দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ নানা ধরনের কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। এসব রোগীর ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হলেও প্রায় ৭০ শতাংশ তা নিতে পারছেন না। এই সংকট নিরসনে এক হাজার ডায়ালাইসিস যন্ত্র কিনতে যাচ্ছে সরকার। কিডনি প্রতিস্থাপনেও বড় বাধা আইনি জটিলতা ও দাতা সংকট। এজন্য আইন সংশোধনেও কাজ চলছে। কিডনির চিকিৎসা সহজকরণ ও ব্যয় কমাতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।

শনিবার রাজধানীর মিরপুর-২ এ অবস্থিত বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে শুরু হয়েছে তিন দিনের ‘বালাদেশ-কোরিয়া ফ্রেন্ডশিপ সম্মেলন-২০২৫’, যা চলবে আগামী সোমবার পর্যন্ত। সেখানে ‘কিডনি প্রতিস্থাপন’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নিয়ে এসব তথ্য জানান বক্তারা। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসচিব মো.

সাইদুর রহমান বলেন, কিডনি রোগীর চিকিৎসায় এক হাজার ডায়ালাইসিস মেশিন ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তবে যে হারে  কিডনি রোগী বাড়ছে, তাতে হাজার যন্ত্র স্থাপনের পরেও সব রোগীর ডায়ালাইসিস দেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এজন্য সরকারি সংস্থার উদ্যোগে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে কিডনি রোগের সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এছাড়া দেশে কতজন কিডনি রোগী আছে জানতে রাষ্ট্রীয়ভাবে কিডনি রোগী নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (এনআইকেডিউ)।

তিনি আরও বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনে আইনি জটিলতা রয়েছে। এটি সংশোধন করা হচ্ছে, আপনারা চাইলে এ বিষয়ে মতামত দিতে পারেন।

বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য দেশে অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। সেটি গড়ে উঠলে শুধু কিডনি নয়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন সহজ হবে। কিডনি ডায়ালাইসিসের ২৫০ সেন্টার রয়েছে দেশে, এর ৮০ শতাংশ মেশিন ঢাকায়। সরকারি যে ডায়ালাইসিস মেশিন কেনা হচ্ছে, তা যদি ঢাকার বাইরে স্থাপন করা যায়, তাহলে সারাদেশে ডায়ালাইসিস সেবা সহজ হবে। কিডনি চিকিৎসায় দক্ষ জনবলেরও অভাব আছে বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা.রফিকুল আলম বলেন, সারাবিশ্বেই কিডনি প্রতিস্থাপন ডোনার সংকট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় ডোনার সংকট মোকাবেলা করতে বলছে। এ জন্য প্রদত্ত আইনে সংশোধন আনতে হবে। আবেগপ্রবণ হয়ে অনেকে কিডনি দিতে চান, কিন্তু আমাদের আইনে বাধা থাকার কারণে তা সম্ভব হয় না। এজন্য নিজেদের নীতিমালা তৈরি করা জরুরি। 

তিনি বলেন, এশিয়ার মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনে অর্থ সংকট বড় সমস্যা, এ জন্য আমাদের যাকাত ফান্ডের মতো আরও কিছু ফান্ড তৈরি করতে হবে। দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের বাৎসরিক চাহিদা আনুমানিক পাঁচ হাজার। কিন্তু গড়ে বছরে প্রায় ১২০ জন ব্যক্তি তাদের আত্মীয়দের নিকট থেকে প্রতিস্থাপনের জন্য কিডনির ব্যবস্থা করতে পারেন। এখন ‘ব্রেন ডেড’ ব্যক্তিদের কাছ থেকে কিডনি নিয়েও প্রতিস্থাপন করতে পারলে সংকট কিছুটা কমে যাবে। আমাদের প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলঙ্কায়ও তা শুরু হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ডন দ ন ক ডন ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস

পুঁজিবাজারে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস লিমিটেডের পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তথ্য মতে, লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ ডিসেম্বর হাইব্রড সিস্টেমে অনুষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৭৮ টাকা।

এদিকে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে (৪৩.৪৪) টাকা হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল (১৪.৫০) টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩.২৭ টাকায়।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ