‘হারাদিন থাইক্যাও নাতিরে ডাক্তার দেহাতে পারি নাই’
Published: 27th, April 2025 GMT
‘মোর ৩ বছরের নাতিডার হারা গা (শরীর) খাউজায়। আইছিলাম হাসপাতালে ডাক্তার দেহাইতে। হারাদিন খাড়াইয়া থাইক্যাও ডাক্তার দেহাইতে পারি নাই। এহন চইল্যা যাই’– আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন কাঁঠালিয়া গ্রামের আছিয়া বেগম।
কোমর আর হাঁটুর ব্যথার চিকিৎসার জন্য এসেছেন ঘোপখালী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আশ্রাব আলী। ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার তো দেহাইতে পারি নাই। হারাদিন খাড়াইয়া থাইক্যা আরও কোমর ব্যথা বাড়াইছি। এহন বাড়ি যাইয়া আল্লাডে কমু ক্যা মোগো গরিব বানাইছো।’
আমতলী পৌরসভার বাসুগী গ্রামের গৃহবধূ রুবিনা আক্তার এসেছেন জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ১৩ দিন বয়সী সন্তান ইছাকে নিয়ে। দু’দিন ঘুরেও ডাক্তার দেখাতে পারেননি।
আমতলী উপজেলা হাসপাতালের এ রকম চিত্র প্রতিদিনের। আড়াই লাখ মানুষের জন্য এ হাসপাতালটিতে রোগী আছে; কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নেই। অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আছে, অবেদনবিদ ও শল্যচিকিৎসক নেই। চিকিৎসাসেবায় এই নেই আর নেই দিয়ে চলছে হাসপাতালটি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৫০ শয্যার হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৩১টি পদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। এ হাসপাতাল ছাড়াও উপজেলা সদর ও কুকুয়া ইউনিয়নের আজিমপুর বাজারে একটি হাসপাতাল রয়েছে। আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বাজারে ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী বাজারে একটি করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হলদিয়া ইউনিয়নের সেনের হাটে একটি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এসব হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
জরুরি বিভাগে চিকিৎসক রোকনুজ্জামান বলেন, প্রতিদিন শত শত রোগী সামলাতে হিমশিম অবস্থা। রোগীদের কটু কথাও শুনতে হয় তাদের।
চিকিৎসক ছাড়াও এ হাসপাতালে প্রধান সহকারী, ক্যাশিয়ার ও অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিকের একটি পদ, পরিসংখ্যানবিদ, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাব, ডেন্টাল ও ফিজিওথেরাপিস্টের একটি করে পদ শূন্য রয়েছে। চারজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, চারজন কার্ডিওগ্রাফার, একজন স্টোরকিপার, তিনজন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সাতজন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ২৬ জন স্বাস্থ্য সহকারী, একজন ড্রাইভার, একজন জুনিয়র মেকানিকের পদ শূন্য রয়েছে। ওয়ার্ডবয়, আয়া, মালি, বাবুর্চি, নিরাপত্তা প্রহরী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ ৮৮ পদের মধ্যে ৫২টি পদে জনবল নেই। চতুর্থ শ্রেণির ৩৪টি পদের মধ্যে ১৬টি পদ শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে এসব পদ খালি থাকায় হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখা যাচ্ছে না।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. আবুল ফাত্তাহ বলেন, আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কথা স্বাস্থ্য মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত