বিজয়নগরে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ১৩ জনের নামে মামলা
Published: 27th, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অবৈধ মাটির ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে আহত মাইনুদ্দিন বিজয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা, যুবদলের বহিষ্কৃত নেতাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাইনুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা। তাঁর বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামে। তিনি জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে ভাড়া বাসায় থাকেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব পদ থেকে বহিষ্কৃত মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সি (৪০), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম মিয়া (৫৫), কাইয়ুমের তিন ছেলে মো.
মামলার এজাহার, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামিরা কিছুদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে খননযন্ত্র দিয়ে ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিলেন। পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন পুকুর ভরাটসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিলেন। এসব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় আসামিরা সাংবাদিক মাইনুদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনাসহ হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গত শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে ব্যক্তিগত কাজে বিজয়নগর থানার দিকে যাচ্ছিলেন মাইনুদ্দিন। এ সময় বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সামনে মোখলেছুর, কাইয়ুমসহ অন্যরা অতর্কিত সাংবাদিক মাইনুদ্দিনের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন।
আসামিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
আরও পড়ুনবিজয়নগরে অবৈধ মাটিকাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ২৫ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ইন দ দ ন ব জয়নগর উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে কাউকে প্রার্থী দেয়নি বিএনপি, হতাশ রুমিন ফারহানার অনুসারীরা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয়নগর একাংশ) আসনে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এতে হতাশ হয়েছেন এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রুমিন ফারহানার অনুসারী নেতা-কর্মীরা।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। আসনটি জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে রুমিন ফারহানা ছাড়া অন্য কাউকে এখানে মনোনয়ন দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁর অনুসারীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে মাঠে আছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তিনি এলাকায় গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আসছেন। আসনটিতে প্রায় প্রতিবারই ধানের শীষের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তবে ২০০৮ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী আওয়ামী লীগের শরিক দল জাতীয় পার্টির জিয়াউল হক মৃধার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। এখানে জোটের শরিক কাউকে (মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবী) মনোনয়ন দেওয়ার পর রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে জোটের প্রার্থী জামানত হারাবেন। যেমনটি হয়েছিল নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। এখানে ৭০ শতাংশ দলীয় নেতা-কর্মী রুমিন ফারহানার পক্ষে থাকবেন।
জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের জনগণের সঙ্গে ছিলেন, এখনো আছেন। ২০১৭ সাল থেকে এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন। ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া দলের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরুদ্ধে তিনি এলাকায় সমাবেশ করেছেন। এ জন্য তিনি অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিষয়টি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানেন। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, ‘এখানে আমার নাম ঘোষণা না হওয়ায় শত শত অনুসারী কান্নাকাটি করছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে এখনো ভাবিনি। এ ব্যাপারে পরে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রুমিন ফারহানার এক অনুসারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে তাঁকে (রুমিন ফারহানা) ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমরা প্রথমে আন্দোলন করব। প্রয়োজন হলে অন্য চিন্তা করব।’
১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) থেকে রুমিন ফাহানার বাবা ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদ নির্বাচন করেছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের তাহের উদ্দিন ঠাকুর। ‘বিতর্কিত’ ওই নির্বাচনে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে ঢাকা থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯২ হাজার ৮৩৭।