খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থীর হামলায় সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকি গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারী শিক্ষার্থীর নাম আবদুল্লাহ নোমান। তিনি বাংলা ২০১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

এদিকে শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা আবদুল্লাহ নোমানকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদের (সাকি) কথপোকথনের এক পর্যায়ে সাবেক শিক্ষার্থী বাংলা ১৮ ব্যাচের আব্দুল্লাহ নোমান তর্কে লিপ্ত হয় এবং স্যারের গায়ে হাত দিয়ে আঘাত করে।

এ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলা ১৮ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ নোমানকে আজীবনের জন্য ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এবং বিদ্যমান আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে। এছাড়া ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। একই সঙ্গে হামলাকারী শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.

মো. রেজাউল করিম বলেন, “এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবেশ রক্ষায় গ্রামীণ ডানোনের অভিনব উদ্যোগ

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জটিল সমস্যার একটি প্লাস্টিক বর্জ্য। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ব্যবহারের পর প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকসামগ্রী মানুষ ফেলে দেয়। এসব বর্জ্যের বেশির ভাগ নদী, সমুদ্র বা জমিতে চলে যায়। এই প্লাস্টিক কখনোই হারায় না অর্থাৎ মাটির সঙ্গে মেশে না। এটি শত শত বছর পরিবেশে থেকে যায়, প্রকৃতির বিরূপ পরিবর্তন ঘটায় এবং পশুপাখির ক্ষতি করে। এই সমস্যা সমাধানের একটা উপায় রিসাইক্লিং বা প্লাস্টিককে পুনর্ব্যবহার উপযোগী করে তোলা। এর মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক সংগ্রহের পর তা নতুন পণ্যে রূপান্তর হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিল–  আমরা কি আমাদের শক্তি দইয়ের প্লাস্টিক কাপগুলো দিয়ে কিছু করতে পারি? এই প্রশ্নটি তাদের মধ্যে একটি উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্ম দেয়। যেমন– ব্যবহৃত শক্তি দইয়ের কাপ সংগ্রহ করে পুনর্ব্যবহার উপযোগী চামচ বানানো!
প্রাথমিকভাবে এটি একটি ছোট প্রয়াস। কিন্তু সবুজ ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কাপগুলো বর্জ্য হিসেবে ফেলে না দিয়ে গ্রামীণ ডানোন তাদের নতুন রূপ দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়াটি সহজ এবং কার্যকর। এর মাধ্যমে প্রথমে ব্যবহৃত কাপগুলো সংগ্রহ করা হয় এবং রিসাইক্লিং সেন্টারে পাঠানো হয়। সেখানে প্লাস্টিকগুলো পরিষ্কার করা হয় এবং গলিয়ে নতুন করে চামচ বানানো হয়। এই চামচগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যায়, যা নতুন প্লাস্টিক উৎপাদনের প্রয়োজন কমিয়ে দেয়।
গ্রামীণ ডানোনের এই উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-১২ সমর্থন করে, যেটি পরিমিত ভোগ ও টেকসই উৎপাদনের কথা বলে, যা পরিবেশ সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। ব্যবহৃত প্লাস্টিককে দরকারি পণ্যে রূপান্তর করার মাধ্যমে গ্রামীণ ডানোন এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যা শুধু বর্জ্য এবং পরিবেশ দূষণই কমায় না, বরং অন্যান্য ব্যবসা ও ব্যক্তিদের পরিবেশবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রেরণা জোগায়। গ্রামীণ ডানোন প্রমাণ করছে ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশের যত্ন নেওয়া সম্ভব।
এমন প্রচেষ্টার মাধ্যমে গ্রামীণ ডানোন কেবল প্লাস্টিক বর্জ্য কমাচ্ছে না; অন্য কোম্পানিগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণ করছে, পরিবেশ রক্ষায় এমন উদ্যোগ ব্যবসার প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে না; বরং এটি মানুষকে আরও সচেতন করে কীভাবে রিসাইক্লিং আমাদের পৃথিবীকে পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখতে সাহায্য করতে পারে। বাংলাদেশে প্লাস্টিকদূষণ একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। দেশে প্রতিবছর আট লাখ টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর সামান্যই পুনর্ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়। এখনও অনেক মানুষ জানে না প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে কী করতে হবে এবং সব বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের জন্য যথেষ্ট প্ল্যাটফর্মও নেই। সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা এ পরিস্থিতি উন্নত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে কোনো পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। 
এ কারণে গ্রামীণ ডানোনের এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রমাণ করে একটি প্রতিষ্ঠানও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। এভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও যদি তাদের অনুসরণ করে, তাহলে বাংলাদেশের টেকসই হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে তা আরও সহায়ক হতে পারে। গ্রামীণ ডানোন প্লাস্টিক বর্জ্যকে শুধু একটি সমস্যা হিসেবে না দেখে সৃজনশীল সমাধানের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছে, যা অন্য প্রতিষ্ঠানকেও বর্জ্য ও সবুজ উন্নয়ন সম্পর্কে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে। একটি কাপ, একটি চামচ পুনর্ব্যবহার উপযোগী করে প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণ করেছে ছোট ছোট প্রয়াসও বড় পরিবর্তন আনতে পারে। v
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ