ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় মহাসড়কের মাঝখানে হঠ্যাৎ দাঁড়িয়ে যায় একটি বাস। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা যে যার মতো লাফিয়ে নামতে থাকেন সড়ক ডিভাইডারের ওপর। সামনে থাকা এক যুবক কোনোমতে নেমে সরে গেলেও পেছনের দুই মাদরাসা শিক্ষার্থী ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান। এসময় তাদের পাশ কাটিয়ে দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেল সেখান থেকে চলে যায়। সামান্য হেরফের হলেই ঘটতে পারত প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেল ৫টার এ ঘটনায় পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে যান। উপস্থিত কয়েকজন ছুটে গিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে সড়কের পাশে সরিয়ে দেন। তখন ওই সড়কে গাড়ি চলছিল প্রবল গতিতে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ ধরনের ঘটনা এখন নিয়মিত। প্রতিদিন ডজনখানেক বাস সড়ক ডিভাইডার বা যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাত্রী নামায়। সকাল-বিকেল স্কুলগামী শিশু, কর্মজীবী নারী-পুরুষদের একইভাবে ঝুঁকি নিয়ে বাস থেকে নামতে হয়। অনেক সময় বৃদ্ধ বা অসুস্থ যাত্রীদের হেলপাররা জোর করে নামিয়ে দেন মাঝ রাস্তায় বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

আরো পড়ুন:

রাজশাহীর উন্নয়নে ২ হাজার কোটি টাকার সুকুকের নিলাম ১৯ মে 

নড়াইলে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, শিশু নিহত

পদুয়ার বাজারের পাশেই রয়েছে ব্যস্ত মার্কেট, স্কুল ও অফিসপাড়া। বিভিন্ন ধরনের গাড়ির বেপরোয়া চলাচলের কারণে অনেকে আতঙ্কে সন্তানকে একা স্কুলে পাঠাতেও সাহস পান না বলে জানান সেখাকার ব্যবসায়ীরা।

এলাকাবাসী জানান, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট, চান্দিনা ও পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঢাকার দিকে যাতায়াত করেন। তাদের অধিকাংশই বাধ্য হয়ে মহাসড়কের ওপর থেকে যাওয়া-আসা করেন। পেছন থেকে কোনো গাড়ি আসছে কি না-তা দেখার সুযোগও মেলে না তাদের।

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রতিদিন ঢাকায় যাতায়াত করেন শরীফ নামে এক যুবক। তিনি বলেন, “বাস থামে মাঝ রাস্তায়। আমাদের নামতে হয় ডিভাইডারের ওপর দিয়ে। পেছনে গাড়ি আসছে কি না, দেখার সুযোগ থাকে না। আমাদের তো যাতায়াত করতেই হবে।”

উদ্বেগ জানিয়ে স্থানীয় ডাব ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, “আমার ছেলে স্কুলে যাওয়ার সময় ঠিক এমনভাবেই রাস্তা পার হয়। সারাদিনই ভয় লাগে, কোনোদিন হয়তো একটা গাড়ি এসে তাকে শেষ করে দেবে।”

ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি মো.

ইকবাল বলেন, “নিয়মিতভাবে সড়কে যাত্রী ওঠা-নামার বিষয়ে চালকদের সতর্ক করা হয়। মাঝে মধ্যে অভিযানও চালানো হয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আসছে না।”

সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডা. সানজিদুর রহমান বলেন, “সড়কে নির্দিষ্ট স্টপেজ না থাকলে যত অভিযানই চালানো হোক, ঝুঁকি কমবে না। প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি অবকাঠামোগত পরিকল্পনা যেমন- ফুটওভার ব্রিজ, যাত্রী ছাউনি ও নিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।”

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিওনের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম বলেন, “শুধু প্রশাসনের তৎপরতা নয়, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরিবহন মালিক, চালক এবং সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনের গতি ১০০ কিলোমিটারের নিচে নামলেই ফাটবে বোমা...

মুম্বাই থেকে নয়াদিল্লিতে নতুন দ্রুতগতির ট্রেন চালু হবে। মাত্র ১৪ ঘণ্টায় এই পথ পাড়ি দেওয়া যাবে। রেলকর্মী, যাত্রী—সবার কাছেই এ যেন স্বপ্নের মতো। কিন্তু স্বপ্ন দ্রুতই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে, ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা করে দুষ্কৃতকারী। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ সিনেমার গল্প। রবি চোপড়া পরিচালিত সিনেমাটিতে ছিলেন ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খান্না আর জিতেন্দ্র। ট্রেনকে কেন্দ্র করে নির্মিত জমজমাট অ্যাকশন থ্রিলারটি দর্শক টেনেছিল। সে বছরের সপ্তম ব্যবসাসফল হিন্দি সিনেমা ছিল এটি। ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ অবশ্য পুরোপুরি মৌলিক সিনেমা নয়।

একনজরে
সিনেমা: ‘বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন’
ধরন: অ্যাকশন-থ্রিলার
পরিচালনা: শিনজি হিগুচি
অভিনয়: সুয়োশি কুসানাগি, কানাতা হোসোডা, নন তাকুমি সাইতো
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
রানটাইম: ১৩৪ মিনিট

১৯৭৪ সালের হলিউড ডিজাস্টার সিনেমা ‘দ্য টাওয়ারিং ইনফার্নো’ থেকে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত ছিল এটি। তবে সে যা–ই হোক, ট্রেন সিনেমা নিয়ে দর্শকের আলাদা আগ্রহ আছে, ঠিকঠাক বানাতে পারলে সাধারণ গল্পের সিনেমাও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। ট্রেন সিনেমার কথা বলতে গত বছরের হিন্দি সিনেমা ‘কিল’-এর স্মৃতি এখনো টাটকা। নিখিল নাগেশ ভাটের সিনেমাটি দুর্দান্ত অ্যাকশনের জন্য মনে রেখেছেন ভক্তরা। এবার আলাপ করা যাক জাপানি সিনেমা ‘বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন’ নিয়ে। শিনজি হিগুচি পরিচালিত সিনেমাটি গত ২৩ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে।

বুলেট ট্রেন ছুটছে। হঠাৎই উড়োফোনে জানা গেল, ট্রেনে বোমা রাখা আছে। গতি ১০০ কিলোমিটারের নিচে নামলেই বিস্ফোরিত হবে সেটি। এ–ই হলো মোটাদাগে সিনেমার গল্প। আরও বিশদে বললে সিনেমার শুরু হয় জাপানের হায়াবুসা স্টেশন থেকে। ৬০ নম্বর ট্রেনটি ছাড়বে টোকিওর উদ্দেশে। যাত্রীদের মধ্যে আছে একদল স্কুলশিক্ষার্থী, ইনফ্লুয়েন্সার, স্ক্যান্ডাল থেকে পালিয়ে বেড়ানো রাজনীতিবিদ। ট্রেন ছাড়ার পরই জানা যায় বোমার খবর। এরপরই রুদ্ধশ্বাস যাত্রার শুরু। এর মধ্যে উড়োফোনে দুষ্কৃতকারী আবার দাবি করে, ১০০ বিলিয়ন ইয়েন দিতে হবে। তবে সেটা সরকার নয়, আসতে হবে সাধারণ জনগণের পকেট থেকে। খবর শুনে ট্রেনে থাকা এক অতি উৎসাহী ইনফ্লুয়েন্সার নেমে পড়েন তহবিল সংগ্রহের কাজে।

`বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন' সিনেমার দৃশ্য। নেটফ্লিক্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ