১৯৮৬ সালে নির্মিত হয় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিস কাম বসবাসের আবাসিক দুই তলা সরকারি ভবনটি। সে হিসেবে ভবনটির বর্তমান বয়স ৩৯ বছর। পাশাপাশি গত চার দশকে ভবনটির তেমন কোনও সংস্কার কাজও করা হয়নি। যে কারণে জরাজীর্ণ ভবনটিতে ফাটল ধরেছে। সেইসঙ্গে অফিসের জন্য বিকল্প আর কোনও ভবন না থাকায় জরাজীর্ণ পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রাত্যহিক অফিসের কাজ এবং সেবা নিতে আসা উপজেলাবাসীর সেবা কার্যক্রম।

জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের সরকারি দুইতলা ভবনটির নিচ তলায় রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তার অফিস কক্ষ। আরো আছে মূল্যবান ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোর রুম, কম্পাউন্ডার কক্ষ, সভা কক্ষসহ দাপ্তরিক নানা কাজে ব্যবহৃত চারটি কক্ষ। দ্বিতীয় আছে উপজেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা। সেখানেও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। পুরো ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কিছু কক্ষ বর্তমানে আংশিক আবার কিছু কক্ষ পুরোটাই অচল।

সরজমিনে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের দেয়ালে ও প্রায় সব কক্ষে ছোট-বড় অসংখ্য ফাটল, কোথাও কোথাও ছাদের, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। আবার কখন কখনও অফিসের কর্মরত ও সেবা নিতে আসা লোকজনের মাথায় খসে পড়ছে পলেস্তারা।

দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মূল্যবান ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার স্টোররুমে শ্যাওলা পড়ে এবং বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে ভেতরে ঢুকে কক্ষটি একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে সেখানে রাখা প্রাণির জীবন রক্ষাকারী ঔষধের গুণগতমান ঠিক রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে এখানে সেবা নিতে আসা উপজেলার খুটিগাছা মহল্লার কৃষক মো.

আরব আলী জানান, মাঝে মাঝে গরু-ছাগলের চিকিৎসা করাতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এসে কক্ষগুলোতে ঢুকলে ভয় করে। বর্তমানে ভবনটির এমন অবস্থা যেকোনো সময় যেন মাথার উপর পলেস্তারা খসে পড়বে।

ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে দুটি আবাসিক ইউনিটে আছে। যাকে ভি এস কোয়ার্টার বলা হয়। এখানে ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, অফিস কম্পাউন্ডা‌রের পরিবারসহ সংশ্লিষ্টদের বসবাসের পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা আছে। ভবনের দুটি ইউনিটের অবস্থা আরো শোচনীয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. বাদল মিয়া বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের আবাসিক দুই তলা ভবনটির শোচনীয় ও জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে তাতে কর্মকর্তারা বাস করেন না। কারণ যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় জীবনের উপর ঝুঁকি আসতে পারে।

১৯৮৬ নির্মিত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার জন্য গত ২০২৪ সালের ১২ জুন তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তৎকালীন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ডা. অলিউর ইসলাম তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি চিঠি পাঠান। প্রায় এক বছরেও ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা কার্যক্রম ঝুলে আছে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম জরাজীর্ণ ভবনটির কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে নতুন ভবন নির্মাণের কোনও প্রকল্প চলমান নেই। তাই আপাতত ভবনটি সংস্কার ও মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ড় শ উপজ ল কর মকর ত র র ণ ভবন ভবনট র অফ স র র জন য অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।

আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগে

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
  • তিন ভবনেই ১৫টি, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় কেন পল্টনকেন্দ্রিক