মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
Published: 28th, April 2025 GMT
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. বাহারুল আলম বলেছেন, “পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে করা মামলাগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পুলিশ সপ্তাহ সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে পুলিশপ্রধান এ কথা জানান।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি মহল হয়রানির উদ্দেশ্যে মূল আসামির সঙ্গে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে মামলায় আসামি করছে। এ বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। শুরু থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আমি নিজেও বলেছি এবং পুলিশের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই নির্দেশ পেয়েছেন যে, কোনো নিরীহ মানুষকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়, হয়রানি করা না হয়। তদন্তে শুধু যার বিরুদ্ধে দায়ভার পাওয়া যাবে, তার বেলাতেই আমরা ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট চাইব।”
আরো পড়ুন:
দুই কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় দম্পতি গ্রেপ্তার
ডিবির অভিযানে আ.
‘সাংবাদিকসহ বিভিন্নজনের নামে মিথ্যা মামলা হচ্ছে’-এ প্রশ্নের জবাবে বাহারুল আলম বলেন, “আমাদের শিক্ষিতের সংখ্যা বেড়েছে। সবাই নিজের হাতে লিখে নিয়ে আসেন। যখন একজন বাদী নিয়ে আসেন তখন সেটি আমাদের মামলা হিসেবে রুজু করতে হয়। তখন এটা সত্য না মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ নেই। অভিযোগ যেটা দেয়, সেটা আমার নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে আমি দেখি আসলে কতটুকু সত্য, কতটুকু মিথ্যা। সত্য অংশটুকুই আমরা তদন্তে উঠিয়ে নিয়ে আদালতের কাছে পাঠাই। এই অপরাধটা হয়েছে।”
‘আমার পুলিশ আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫’। তবে গতানুগতিক বছরগুলোর মতো এবারের পুলিশ সপ্তাহে ব্যাপক আনুষ্ঠানিকভাবে করা হচ্ছে না বলে জানান আইজিপি বাহারুল আলম।
তিনি বলেন, “এবারের পুলিশ সপ্তাহ আনুষ্ঠানিক না করে, কার্যকর করতে চাই। তাই এবার পুলিশ সপ্তাহ অনাড়ম্বরভাবে করছি। যেখানে উৎসব-আনন্দ একদমই থাকছে না। পুলিশ সপ্তাহ আমরা আনুষ্ঠানিক না করে কার্যকর করতে চাচ্ছি।এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য, ‘আমার পুলিশ আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। এই ভাবনাটি আমরা দেশবাসীর মনে সঞ্চারিত করতে চাই। তারা যেন বলতে পারেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশের এই পুলিশ আমাদের।”
তিনি বলেন, “আনন্দ-উৎসব বাদ দিয়ে এবার অনেক বেশি কার্যকর সেশন করা, পেশাগত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করা ও বিগত দিনের কর্মকাণ্ড খুঁজে বের করার বিষয়গুলো নিয়ে এই তিন দিন আমরা ব্যস্ত থাকব। সারা দেশের পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনাররা, পুলিশ সুপাররা আসবেন এবং সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবে। আগামী দিনে কীভাবে আরো উন্নত পুলিশি সেবা নিশ্চিত করতে পারি। সামনে যেসব চ্যালেঞ্জগুলো আসবে, সেগুলো থেকে কীভাবে নিজেদের উত্তরণ ঘটাবো এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। মাঠ পর্যায়ে বর্তমান পরিস্থিতি সবার কাছ থেকে নেব, জানবো এবং আগামী দিনে তারা কি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সেটা শুনব।”
আইজিপি বলেন, “এবারের পুলিশ সপ্তাহে আমরা নাগরিক সমাজের সঙ্গে একটি আলোচনা রেখেছি। যেখানে সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিক্ষক, গীতিকার, ক্রীড়াবিদ ও ছাত্র প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। পুলিশিংয়ের বিষয়ে তাদের ধারণা এবং অভিজ্ঞতা, ৫ আগস্টের আগের ও পরের ভুলত্রুটির বিষয়গুলো তাদের কাছ থেকে শুনব।”
তিনি বলেন, “পুলিশ সপ্তাহে সময়ে আমরা বরাবরের মতোই যারা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন তাদের পদকে ভূষিত করে থাকি। প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত থেকে পদক প্রদানের জন্য সদয় সম্মতি দিয়েছেন। তিনি নিজেই পদক প্রদান করবেন।”
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, এআইজি (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর ও পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহসান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এমআর/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব হ র ল আলম কর মকর ত আম দ র তদন ত আইজ প
এছাড়াও পড়ুন:
গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
শীর্ষ তারকা হওয়ার দৌড়ে কখনও অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও ২০০৮ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় সেরা শিল্পীর মুকুট মাথায় উঠেছিল, তবু ধীরলয়ে পথ হেঁটে গেছেন। নিজের কাজে অতিমাত্রার উচ্ছ্বাসও দেখাননি কখনও। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন সবসময়। গানে গানে কুড়িয়ে চলেছেন শ্রোতার ভালোবাসা। এ কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করে তাঁকে চিনে নেওয়া যায়। বলছি, কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজার কথা। গানের ভুবনে অন্তহীন পথচলায় যিনি এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন প্রায় দেড় যুগের পথ। সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার রহস্যটা কী? শুরুতে যখন এ প্রশ্ন লিজার সামনে তুলে আনা হলো, তখন দেখা গেল, লিজা নিজেই এর উত্তর খুঁজতে বসে গেছেন। এ পর্যায়ে হেসে বললেন, ‘না, এর উত্তর সত্যি জানা নেই। আসলে আমি তো গান গাই শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ আর ভালোবাসা কুড়ানোর জন্য। হ্যাঁ, শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে গানের চর্চা ধরে রেখেছি বললে ভুল হবে না। তারপরও প্রতিটি আয়োজনে শ্রোতার ভালোলাগা, মন্দলাগাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এতে করে কতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি। সেই জনপ্রিয়তা শুরু থেকে একই রকম আছে কিনা– সেটি তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন।’ লিজার এ কথা থেকে বোঝা যায়, যাদের কারণে শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, সেই শ্রোতা তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেখানে তাঁর গানগুলো ছিল চালিকাশক্তি। তবে ১৭ বছরের সংগীতের এ পথচলায় লিজার কণ্ঠে মেলোডি গান বেশি শুনতে পাওয়া গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দেড় যুগে নানা ধরনের গান গেয়েছি, তবু কেন জানি শ্রোতারা আমাকে মেলোডি গানের শিল্পীদের দলে রেখে দিয়েছেন। অস্বীকার করব না যে, আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান ভক্তরা বেশি শুনতে চান, সে ধরনের গান বেশি গাই। এটিও ঠিক যে, মেলো কিংবা স্যাড-রোমান্টিক গানের প্রতি শ্রোতার ভালোলাগা সবসময় ছিল। এখনও অনেকে মেলোডি ছাড়া গানের কথা ভাবতে পারেন না। এজন্য নিরীক্ষাধর্মী কাজ করলেও আমি চাই না মেলোডি থেকে কখনও দূরে সরে থাকতে। তাই মেলোডি গান যেমন গাইছি, তেমনি গানের নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছি।’ লিজার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তা সর্বশেষ প্রকাশিত গানগুলোর শুনলে প্রমাণ মেলে। ক’দিন আগে বিটিভির ‘বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠানে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহিনের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার নামে’ গানে যে লিজাকে শ্রোতা আবিষ্কার করবেন, তার সঙ্গে মেলানো কঠিন হবে সামজ ও রিজানের সঙ্গে ‘তিতা কথা’ গানের লিজাকে। আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ‘খুব প্রিয় আমার’, ‘তুমি এলে’, ‘পূর্ণিমা চাঁদ’ গানগুলোয় লিজা অতীতের গায়কীকে ছাপিয়ে কীভাবে আরও নতুন হয়ে নিজ কণ্ঠ তুলে এনেছেন।
মাঝে কিংবদন্তি শিল্পীদের বেশ কিছু কালজয়ী গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংগীতবোদ্ধাদের। স্টেজ শো, রেডিও, টিভির আয়োজন থেমে শুরু করে সিনেমার প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি অন্যদের চেয়ে কোনোভাবে পিছিয়ে নন। এককথায়, বহমান সময়টিকে সুরেলা করে রেখেছেন অনিন্দ্য কণ্ঠ জাদুতে।
আগামীতেও লিজার কণ্ঠ বাতাসে ভেসে বেড়াবে– এ অনুমান করা যায়।