পারভেজ সাজ্জাদের সন্তান আকাইদ সাজ্জাদ, মা–বাবা তাঁকে শ্রেষ্ঠ নামে ডাকতেন। গত জুনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শ্রেষ্ঠর মা অভিনয়শিল্পী সীমানা। এর পর থেকে বাবা পারভেজের অধিকাংশ সময় সন্তানের সঙ্গে কাটে। স্টেজ শো, গানের রেকর্ডিং বা বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া বাসার বাইরে যান না। মাঝেমধ্যে ছেলেকে সঙ্গে নিয়েও রেকর্ডিং স্টুডিওতে যান। ছেলে তার দাদি এবং দুই ফুফুর ‘জানের জান’, ‘কলিজার টুকরা’ উল্লেখ করে পারভেজ বলেন, ‘আমার ছেলেটা মা হারানোর দুঃখ আজীবন বয়ে বেড়াবে। আমি মনে করি, বাবার না থাকা কিছুটা হলেও পূরণ করা যায়; কিন্তু মায়ের অপূর্ণতা কোনোভাবেই পূরণ হয় না।’
ছেলের মায়ের মৃত্যুর পর জীবন অনেকটাই বদলে গেছে, জানালেন এই গায়ক। পারভেজ বলেন, ‘জীবন চলবে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। যেখানে পছন্দের কোনো অপশন নেই। এই জীবনও ভালো। ২৪ ঘণ্টা ছেলেটা আমার চোখের সামনে আছে, এটা খুবই স্বস্তির বিষয়। তবে ওর কষ্টটা যখন দেখি, তখন তা আমাকে হার্ট করে। ভাবতে থাকি, ও তো এ রকম জীবন প্রাপ্য ছিল না। এই বয়সেও আমার মা আছে। কোনো কষ্ট বা অন্য কোনো অনুভূতি, আনন্দের কথা শেয়ার করার জন্য মায়ের নম্বরে প্রথম ডায়াল করি। কিন্তু আমার ছেলেটার চিন্তার জায়গাটাই শেষ হয়ে গেল। মা না থাকাটা কত বড় অভাব, কল্পনাও করতে পারি না। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই বন্ধুর মতো। আমরা একসঙ্গে স্কুল থেকে যাওয়া–আসার সময় নানা বিষয়ে কথা বলি। বন্ধুত্বের জায়গা ডেভেলপ করে নিয়েছি। ওর মা বেঁচে থাকার সময়েও করেছি।
সবকিছুর পরও বিরাট শূন্যতার জায়গা রয়েছে। একটা বাচ্চাকে যখন তার মা আদর করে, তখন দেখি সে তাকিয়ে থাকে। আনমনা হয়ে যায়। বেশির ভাগ সময় আমাকে বলে না। সবচেয়ে বড় বিষয়, এই বয়সে কষ্ট লুকানো শিখে গেছে, যেটা একজন বাবা হয়ে সহ্য করা যায় না।’
১৫০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে
বিজয় সরকারের ‘তুমি জানো না রে প্রিয় তুমি মোর জীবনের সাধনা’, হাসন রাজার ‘সোনা বন্দে আমারে দিওয়ানা বানাইল’, ‘লোকে বলে’, শাহ আবদুল করিমের ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’, ‘কেমনে ভুলিব আমি’, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘আছেন আমার মোক্তার’, মুজিব পরদেশীর ‘আমার সোনা বন্ধু রে’, ‘সোনা দিয়া বান্ধাইয়াছি ঘর’, নজরুল ইসলাম খানের ‘দয়াল বাবা কেবলা কাবা’, আলাউদ্দিন বয়াতির ‘মন আমার দেহ ঘড়ি’—এই ১০টি গানের সংকলনে বাংলা ফোক ম্যাশআপ করেছিলেন ডিজে রাহাত, যেটিতে কণ্ঠ দেন পারভেজ সাজ্জাদ। পাঁচ বছর আগে প্রকাশিত সে গানটি সম্প্রতি দেড় শ মিলিয়ন ভিউ ছাড়িয়েছে। ১০ লাখ লাইক পড়েছে এবং মন্তব্য জমা পড়েছে ৪৪ হাজারের মতো। এটাকে অনেক বড় অর্জন মনে করছেন পারভেজ। কেননা বাংলা লোকগানের কোনো ম্যাশআপে এত বেশি সাড়া পড়েনি।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, প্রথমত গানগুলো খুবই চেনা। সংগীতায়োজনে একেবারে আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল। গায়কিতে ঐতিহ্যের ছাপ ছিল। প্রচলিত গায়কির সঙ্গে সংগীতের আধুনিকতা চমৎকারভাবে ব্লেন্ড হওয়ার কারণে ট্র্যাকটাকে সবাই এভাবে ভালোবেসেছে। তা ছাড়া লোকগানের আবেদন সর্বজনীন। এ গানটি আমি বাজতে শুনেছি ইউকে, থাইল্যান্ড ও ভারতের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও ক্লাবে। গানটিতে নতুন ধরনের সাউন্ড ডিজাইন পেয়েছেন মানুষ।’
পারভেজ সাজ্জাদ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতি
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নির্মানাধীন ডিপিডিসির একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তারক্ষীদের হাত-পা বেধে অজ্ঞাত ডাকাত দল কয়েক লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের ক্যাবল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার রাত ৮টার দিকে ফতুল্লার পিলকুনি পুলপাড় এলাকায় অবস্থিত ডিপিডিসির চায়না প্রজেক্টে ডাকাত দল প্রবেশ করে।
ডাকাতি শেষে রাত সাড়ে ৩টায় ইজিবাইকে বের হয়ে যায়। এবিষয়ে সোমবার সারাদিনও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কেউ কিছু না বললেও পুলিশের তৎপরতায় বিষয়টি এদিন বিকেলে প্রকাশ পায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই আশিষ জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করা শ্রমিকদের পোষাক ও হেলমেট পড়া ২০/২৫ জনের এক দল যুবক পিলকুনি পুলপাড় এলাকায় অবস্থিত ডিপিডিসির চায়না প্রজেক্টে প্রবেশ করে।
এরপর প্রজেক্টের সিকিউরিটি গার্ড কুদ্দুস ও এনামুল সহ আরো ২জন স্টাফকে দেশিয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত পা বেধে ফেলেন।
তারপর রাত সাড়ে ৩ ঘন্টায় বিপুল পরিমানের তামার তার কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়। এরমধ্যে কিছু তার ইজিবাইকে উঠিয়ে রাত সাড়ে ৩টায় প্রজেক্টের ভিতর থেকে বেরিয়ে যায় ডাকাতরা।
খবর পেয়ে ওই প্রজেক্টে গিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় তারা সঠিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানাতে পারেনি। তবে এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে জানতে ওই প্রজেক্টে গিয়ে কারো কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, এনিয়ে তিনবার এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একই ভাবে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরও তারা এলাকাবাসীকে ডাকেন না।
এবিষয়ে এলাকার কারো কাছে কোন সহযোগিতাও চায়না। পুলিশের তৎপরতা দেখে এলাকার লোকজন বুজতে পারেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কিছু একটা হয়েছে। ঘটনাটি রহস্যজনক বলে এলাকাবাসীর ধারনা।