জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যক্রম
Published: 2nd, May 2025 GMT
১৯৮৬ সালে নির্মিত হয় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিস কাম বসবাসের আবাসিক দুই তলা সরকারি ভবনটি। সে হিসেবে ভবনটির বর্তমান বয়স ৩৯ বছর। পাশাপাশি গত চার দশকে ভবনটির তেমন কোনও সংস্কার কাজও করা হয়নি। যে কারণে জরাজীর্ণ ভবনটিতে ফাটল ধরেছে। সেইসঙ্গে অফিসের জন্য বিকল্প আর কোনও ভবন না থাকায় জরাজীর্ণ পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাত্যহিক অফিসের কাজ এবং সেবা নিতে আসা উপজেলাবাসীর সেবা কার্যক্রম।
জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের সরকারি দুইতলা ভবনটির নিচ তলায় রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তার অফিস কক্ষ। আরো আছে মূল্যবান ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোর রুম, কম্পাউন্ডার কক্ষ, সভা কক্ষসহ দাপ্তরিক নানা কাজে ব্যবহৃত চারটি কক্ষ। দ্বিতীয় আছে উপজেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা। সেখানেও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। পুরো ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কিছু কক্ষ বর্তমানে আংশিক আবার কিছু কক্ষ পুরোটাই অচল।
সরজমিনে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের দেয়ালে ও প্রায় সব কক্ষে ছোট-বড় অসংখ্য ফাটল, কোথাও কোথাও ছাদের, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। আবার কখন কখনও অফিসের কর্মরত ও সেবা নিতে আসা লোকজনের মাথায় খসে পড়ছে পলেস্তারা।
দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মূল্যবান ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোররুমে শ্যাওলা পড়ে এবং বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে ভেতরে ঢুকে কক্ষটি একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে সেখানে রাখা প্রাণির জীবন রক্ষাকারী ঔষধের গুণগতমান ঠিক রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে এখানে সেবা নিতে আসা উপজেলার খুটিগাছা মহল্লার কৃষক মো.
ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে দুটি আবাসিক ইউনিটে আছে। যাকে ভি এস কোয়ার্টার বলা হয়। এখানে ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, অফিস কম্পাউন্ডারের পরিবারসহ সংশ্লিষ্টদের বসবাসের পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা আছে। ভবনের দুটি ইউনিটের অবস্থা আরো শোচনীয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. বাদল মিয়া বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের আবাসিক দুই তলা ভবনটির শোচনীয় ও জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে তাতে কর্মকর্তারা বাস করেন না। কারণ যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় জীবনের উপর ঝুঁকি আসতে পারে।
১৯৮৬ নির্মিত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার জন্য গত ২০২৪ সালের ১২ জুন তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তৎকালীন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ডা. অলিউর ইসলাম তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি চিঠি পাঠান। প্রায় এক বছরেও ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা কার্যক্রম ঝুলে আছে।
তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম জরাজীর্ণ ভবনটির কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে নতুন ভবন নির্মাণের কোনও প্রকল্প চলমান নেই। তাই আপাতত ভবনটি সংস্কার ও মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ড় শ উপজ ল কর মকর ত র র ণ ভবন ভবনট র অফ স র র জন য অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ছোট্ট মেয়েকে কেন নিয়মিত ই মেইল পাঠাচ্ছেন আলিয়া
মেয়ে রাহা আসার পর বদলে গেছেন মা অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। জন্মের পর থেকেই প্রতি মাসে রাহাকে একটি করে ই-মেইল লিখে পাঠিয়ে আসছেন আলিয়া। তাতে লেখা থাকে–আজ রাহা প্রথম হেঁটেছে এক পা, আজ সে দাদির কোলে ঘুমিয়ে পড়েছিল, আজ সে বাবার গালে এক ছোট্ট চুমু খেয়েছে। সেই ই-মেইলের সঙ্গে থাকে অসংখ্য ছবি–কখনও বাবার সঙ্গে খেলায় মত্ত, কখনও মায়ের কাঁধে মাথা রেখে ঘুম। ই-মেইল অ্যাটাচমেন্টে সাজিয়ে রাখা থাকে ছোট ছোট মুহূর্তের জীবন্ত স্মৃতি। আলিয়া বলেন, আমি চাই, রাহা যখন বড় হবে। ওর যখন ১৫ বছর বয়স হবে, তখন আমি তাকে মেইল বক্সটি দিয়ে বলব, ‘এই দেখো, এগুলো তোমার ছোটবেলার গল্প। এইভাবে আমরা তোমায় ভালোবেসে বড় করেছি।’ রাহা আসার পর অনেক কিছুই বদলেছে আলিয়ার জীবনে। আগের তুলনায় অনেক বেশি ধৈর্য ধরতে পারেন তিনি, অনেক কিছু বুঝে নিতে পারেন সময় নিয়ে। এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া বলেন, ‘আমি নিজেকে নতুন করে চিনতে শিখেছি।’ তবে এই মাতৃত্বের যাত্রা একেবারে খোলামেলা ছিল না শুরু থেকেই। প্রথমদিকে মেয়েকে আড়ালে রাখতে চেয়েছিলেন রণবীর ও আলিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরুতে রাহার একটিও ছবি প্রকাশ করেননি। কারণ ক্যামেরা আর ফ্ল্যাশ থেকে রাহাকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন তারা। সময়ের সঙ্গে বদলে যায় অনেক কিছু। একদিন আলিয়া নিজেই নিয়ে এলেন ছোট্ট রাহাকে পাপারাৎসির সামনে। সেদিন সবাই অবাক হয়েছিলেন। কারণ, ক্যামেরা দেখে ভয় পায়নি একরত্তি রাহা। সাবলীলভাবে তাকিয়ে পোজও দিয়েছিল। যেন একেবারে তৈরি সে, এই দুনিয়ার আলো আর ক্যামেরার ঝলক সামলাতে। এরপর চলতি বছরে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার পর থেকে আরও বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন রণবীর ও আলিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে রাহার সব ছবি সরিয়ে ফেলেছেন। পাপারাৎসিকে অনুরোধ করেছেন, যেন রাহার ছবি না তোলা হয়। রণবীর তো এমনিতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুপস্থিত। আলিয়াও এখন মেয়েকে নিয়ে খুবই রক্ষণশীল। তিনি চান, রাহা নিজের ইচ্ছায় বড় হোক, নিজের শর্তে পরিচিত হোক দুনিয়ার সঙ্গে।
ক্যামেরার সামনে আলিয়া নানান চরিত্রে অভিনয় করেন। বাস্তব জীবনে তাঁর সেরা চরিত্র ‘মা’ এবং সেই চরিত্রে তিনি নিজের জন্য নয়, রাহার জন্য প্রতিটি দিন লিখে রেখে যাচ্ছেন একেকটি দৃশ্য। একেকটি লাইভ মেমোরি। যেন একদিন সেই ছোট্ট মেয়েটি যখন জানবে তার জীবনের গল্প; সে যেন দেখে, ভালোবাসা কেমন করে জমা হয় প্রতিদিনের ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্তে। সূত্র: আনন্দবাজার।