‘নাতনি তো শ্যাষই হইয়্যাই গ্যাছে, অগোর ফাঁসি চাই’
Published: 27th, April 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে শহীদ হন পটুয়াখালীর জসিম হাওলাদার। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন মেয়ে। শনিবার রাতে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ রোববার বাবার কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। দাফন শেষে মেয়েটির দাদা আব্দুস সোবাহান হাওলাদার বিলাপ করে বলেন, ‘আমার নাতনি তো শ্যাষই হইয়্যাই গ্যাছে। যদি অগো উছিলায় (দুই ধর্ষক) আমার নাতনি আত্মহত্যা কইরা থাহে তাইলে আমি অগো ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যায় মেয়েটির মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। পরে স্কুলমাঠে জানাজা শেষে বাবা জসিম হাওলাদারের কবরের পাশেই মেয়েটিকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জসিমের গ্রামের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেছে। মেয়েটির মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। বোনও অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন একটু পর পর। দাদা-দাদি, আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস। স্থানীয়রাও তাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো.
তিনি বলেন, ‘এই দেশে একজন শহীদের মেয়েরও জীবনের নিরাপত্তা নেই। ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রানা হাওলাদার বলেন, ‘ধর্ষকদের কঠিন বিচার চাই। যাতে এ ধরনের জঘন্য কাজ আর কেউ করার সাহস না পায়।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।
মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।
এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।