রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ে অন্তত ১৭ একর জমির ধান চিটা হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ৩০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইটভাটার কারণে পাঁচ বছর ধরে এলাকার গাছে ফল ধরছে না বলেও অভিযোগ করছেন স্থানীয় লোকজন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলার অন্নদা নগর ইউনিয়নের বামন সর্দার গ্রামে রয়েছে এমএসবি ব্রিকস নামের ইটভাটাটি। এর উত্তর পাশের জমিতে এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক। তারা বলছেন, সদ্য বের হওয়া বোরো ধানের শীষ ঝলসে চিটা হয়ে গেছে। এতে উৎপাদন কম হওয়ায় লোকসান গুনতে হবে তাদের।
সরেজমিন বামন সর্দার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছু ধানের ক্ষেত সোনালি রং ধারণ করেছে। দূর থেকে দেখে পাকা ধান মনে হলেও কাছে গিয়ে দেখা যায়, সব চিটায় পরিণত হয়েছে। যেসব ক্ষেতে এখনও শীষ বের হয়নি, সেগুলোও পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। 
স্থানীয় কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ‘তিন বছর ধরে ঘরের ধানের ভাত খেতে পারি না। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় সব শেষ হয়ে যায়। এবারও একই অবস্থা হওয়ায় চিন্তায় আছি।’ কৃষক মদন চন্দ্র, সুরেশ চন্দ্র, ইউসুফ আলী ও রওশন আলীর ভাষ্য, তারা ক্ষতিপূরণ চান না। সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান। প্রতি বছর ধান পুড়ে যাবে, আর তারা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেবে, তা হতে পারে না।
এমএসবি ব্রিকস ইটভাটার মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘যদি আমার ইটভাটার কারণে ধানের ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’ ইটভাটার কারণেই জমিগুলোর এমন অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের। তিনি বলেন, সরেজমিন তদন্তের পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন অনুযায়ী ইটভাটাটি বন্ধ থাকার কথা বলে জানান পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন। তিনি বলেন, কৃষক ক্ষতির বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অফিস প্রধান) কমল কুমার বর্মন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ইটভাটার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে অধিদপ্তর।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ নক ষ ত ইটভ ট র ব ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য বললেন প্রধান উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক হার কমে আসায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য’।

প্রধান উপদেষ্টা আজ শুক্রবার এক অভিনন্দন বার্তায় বলেন, শুল্কহার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকেরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আলোচকেরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরও শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ