সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রাতে লাকসাম পৌরসভার নশরতপুর এলাকার বাইপাস মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর ও ১৮ আগস্ট রাতে বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালানো হয়। এসব ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৯০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। পরে লাকসাম থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

মামলার বাদী মনির আহমেদ  জানান, যখন হামলা হয় তখন মন্ত্রী এলাকায় ছিলেন না। তাই তার বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– এলজিআরডি মন্ত্রীর শ্যালক ও লাকসাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, বিপুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম, কান্দিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, তাজুলের উন্নয়ন সমন্বয়কারী কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আজকরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের শাহীন ও কাওছার আহমেদ।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম পর য় ন মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনার বিচার ও সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন রাবিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তুহিন হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এবং সারাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা বিধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।

আরো পড়ুন:

অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ

চটের বিছানা নিয়ে বাগবিতণ্ডা, যুবককে হত্যা

বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব বলেন, “সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এ রকম নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা সর্বশেষ কবে হয়েছে আমার মনে পড়ে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই, আপনার কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা আমরা শুনতে চাই। আপনি এ সংবাদকর্মীদের অভিভাবক, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা আপনার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি, এমনকি একটি ফেসবুক পোস্টও না। এভাবে একদম প্রকাশ্যে ও নৃশংসভাবে একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার পরো আপনার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আজ এখানে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমরা যারা সাংবাদিক আছি, আমাদের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি, তাই আমাদের নিরাপত্তা এখন সময়ের দাবি।”

বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিন বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা সবাই দেখেছি। জুলাই-পরবর্তী সময়েও যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”

তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে দাঁড়ানোর কথা নয়। এখন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কথা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার কথা। কিন্তু আজ দাঁড়িয়েছি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে। সাংবাদিকদের অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকরা যেমন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কলম দিয়ে লিখতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে সেই কলমকে অস্ত্রে পরিণত করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক করছি—এ ধরনের সাহস যেন আর কেউ না দেখাতে পারে, তার জন্য আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ বিচার চাই।”

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, “আপনারা গদিতে বসেছেন শুধু এসির হাওয়া খাওয়ার জন্য নয়। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা এ গদিতে বসেছেন। যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন। আপনাদের বাইরে বাংলাদেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন, যারা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।

রাবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসানের সঞ্চালনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ