রাবির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত, প্রতিবাদে মানববন
Published: 2nd, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষিত সিডিউলে নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে শুক্রবার (২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এক্স স্টুডেন্ট ফোরাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশ নেন।
মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের লাইফ মেম্বার অ্যাডভোকেট ড.
নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে ড. হেলাল বলেন, “নতুবা এক্স স্টুডেন্টরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবে। ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের দপ্তর ও বাসভবন ঘেরাও করা হবে। কোনো অপশক্তি দ্বারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিতর্কিত করা সহ্য করা হবে না।”
আরো পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা, প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও
রাবি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ; শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এক্স স্টুডেন্ট ফোরামের সেক্রেটারী দেলাওয়ার হোসেন বলেন, “রুয়া প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো নির্বাচন না দিয়ে অবৈধভাবে রুয়া দখল করে রেখেছিলো ফ্যাসিবাদের দোসররা। তারা নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তির মত রুয়াকে ব্যবহার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনদের এই সংগঠনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আসতে দেওয়া হয়নি, সদস্য হতে দেওয়া হয়নি, কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিবাদের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভালো চিন্তা করে একটি অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে। গঠিত নির্বাচন কমিশন সিডিউল ঘোষণা করলে সারা দেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে লাইফ মেম্বার হলো, মনোনয়ন কিনে যথাযথভাবে ১২৫ জন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলো। যখন শুধুমাত্র নির্বাচনের দিনক্ষণ অপেক্ষা করছিলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা, ঠিক তখন একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে নির্বাচন স্থগিত করতে নাটকীয়তা শুরু করে। একপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনকে তারা হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রারের বাসভবনে ককটেল ফাটিয়ে বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের প্রধান সহ ২জন পদত্যাগ করে এবং এডহক কমিটি নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। একটি রাজনৈতিক সংগঠন নিজেদের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন বানচালের মত ঘৃণিত কাজ করছে। তাদের এমন কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি অ্যাডহক কমিটিকে মেরুদণ্ডহীন দাবি করে বলেন, “নির্বাচন স্থগিত করে আপনারা রুয়ার সদস্যদের সাথে তামাশা ও প্রতারণা করেছে। সুতরাং এই কমিটির ওপর আর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা যায় না। নতুন অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে রুয়া'র নির্বাচন দিতে হবে। নতুবা প্রতারণার দায়ে অ্যাডহক কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি কঠোর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হবো।”
রুয়ার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী পেট্রো বাংলার সাবেক ব্যবস্থপনা পরিচালক এবিএম কামরুজ্জামান পুলক বলেন, “রুয়া গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসররা রুয়া দখল করে নিয়েছে। সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসর ব্যতিত অন্য কাউকে স্থান দেওয়া হয়নি, সদস্য করা হয়নি, কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলে রুয়াকে পুনঃগঠনের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিসহ সকল স্তরের প্রাক্তন ছাত্ররা রুয়ার সদস্য হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রুয়ার নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত সিডিউলে নির্বাচন স্থগিত করতে নব্য ফ্যাসিবাদ উঠেপড়ে লেগেছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অ্যাডহক কমিটি নব্য ফ্যাসিবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নির্বাচন স্থগিত করেছে। অ্যাডহক কমিটির এমন ঘোষণায় একজন প্রার্থী হিসেবে তীব্র ঘৃণা ও নিন্দার সাথে প্রত্যাখান করছি। অনতিবিলম্বে নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। নতুবা কঠোর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হবো।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ.কে.এম কামরুজ্জামান কোরবান বলেন, “অতীতে রুয়ার নেতৃত্ব ছিল ফ্যাসিবাদের দোসররা। তারা পরাজিত হয়ে এখন নতুন করে আরেকদলকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে। তবে কোন অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না।”
২০০৭-০৮ সেশনের পপুলেশন সাইন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “আমরা মর্মাহত যখন পুরো দেশ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সেই সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের চিত্র ফুটে উটেছে।”
কেন রুয়ার নির্বাচন স্থগিত করতে হয়েছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “একক কোন ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ হাসিল করতে দেওযা হবে না। অনতিবিলম্বে রুয়ার ঘোষিত সিডিউলে নতুন অ্যাডহক কমিটি দ্বারা নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।”
আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ঢাকা বারের আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম আরো যুগপোযগী করে গড়ে তুলতে সাবেক ছাত্রদের অংশগ্রহণ ও পরামর্শের জন্য ১৯৭৪ সালে রুয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে রুয়া সকল ছাত্রছাত্রীর ন্যায্য দাবি আদায়ে ভূমিকা রেখে আসছে। কিন্তু বিগত সময়ে অবৈধভাবে একটি চক্র রুয়া দখল করে নিজেরা সুবিধা ভোগ করেছে। এখন ঐ সুবিধা আরেকটি চক্র লুপে নিতে রুয়ার ঘোষিত নির্বাচন স্থগিত করার মতো ঘৃণিত কাজ করেছে।ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে অ্যাডহক কমিটিও লিপ্ত হয়েছে। অনতিবিলম্বে চলমান অ্যাডহক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে রুয়ার নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।”
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ড. ফেরদৌস আলম ও তাফসীর সহ প্রাক্তন ছাত্ররা তাদের বক্তব্যে রুয়ার নির্বাচন স্থগিত করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে নতুন অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে রুয়ার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান, কামরুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, মোহাইমিন, রাসেল, বোরহান সহ কয়েকশত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক ব সভবন গঠন কর ম নববন অন ষ ঠ স ড উল গ রহণ সদস য ন গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
পণ্য লুট, চাঁদাবাজির বিচার চান ব্যবসায়ীরা
ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা ব্যবসায়ী-মালিক সমিতি, উপজেলা পরিবেশক সমিতির নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে দুর্বৃত্তরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। এমনকি নানা প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের আটকে টাকা-পয়সা ও পণ্য লুটে নিচ্ছে। দোকানপাট বন্ধ করে রাতে বাসায় চলে গেলেও নিস্তার পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। দোকানের তালা ভেঙেও মালপত্র লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
মানববন্ধন শেষে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে মারীখালি ব্রিজ ঘুরে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা কাঁচাবাজারের সামনে শেষ হয়। পরে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁ থানা ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় সোনারগাঁ পরিবেশক সমিতির সভাপতি মো. রেজাউল হক রাজা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সোনারগাঁ পণ্য পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মো. মোশারফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ীরা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে সহযোগীসহ গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।