দুই কিলোমিটার ফান রানের প্রথম হয়েছেন জিসান, দ্বিতীয় অভি ইসলাম এবং তৃতীয় হয়েছেন জহুরুল।

বিউটিফুল বাংলাদেশ রান-২০২৫ আয়োজনের টাইটেল স্পন্সর রিদম গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহাগ হোসেন বলেন, হাতিরঝিলের চারপাশের পরিবেশটা খুব উৎসবমুখর ছিল। এই আয়োজনের সঙ্গে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। বাংলাদেশের পর্যটনের প্রসারে সব ধরনের উদ্যোগে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

বিউটিফুল বাংলাদেশ রানের অনুষ্ঠানের পাওয়ার্ড বাই স্পন্সর করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড (বিটিবি)। আয়োজনের বিষয়ে বিটিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, “আয়োজনটি অত্যন্ত উপভোগ্য ছিল। পর্যটনের প্রসারে এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল দ শ র ন ২০২৫ অন ষ ঠ হয় ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে। 

এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। 

এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব। 

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।

রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”

চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”

গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনগুলোয় প্রথম আলোর জমজমাট আয়োজন
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়